আলুর দর বাড়ছেই। গত এক মাসে রাজধানীর বাজারে সবজিজাতীয় খাদ্য পণ্যটির দাম বেড়েছে কেজিতে ১০ টাকার মতো। খুচরা ব্যবসায়ীদের দাবি, হিমাগার গেইটে আলুর দর বেড়েছে। এর প্রভাব পড়েছে খুচরা বাজারে। হিমাগার মালিকরা বলছেন, মৌসুমের সময় অনেকেই কম দামে আলু কিনে হিমাগারে মজুদ করেছেন। এখন হিমাগার গেইটে যে দরে বিক্রি হচ্ছে তা বেশিই বলা চলে।
মাস খানেক আগে ঢাকার খুচরা বাজারে আলুর কেজি বিক্রি হয় ৫০ টাকার আশপাশের দরে। গতকাল রাজধানীর কারওয়ান বাজার, মহাখালী কাঁচা বাজার ও মালিবাগে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, খুচরায় প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৫৮ থেকে ৬০ টাকা দরে। তবে এলাকাভিত্তিক ছোট বাজার ও মহল্লায় কিনতে হচ্ছে ৬০ থেকে ৬৫ টাকায়।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, এবার মৌসুমে দর বেশি থাকায় অনেক কৃষক অপরিপক্ক আলু তুলে বিক্রি করেছেন। ফলে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী আলু উৎপাদন হয়নি। তাছাড়া উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ায় কৃষকও দর বাড়িয়েছেন।
সরকারি বিপণন সংস্থা ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য অনুযায়ী, আলুর দর রাজধানীর বাজারে গত এক মাসে প্রায় ১২ ও এক বছরে ৫৬ শতাংশ বেড়েছে। সংস্থাটির দৈনিক প্রতিবেদন বলছে, গত বছরের এ সময় খুচরা পর্যায়ে আলুর দাম ছিল প্রতি কেজি ৩৫ থেকে ৩৮ টাকা। সে হিসাবে, এক বছরে আলুর দাম প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে।
গত বছরের অক্টোবরে রেকর্ড গড়ে আলুর দর। তখন প্রতি কেজির দর উঠে ৭০ টাকা। যদিও এ দর বেশিদিন স্থায়ী হয়নি।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, এবার আলু উৎপাদন হয়েছে এক কোটি ৯ লাখ টনের বেশি। কিন্তু হিমাগার মালিকদের হিসাবে, উৎপাদন হয়েছে ৭০ থেকে ৭৫ লাখ টন। দেশে বছরে আলুর চাহিদা রয়েছে ৯০ লাখ টনের বেশি। ঘাটতি আছে ১০ থেকে ১৫ লাখ টনের মতো।
বাংলাদেশ কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু গণমাধ্যমকে বলেন, হিমাগারগুলোতে ২৪ লাখ টন আলু মজুদ আছে। শুধু খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করলে এ পরিমাণ আলু দিয়ে অনায়াসে চার-পাঁচ মাস চলে যাবে। কিন্তু হিমাগারে যেসব মজুদদার ব্যবসায়ী ও কৃষক আলু রেখেছেন তারা ধীর গতিতে আলু ছাড়লে দাম বাড়ার আশঙ্কা থেকে যাবে।
এফবিসিসিআইর সাবেক এই সিনিয়র সহসভাপতি বলেন, যারা ২৫ টাকা দরে আলু কিনে রেখেছেন তারা হিমাগার গেইটে ৩৫ টাকা দরে পাইকারি বিক্রি করলেও মুনাফা থাকবে। কিন্তু বর্তমানে হিমাগারে বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৪৫ থেকে ৪৯ টাকা দরে। এটা অনেক বেশি।