পরীমণির বাসায় দিনের পর দিন রাত্রিযাপন করা ও স্ত্রীর অবর্তমানে রাজারবাগের বাসায় নিয়ে ১৭ ঘণ্টা অবস্থানের প্রমাণ মিলেছে তদন্তে। সেই তদন্তের পরিপ্রেক্ষিতে চাকরি হারাচ্ছেন তৎকালীন ঢাকা মেট্রোপলিটন গুলশান গোয়েন্দা পুলিশের এডিসি ও বর্তমানে ঝিনাইদহ জেলার ইন-সার্ভিস ট্রেনিং সেন্টারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গোলাম সাকলায়েন।
গত ১৩ জুন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের শৃঙ্খলা-২ শাখার উপ-সচিব পারভীন জুঁই স্বাক্ষরিত স্মারকে বিভাগীয় মামলায় তাকে চাকরি থেকে ‘বাধ্যতামূলক অবসর প্রদান’ গুরুদণ্ড দেওয়ার বিষয়ে সরকারি কর্ম কমিশন সচিবালয়ের সচিবকে অনুরোধ করা হয়েছে।
তাতে বলা হয়েছে, ঢাকা মেট্রোপলিটন গোয়েন্দা গুলশান বিভাগের এডিসি থাকাকালে নায়িকা পরীমণির সঙ্গে পরিচয়, যোগাযোগ শুরু হয় গোলাম সাকলায়েনের। তিনি নায়িকা পরীমণির বাসায় নিয়মিত রাত্রিযাপন করতে শুরু করেন। পুলিশ অধিদপ্তরের এলআইসি শাখা থেকে দেওয়া ফোনের সিডিআর বিশ্লেষণ অনুযায়ী, ২০২১ সালের ৪ জুলাই থেকে ৪ আগস্ট পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে (দিনে ও রাতে) নায়িকা পরীমণির বাসায় অবস্থান করেছেন তৎকালীন ডিবির এই কর্মকর্তা।
ওই আদেশে বলা হয়, বিভিন্ন সময়ে (দিনে ও রাতে) নায়িকা পরীমণির বাসায় এডিসি গোলাম সাকলায়েন অবস্থান করেছেন বলে প্রমাণ পাওয়া যায় মোবাইলের ফরেনসিক রিপোর্ট দেখে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ২০২১ সালের ১৩ জুন বোট ক্লাবের ঘটনার পর পরীমণিকে ধর্ষণচেষ্টা ও শারীরিক নির্যাতন করা হয়েছে বলে অভিযোগ আনলে মামলা হয়। মামলার পরদিনই আসামি হিসেবে ক্লাব নেতা ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদকে রাজধানীর উত্তরার একটি বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
মামলা তদন্তের অংশ হিসেবে পরীমণিকে গোয়েন্দা কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করা হয়। তখনই ডিবির গুলশান বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) গোলাম সাকলায়েন শিথিলের সঙ্গে পরিচয় হয় পরীমণির। এরপর দুজনের মধ্যে শুরু হয় যোগাযোগ। নিয়মিত পরীমণির বাসায় যাতায়াত শুরু করেন গোলাম সাকলায়েন। মাঝে-মধ্যেই গাড়ি নিয়ে বের হতেন দু’জনে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রের তথ্যানুযায়ী, সবশেষ পরীমণি ডিবির কর্মকর্তা গোলাম সাকলায়েনের রাজারবাগের মধুমতি ভবনের বাসায় গিয়ে প্রায় ১৭ ঘণ্টা অবস্থান করেন। ২০২১ সালের ৪ আগস্ট রাতে গ্রেপ্তারের পর পরীমণি অকপটে স্বীকার করেন সবকিছু।