সেমিফাইনালের আশা ভালোভাবে বাঁচিয়ে রাখতে আজকের ম্যাচে জিততেই হতো অস্ট্রেলিয়াকে। কিন্তু ভারতের বিপক্ষে জিততে পারলো না অসিরা। ২০৬ রানের লক্ষ্য তাড়ায় ৭ উইকেটে ১৮১ রানে থেমে গেছে অস্ট্রেলিয়া। এতে ২৪ রানের জয়ে তৃতীয় দল হিসেবে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেছে ভারত। এই হারে আসর থেকে বাদ পড়ার শঙ্কায় পড়ে গেছে অসিরা।
আজ ভোর সাড়ে ৬টার ম্যাচে (বাংলাদেশ সময়) যদি বাংলাদেশের বিপক্ষে আফগানিস্তান জিতে যায়, তাহলে নিশ্চিতভাবে প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে চলে যাবে আফগানরা। বাদ পড়বে অস্ট্রেলিয়া।
অপরদিকে আশায় বুক বাধতে পারে বাংলাদেশও। কারণ, কাগজে কলমে এখানো নাজমুল হোসেন শান্তর দলের সেমির স্বপ্ন বেঁচে আছে। আগামীকালের ম্যাচে যদি আফগানদের বড় ব্যবধানে হারাতে বাংলাদেশ, তাহলে তাদেরও সেমিতে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আর যদি কোনো রকমে আফগানদের হারায় শান্তর দল, তাহলে অস্ট্রেলিয়া চলে যাবে সেমিতে। বাদ পড়বে বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান।
ভারতের দেওয়া ২০৬ রানের লক্ষ্য তাড়ায় দুর্দান্ত শুরু করেছিল অস্ট্রেলিয়া। ডেভিড ওয়ার্নারের উইকেট দ্রুত হারালেও অধিনায়ক মিচেল মার্শ ও ট্রাভিডে হেডের ব্যাটে ঘুরে দাঁড়ায় অসিরা। ৪৮ বলে ৮১ রানের দুর্দান্ত জুটি করেন তারা।
২৮ বলে ৩৭ রান করে মার্শ আউট হয়ে গেলে জুটি ভাঙে। এরপর ১২ বলে ২০ রান করে ফেরত যান গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। ১৪তম ওভারে ম্যাক্সওয়েল আউট হওয়ার সময় অস্ট্রেলিয়ার বোর্ডে ১৩.১ ওভারে ১২৮ রান। তখনও ম্যাচে ছিল অসিরা। কিন্তু পরের ওভারে মার্কাস স্টয়নিজের উইকেট হারালে ম্যাচ থেকে সরে যায় তারা।
একা আর লড়াই চালিয়ে যেতে পারেননি হেড। ১৭তম ওভারে জাসপ্রিত বুমরাহর বল আকাশে ভাসিয়ে রোহিত শর্মার হাতে ক্যাচ হন তিনি। এতেই মোটামুটি ভারতীয়দের জয়ের উচ্ছ্বাস শুরু হয়। হেডের ৪৩ বলে ৭৬ রানের (৯ বাউন্ডারি ৪ ছক্কায়) দুর্দান্ত ইনিংস বিফলে যায়। শেষ দিকে টিম ডেভিড (১১ বলে ১৫) আর প্যাট কামিন্সের অপরাজিত ৭ বলে ১১ রানে ৭ উইকেটে ১৮১ রানে থামে অস্ট্রেলিয়া।
এর আগে সেন্ট লুসিয়ার গ্রস আইলেটে ড্যারেন স্যামি স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই বিরাট কোহলির উইকেট হারিয়ে বসে ভারত। দলীয় ৬ রানের মাথায় কোনো রান না করেই বিদায় নেন কোহলি। ৫ বল খেলার পর হ্যাজলউডের বলে টিম ডেভিডের হাতে ক্যাচ দেন তিনি।
এরপরই জুটি বাঁধেন রোহিত এবং রিশাভ পান্ত। বলা ভালো, রিশাভ পান্ত একপ্রান্তে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে রোহিতের ব্যাটিংই উপভোগ করছেন শুধু। মিচেল স্টার্ককে রোহিত এক ওভারে পিটিয়ে ২৯ রান নেন রোহিত শর্মা।
মাঝে বৃষ্টি এসে রোহিত ঝড় থামানোর চেষ্টা করে; কিন্তু কিছুক্ষণ পরই আবার খেলা শুরু হয় এবং রোহিত ঝড় অব্যাহত থাকে। অবশেষে ৮ ছক্কার সঙ্গে ৭টি বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ৯২ রানে (৪১ বলে) থামেন রোহিত। ১২তম ওভারের দ্বিতীয় বলে তাকে বোল্ড করেন মিচেল স্টার্ক।
রোহিতের ফেরার পর ঝড় তোলার চেষ্টা করেন সূর্যকুমার। তবে বেশিদূর এগোতে পারেননি। স্টার্কের দ্বিতীয় শিকার হওয়ার আগে ১৬ বলে ৩১ রান করেন তিনি।
শিবম দুবে করেন ২২ বলে ২৮ রান। মার্কাস স্টয়নিজের বলে ডেভিড ওয়ার্নারের হাতে ক্যাচ হন এই বাঁহাতি ব্যাটার। শেষদিকে ১৭ বলে ২৭ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন হার্দিক পান্ডিয়া। তার সঙ্গে ৫ বলে ৯ রানে অপরাজিত ছিলেন রবীন্দ্র জাদেজা।
অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ২টি করে উইকেট শিকার করেন মিচেল স্টার্ক ও মার্কাস স্টয়নিজ। একটি উইকেট নেন জস হ্যাজলউড। ভারতের হয়ে ৩টি উইকেট শিকার করেন অশ্বদীপ সিং। ২টি উইকেট নেন কুলদীপ যাদব।