সৌদি আরবে পবিত্র হজ পালন করতে গিয়ে এবার ৪০ জন পুরুষ এবং ১৩ জন নারীসহ মোট ৫৩ বাংলাদেশির মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। সৌদি আরবের আইন অনুযায়ী সেখানেই দাফন করার প্রক্রিয়া চলছে। এদিকে হজ পালন শেষে এখন পর্যন্ত প্রায় ২৭ হাজার হাজি দেশে ফিরেছেন।
বৃহস্পতিবার রাতে হজ পোর্টালের সর্বশেষ বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়। বুলটিন তথ্যে বলা হয়— মৃত হাজিদের ৪২ জন মক্কায়, ৪ জন মদিনায়, ৬ জন মিনায় ও একজন জেদ্দায় মারা গেছেন।
বুলেটিন তথ্য অনুযায়ী—হজ পালন শেষে এখন পর্যন্ত ৬১টি ফ্লাইটে ২৬ হাজার ৯০৯ জন হাজি দেশে ফিরেছেন। এর মধ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস ১৭টি, সৌদি এয়ারলাইনস ২৪টি এবং ফ্লাইনাস এয়ারলাইনস ২০টি ফ্লাইট পরিচালনা করেছে।
হজ শেষে গত ২০ জুন থেকে হাজিদের দেশে ফেরাতে ফ্লাইট পরিচালনা শুরু হয়। ওইদিন ৪১৭ হাজি নিয়ে বাংলাদেশ বিমানের প্রথম ফিরতি ফ্লাইট ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছায়। হাজিদের ফিরতি ফ্লাইট চলবে আগামী ২২ জুলাই পর্যন্ত।
বাংলাদেশ থেকে এ বছর হজ করতে সৌদি আরবে গেছেন মোট ৮৫ হাজার ২২৫ জন (ব্যবস্থাপনা সদস্যসহ)। সৌদি সরকারের হজ কোটা অনুযায়ী আগামী বছর বাংলাদেশ থেকে এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজে যেতে পারবেন।
চলতি বছর তীব্র তাপপ্রবাহ ও অসহনীয় গরমের কারণে হজ করতে গিয়ে সৌদি আরবে রেকর্ডসংখ্যক হাজির মৃত্যু হয়। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের এক হাজার ৩০০ জনেরও বেশি হাজি মারা গেছেন বলে জানিয়েছে সৌদ কর্তৃপক্ষ। তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে এসব হজযাত্রীদের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে হজ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ।
বাংলাদেশের ধর্ম মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মারা যাওয়া ৫৩ হাজির ১৭ জন মারা যান হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরুর আগে। অন্যদিকে হজের আনুষ্ঠানিকতার শুরুর পর মারা গেছেন ৩৬ জন। মৃত হাজিদের মক্কা, মদিনা ও জেদ্দায় দাফনের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
সৌদি আরবের আইন অনুযায়ী কোনো হজ যাত্রী দেশটিতে যাওয়ার পর সৌদি আরবের আকাশসীমা কিংবা ভূমিতে মৃত্যুবরণ করলে তার দাফন সেখানেই করা হয়। এক্ষেতে হজের আবেদন পূরণ করার সময় প্রত্যেক হাজির অঙ্গীকারনামা বা সম্মতি আদায় করা হয়। কোনো হাজির সেখানে গিয়ে মারা গেলে সাধারণত মৃতের পরিবারও কখনো লাশ ফিরিয়ে আনার আবেদন করে না। কারণ, পবিত্র ভূমিতে পবিত্র হজ পালনে গিয়ে মৃত্যুবরণ এবং সেখানে শায়িত হতে পারাকে মুসলিম মাত্রই সৌভাগ্যের মনে করে থাকে।
হজে গিয়ে যারা মক্কায়, মিনা বা মুজাদালিফায় মারা যান তাদেরকে আগে পবিত্র কাবা ঘরের জান্নাতুল মোয়াল্লায় দাফন করা হতো। বর্তমানে মক্কার শারায়া কবরস্থানে দাফন করা হয়।
এছাড়া মদিনায় মারা যান তাদেরকে মসজিদে নববী সংলগ্ন বাকিউল গারকাদে বা জান্নাতুল বাকিতে দাফন করা হয়। অন্যদিকে যারা জেদ্দা বা অন্য কোনো শহরে মারা যান দাফন হয় জেদ্দার স্থানীয় কবরস্থানে। তবে পরিবার যদি চান তাহলে তাদের মক্কা বা মদিনার কবরস্থানে দাফন করা হয়ে থাকে। সেক্ষেত্রে সৌদি কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্ট দেশের মিশনের মাধ্যমে মৃতের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে।