রপ্তানি আয়ের তথ্যের গরমিল দূর করতে চালু হচ্ছে স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) বা আদর্শ পরিচালনা পদ্ধতি নির্ধারণ। এ বিষয়ে নীতিগতভাবে একমত সংশ্লিষ্টরা। তবে বিষয়টি এখনো চূড়ান্ত হয়নি।
৮ জুলাই (সোমবার) এক সভায় বাংলাদেশ ব্যাংক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর প্রতিনিধিরা এ বিষয়ে প্রাথমিকভাবে একমত হয়েছেন।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) ভাইস-চেয়ারম্যান মো. আনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংক, পরিসংখ্যান ব্যুরো ও প্রতিযোগিতা কমিশনের প্রতিনিধি। প্রত্যেক প্রতিনিধি নিজ প্রতিষ্ঠানের সুপারিশ তুলে ধরেন। সভায় আলোচিত বিষয়গুলো বিশ্লেষণ করে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করা হবে বলে জানান একজন অংশগ্রহণকারী।
ইপিবির পরিচালক (নীতি) আবু মোখলেছ আলমগীর হোসেন বলেন, সভায় আমরা বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। তথ্য প্রক্রিয়া আধুনিকীকরণ করার বিষয়ে আলোচনা করেছি যাতে বাংলাদেশ ব্যাংক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, পরিসংখ্যান ব্যুরো ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর তথ্যে যে ফারাক আছে তা যেন সমন্বয় করা যায়। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।
সভায় আলোচিত বিষয়গুলো পরবর্তীসময়ে বিশ্লেষণ করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
নাম না প্রকাশ করার শর্তে সভায় উপস্থিত একজন প্রতিনিধি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘সম্প্রতি রপ্তানি আয়ের তথ্যে গরমিল ধরা পড়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুসন্ধানে। বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন সংস্থার সমন্বয়ে কাজ করার সিদ্ধান্ত হয়। এরই ধারাবাহিকতায় আজকের সভা। তথ্যের গরমিল দূর করা এবং নির্ভুল তথ্য নিশ্চিত করার জন্য স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) বা আদর্শ পরিচালনা পদ্ধতি নির্ধারণ করার বিষয়ে নীতিগতভাবে একমত হয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।’
তিনি বলেন, ‘আগামী তিন মাসের মধ্যে এ পদ্ধতিতে রপ্তানি আয়ের তথ্য প্রকাশের বিষয়ে কথা হয়েছে। ডলারের বিপরীতে টাকার মূল্যমান (বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব) ধরে রপ্তানি আয় হিসাব করা হবে। এক্ষেত্রে সব প্রতিষ্ঠানের ডলার কনভারশন রেট একই হবে।’
স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর চালু করার জন্য নতুন করে সফটওয়্যার ডেভেলপ করা হবে এবং তার মাধ্যমে ডাটা বিশ্লেষণ করে রপ্তানি তথ্য প্রকাশ করা হবে বলেও তিনি জানান।
সভায় অংশ নেওয়া আরেকজন প্রতিনিধি বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের দেওয়া পদ্ধতি অনুযায়ী জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো তথ্য প্রক্রিয়া করবে। বাংলাদেশ ব্যাংক এক্ষেত্রে সব ধরনের সহযোগিতা করার বিষয়ে আশ্বস্ত করেছে।’
২০২৩-২৪ অর্থবছরে রপ্তানির আয়ের তথ্যে ১০ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি গরমিল ধরা পড়ে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) দেওয়া তথ্য প্রক্রিয়াজাত করে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) রপ্তানি আয়ের তথ্য দেয়। একই রপ্তানি চালানের তথ্য এনবিআরের কাস্টমস বিভাগ একাধিকবার ‘এন্ট্রি’ করার কারণেই তথ্যের এ অসঙ্গতি তৈরি হয়েছে বলে জানানো হয় বিভিন্ন সংগঠন থেকে।