সরকারি চাকরির নিয়োগে কোটাবিরোধী আন্দোলনে ঘোষিত এক দফা কর্মসূচি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বুধবার (১০ জুলাই) সারাদেশে সকাল-সন্ধ্যা সর্বাত্মক ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি পালন করবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
অন্যদিকে, রাজধানীর শাহবাগে ‘বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কটূক্তির প্রতিবাদে’ বিক্ষোভ সমাবেশ করবে বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, প্রজন্ম ও মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তির সব সংগঠন।
এর ফলে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বড় শহরগুলো তীব্র যানজটের কবলে পড়তে পারে।
যানজটের ফলে অফিস-আদালত ও কর্মস্থলগামী মানুষ, শিক্ষার্থীসহ সড়ক ব্যবহারকারী সবাইকে দুর্ভোগে পড়তে হতে পারে। বিশেষত বিমানবন্দরে যারা যাবেন তাদের বাড়তি সময় নিয়ে বের হতে হবে। অন্যথায় ফ্লাইট মিস হওয়ার আশঙ্কা থাকতে পারে।
এর আগে গতকাল মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করে বলেন, সর্বাত্মক ‘বাংলা ব্লকেড’ অনুযায়ী বুধবার সারাদিন দেশের সব গুরুত্বপূর্ণ স্থান অবরোধ করা হবে। পাশাপাশি হাইওয়ে এবং রেলপথও এ ব্লকেডের আওতায় থাকবে।
তিনি বলেন, আমরা নিয়মতান্ত্রিকভাবে আমাদের কর্মসূচি পালন করছি। এ আন্দোলনের ফলে জনসাধারণের ভোগান্তি হচ্ছে, তার প্রতি আমরা সংবেদনশীল। কিন্তু এর দায়ভার সরকারকে বহন করতে হবে। কারণ, এতদিন আন্দোলনের পরও তারা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি এবং বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করেনি।
নাহিদ ইসলাম বলেন, আমরা চূড়ান্ত সমাধান চাই। আমরা চাই, অনগ্রসর গোষ্ঠীর জন্য কোটাকে ন্যূনতম ৫ শতাংশে এনে সংসদে আইন পাস করে কোটা পদ্ধতিকে সংশোধন করা হোক। যেন পরবর্তীসময়ে এটি আবার সমস্যা হিসেবে সামনে না আসে।
সরকারি চাকরির নিয়োগে কোটা পদ্ধতি বাতিল এবং ২০১৮ সালের পরিপত্র পুনর্বহালসহ চার দফা দাবিতে শিক্ষার্থীরা গত শনিবার (৬ জুলাই) শাহবাগে অবস্থান কর্মসূচি শেষে সারাদেশে সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ স্থান, মহাসড়ক অবরোধ করার ঘোষণা দেন। এ কর্মসূচিকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ‘বাংলা ব্লকেড’ হিসেবে ঘোষণা করেন। পরে সেই আন্দোলন এক দফায় রূপ নেয়।
এরই ধারাবাহিকতায় রোববার বিকেল ৪টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে টানা চার ঘণ্টা ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে প্রথম দিনের ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি পালন করেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। ওইদিন রাতেই নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করে পরদিন সোমবারও বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে ঢাকাসহ সারাদেশে একই কর্মসূচি পালন করেন তারা।
দ্বিতীয় দিনের অবরোধ প্রত্যাহারের আগে মঙ্গলবার গণসংযোগ কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেন আন্দোলনকারীরা। সেই কর্মসূচি শেষে আবারও আসে ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচির ডাক।
আজ রাজধানী ঢাকার যেসব এলাকায় ব্লকেড হতে পারে- শাহবাগ, কারওয়ান বাজার, ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড়, ফার্মগেট, চানখারপুল মোড়, চানখারপুল ফ্লাইওভারে উঠার মোড়, বঙ্গবাজার, শিক্ষা চত্বর, মৎস্য ভবন, জিপিও, গুলিস্তান, সায়েন্সল্যাব, নীলক্ষেত, রামপুরা ব্রিজ, ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক, মহাখালী, বাংলামোটর এবং আগারগাঁও।