শেষ মুহূর্তের গোলে নেদারল্যান্ডসকে কাঁদিয়ে ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে উঠেছে ইংল্যান্ড। জমজমাট সেমিফাইনালে নেদারল্যান্ডসকে ২-১ গোলে হারিয়েছে বেলিংহাম-হ্যারি কেইনরা।
বুধবার ডর্টমুন্ডে বাংলাদেশ সময় রাত একটায় শুরু হয় ম্যাচটি। ম্যাচের অতিরিক্ত সময়ের গোলে শেষ হাসি হাসে ইংলিশরা।
ফাইনালে হ্যারি কেইনদের প্রতিপক্ষ লামিয়েন ইয়ামালের স্পেন। ইতোমধ্যে প্রথম সেমিফাইনালে ফ্রান্সকে হারিয়ে ফাইনালের মঞ্চে পৌঁছে গেছে আসর জুড়ে দুর্দান্ত ছন্দে থাকা স্পেন।
এদিন ম্যাচের শুরুতে জাভি সিমন্স নেদারল্যান্ডসকে এগিয়ে দিলেও হ্যারি কেন ও অলি ওয়াটকিন্সের গোলে ম্যাচ জিতে নেয় ইংল্যান্ড।
উত্তেজনায়পূর্ণ ম্যাচে ১-১ সমতা নিয়ে বিরতিতে যায় দুদল। জাভি সিমন্স নেদারল্যান্ডসকে প্রথম সফলতা এনে দেন। এরপরই পেনাল্টিতে ভাগ্য ফেরে ইংলিশদের। হ্যারি কেনের পায়ে ভর করে সমতায় ফেরে ইংল্যান্ড।
দ্বিতীয়ার্ধে যখন গোলের দেখা পাচ্ছিল না কেউ, তখনই চাল দেন গ্যারেথ সাউথগেট। হ্যারি কেনকে তুলে নিয়ে নামান অলি ওয়াটকিন্সকে। এছাড়া কোল পামার নামেন ফিল ফোডেনের জায়গায়। নির্ধারিত ৯০ মিনিট শেষে ম্যাচের সংযুক্তি সময়ে সেই ওয়াটকিন্সের গোলেই নেদারল্যান্ডসকে হারিয়ে দেয় ইংল্যান্ড। ফলে যায় সাউথগেটের চাল।
এদিন ম্যাচের শুরু থেকে বল নিজেদের দখলে রেখেছিল ইংল্যান্ড। কিন্তু নেদারল্যান্ডসের পরিকল্পনা ছিল ভিন্ন। শুরুতেই আক্রমণে যায় তারা। এতে চার মিনিটেই প্রথম আক্রমণ করে তবে গোলকিপার জর্ডান পিকফোর্ডের সৌজন্যে সে যাত্রায় বেঁচে যায় ইংল্যান্ড। কিন্তু বেশি ক্ষণ ডাচদের ঠেকাতে পারেনি তারা। সাত মিনিটেই এগিয়ে যায় নেদারল্যান্ডস।
মাঝমাঠে ডেক্লান রাইসের থেকে বল কেড়ে নিয়েছিলেন সিমন্স। একাই এগিয়ে যান সামনের দিকে। বক্সের ভেতরে ঢুকে পড়ে শট নেন। সেই শটের জোর যা ছিল তা আটকাতে পারেননি পিকফোর্ড। গোল খাওয়ার পরে কিছু ক্ষণের জন্য বেসামাল হয়ে পড়ে ইংল্যান্ডের রক্ষণ। নেদারল্যান্ডসকে অনেকটা জায়গা দিয়ে দিচ্ছিল তারা। ডাচরা অবশ্য সেই সুযোগ কাজে লাগাতে পারেনি।
তবে ১২ মিনিটেক মাথায় ফোডেনের ফ্রিকিক থেকে ইংল্যান্ডের প্রয়াস প্রতিহত হয়। ১৪ মিনিটে পেনাল্টি পায় ইংল্যান্ড। বুকায়ো সাকার শট আটকে দিয়েছিল নেদারল্যান্ডস রক্ষণ। ফিরতি বল হ্যারি কেনের সামনে এসে পড়ে। চলতি বলে হ্যারি শট নেওয়ার পর পা তুলে তাকে আটকাতে গিয়েছিলেন ডেঞ্জিল ডামফ্রিস। হ্যারি শট মারার পর তার পা বিপক্ষ অধিনায়ককে আঘাত করে। ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারির (ভার) সাহায্য নিয়ে মাঠের রেফারি পেনাল্টির সিদ্ধান্ত নেন। হ্যারির শট আটকাতে পারেননি নেদারল্যান্ডস গোলকিপার ভারব্রুগেন। এতটাই নিখুঁত ছিল সেই শট।
গোল পাওয়ায় ইংল্যান্ডের আক্রমণে ঝাঁজ বাড়ে। আরও বেশি আক্রমণ করতে শুরু করে তারা। আগের ম্যাচগুলোতে তারা একটু রক্ষণাত্মক খেললেও এ দিন বেশ আগ্রাসী লেগেছে গ্যারেথ সাউথগেটের ছেলেদের।
দ্বিতীয়ার্ধে দুই দলই নেমেছিল গোল করার লক্ষ্যে। ফলে দলেও পরিবর্তন হয়। নেদারল্যান্ডস ডনিয়েল মালেনকে তুলে নামায় উওট উইঘর্স্টকে। ইংল্যান্ড কিয়েরান ট্রিপিয়ারের জায়গায় নামিয়ে দেয় লুক শ-কে। তবু খেলা ভালো হচ্ছিল না। দুদলই বল ধরে রাখার খেলায় নেমেছিল। কিন্তু কেউই ফিনিশ করতে পারছিল না। যে কারণে একটা সময়ের পর খেলা উত্তেজনাহীন হয়ে পড়ে।
সেই সময়েই দুটি পরিবর্তন করেন সাউথগেট। অনেকেই বলছিলেন ইংল্যান্ড কোচ বড্ড বেশি সাহসী সিদ্ধান্ত নেন। কেউ কেউ সমালোচনাও শুরু করে দিয়েছিলেন। কিন্তু সাউথগেট প্রমাণ করলেন, কৌশলে তিনি সেরাদের সেরা। ২-১ গোলে ম্যাচ জিতে নেয় ইংল্যান্ড।