মিয়ানমারের রাখাইনে চলমান সংঘাতের জেরে জীবন বাঁচাতে ফের বাংলাদেশে পালিয়ে এলেন দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিজিপি) ও সেনাবাহিনীর শতাধিক সদস্য।
শুক্রবার (১২ জুলাই) তাদের নিরস্ত্রীকরণ করে সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
বুধ ও বৃহস্পতিবার দুইদিনে কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে তারা বাংলাদেশে ঢোকেন।
এর মধ্যে গত বুধবার সকালে ২০ জন এবং বৃহস্পতিবার ১১৯ জন মিয়ানমার সেনা ও বর্ডার গার্ড পুলিশ বিজিপি সদস্য আশ্রয় নিয়েছেন।
বিগত বেশ কিছু দিন ধরে মিয়ানমারের রাখাইনের সীমান্ত শহর মংডু টাউনশিপ দখলে নিতে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরকান আর্মি সঙ্গে মিয়ানমারের সামরিক জান্তার মধ্যে তীব্র লড়াই চলছে। মংডু জেলার অধিকাংশ এলাকা ইতোমধ্যেই আরাকান আর্মির দখলে চলে এসেছে। এখন শুধু মংডু টাউনশিপ দখলের লড়াই চলছে।
সীমান্তের একাধিক সূত্র মতে আরাকান আর্মি মংডু টাউনশিপ ঘিরে ফেলেছে। সীমান্তের ওপারে গোলাগুলি ও বিস্ফোরণের বিকট শব্দে টেকনাফের সীমান্ত এলাকা প্রকম্পিত হচ্ছে। যুদ্ধে কুলিয়ে উঠতে না পেরে মিয়ানমারের সেনা ও বিজিপি সদস্যরা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে বলে জানা গেছে।
স্থানীয় একাধিক সূত্র মতে জানা যায়, বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত তিন ধাপে টেকনাফ উপজেলার সাবরাং, শাহপরীর দ্বীপ ও নাজিরপাড়া সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে মিয়ানমার সেনা ও বিজিপি সদস্যরা নাফ নদী পার হয়ে অনুপ্রবেশ করেন। পরে তাদেরকে নিরস্ত্র করে বিজিবি ও কোস্টগার্ড সদস্যরা হেফাজতে নেন। কিন্তু এ বিষয়ে বিজিবি ও কোস্টগার্ডের পক্ষ থেকে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী জানান, নতুন করে মিয়ানমারের সেনা ও সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর সদস্য এপারে আশ্রয় নিয়েছেন বলে শুনেছি। তারা বিজিবি ও কোস্ট গার্ডের হেফাজতে রয়েছে। পাশাপাশি সীমান্তে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সতর্ক অবস্থানে আছে।
টেকনাফ ব্যাটালিয়ন (২ বিজিবির) অধিনায়ক লে. কর্নেল মহিউদ্দিন আহমেদ জানান, সীমান্তের স্থল ও জলসীমায় সার্বক্ষণিক বিজিবির সদস্যরা টহল দিয়ে যাচ্ছে। মিয়ানমারের এমন পরিস্থিতিতে সীমান্তের যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিজিবির সদস্যরা প্রস্তুত রয়েছে।