চলতি বছর একাদশ শ্রেণিতে ভর্তিতে তিন ধাপে আবেদন শেষেও কোনো কলেজে ভর্তির সুযোগ পাননি ১২ হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হওয়া শিক্ষার্থী প্রায় ৭০০ জন।
শুক্রবার (১২ জুলাই) রাত ৮টায় একাদশে ভর্তির কেন্দ্রীয় ওয়েবসাইটে তৃতীয় বা শেষ ধাপের ফল প্রকাশ করা হয়। এ ফলাফল বিশ্লেষণ করে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি এবং ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার শুক্রবার রাতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘ভর্তি নীতিমালা অনুযায়ী—তিন ধাপে আবেদন নেওয়ার কথা ছিল। সেই তিন ধাপ শেষেও আমাদের ১২ হাজারের কিছু বেশি শিক্ষার্থী কলেজ বরাদ্দ পাননি। তার মধ্যে এসএসসিতে জিপিএ-৫ শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৭০০ জনের মতো।’
কলেজবঞ্চিতদের জন্য আবেদনের সময় বাড়ানো হবে কি না- জানতে চাইলে অধ্যাপক তপন কুমার সরকার বলেন, ‘এটা তো একক সিদ্ধান্তে বলা সম্ভব নয়। আলোচনা করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আমরা চাই না কোনো শিক্ষার্থী ভর্তিবঞ্চিত থাকুক। অনেক আসন এখনো ফাঁকা পড়ে আছে। হয়তো শিক্ষার্থীর পছন্দক্রম না মেলায় তারা কলেজে ভর্তির সুযোগ পায়নি।’
এদিকে, চলতি বছর এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় ১১টি শিক্ষা বোর্ডে পাস করেন ১৬ লাখ ৭২ হাজার ১৫৩ জন। ফল পুনঃনিরীক্ষণে আরও প্রায় এক হাজার শিক্ষার্থী ফেল থেকে পাস করেন। তবে সারাদেশে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তিযোগ্য আসন রয়েছে ২৫ লাখের মতো। সব শিক্ষার্থী ভর্তি হলেও একাদশ শ্রেণিতে ৮ লাখের বেশি আসন ফাঁকা থাকার কথা।
ভর্তি নীতিমালা অনুযায়ী—গত ২৬ মে সকাল ১০টায় একাদশে শ্রেণিতে ভর্তিতে অনলাইনে আবেদন শুরুর কথা ছিল। তবে সার্ভারে ত্রুটির কারণে একদিন পর আবেদন প্রক্রিয়া শুরু হয়। প্রথম ধাপে ১৩ জুন পর্যন্ত আবেদন করার সুযোগ পান শিক্ষার্থীরা। ২৩ জুন রাতে প্রথম ধাপের ফল প্রকাশ করা হয়। এরপর ৩০ জুন থেকে ২ জুলাই পর্যন্ত দ্বিতীয় ধাপে এবং ৯-১০ জুলাই তৃতীয় ধাপে আবেদন নেওয়া হয়।
তিন ধাপে নির্বাচিত এবং সফলভাবে নিশ্চায়ন করা শিক্ষার্থীদের আগামী ১৫ থেকে ২৫ জুলাইয়ের মধ্যে ভর্তি হতে হবে। এরপর ৩০ জুলাই অনুষ্ঠানিকভাবে সারাদেশে একযোগে একাদশ শ্রেণিতে ক্লাস শুরু হবে।
তৃতীয় ধাপে নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের করণীয়
তৃতীয় ধাপে নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের একাদশে ভর্তির কেন্দ্রীয় ওয়েবসাইট থেকে নিজ পোর্টালে লগইন করে পেমেন্ট গেটওয়ের মাধ্যমে নিশ্চায়ন ফি পরিশোধ করতে হবে। যাদের নিশ্চায়ন এরই মধ্যে সম্পন্ন হয়েছে, তারা তাদের চূড়ান্ত নির্বাচনের পিডিএফ ডাউনলোড করতে পারবেন। সশরীরে কলেজে ভর্তির সময় এ পিডিএফের প্রয়োজন পড়বে।
ভর্তি ফি ও সেশন চার্জ
নীতিমালা অনুযায়ী—এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানে ভর্তির ক্ষেত্রে ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় বাংলা ও ইংরেজি ভার্সনে ৫ হাজার টাকা, মেট্রোপলিটন (ঢাকা ছাড়া) বাংলা ও ইংরেজি ভার্সনে ৩ হাজার টাকা, জেলায় ২ হাজার টাকা এবং উপজেলা ও মফস্বলে দেড় হাজার টাকা।
নন-এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় বাংলা ভার্সনে সাড়ে ৭ হাজার টাকা, ইংরেজি ভার্সনে সাড়ে ৮ হাজার টাকা, মেট্রোপলিটন (ঢাকা ছাড়া) বাংলা ভার্সনে ৫ হাজার টাকা ও ইংরেজি ভার্সনে ৬ হাজার টাকা, জেলায় বাংলা ভার্সনে ৩ হাজার টাকা ও ইংরেজি ভার্সনে আড়াই হাজার টাকা এবং উপজেলা ও মফস্বলে বাংলা ভার্সনে আড়াই হাজার টাকা ও ইংরেজি ভার্সনে ৩ হাজার টাকা।
ভর্তির পর কলেজ পরিবর্তনের নিয়ম
সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বোর্ডের পূর্বানুমতি ছাড়া একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির পর কোনো শিক্ষার্থীর ছাড়পত্র (টিসি) ইস্যু করা যাবে না। কিংবা বোর্ডের পূর্বানুমতি ছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কর্তৃক ইস্যুকৃত ছাড়পত্রের বরাতে ভর্তি করা যাবে না।
ছাড়পত্রের (টিসি) মাধ্যমে ভর্তির ক্ষেত্রে কলেজ বা সমমানের প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষকে এ ধরনের ভর্তিকৃত ছাত্রছাত্রী ভর্তির ১৫ দিনের মধ্যে রেজিস্ট্রেশন ফিসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বোর্ডে জমা দিতে হবে।