কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি ভর করেছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীরা কার বিপক্ষে আন্দোলন করবে? সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের আদেশ তো তাদের পক্ষেই আছে। এরপরে আন্দোলন চলমান থাকা প্রমাণ করে, রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য কোনো গোষ্ঠী বা মহল এখন এই আন্দোলনে উসকানি দিচ্ছে।
শুক্রবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ কথাগুলো বলেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, সরকারি চাকরিতে কোটা সংরক্ষণ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের রায়ের ওপর চার সপ্তাহের স্থিতাদেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ। আপিল বিভাগের এই আদেশের পরে হাইকোর্ট বিভাগের রায়ের কোনো কার্যকারিতা বর্তমানে নেই। এরপরও শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলমান থাকার যৌক্তিকতা নেই।
শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলনে সাধারণ জনগণের ভোগান্তি বাড়ছে, জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হচ্ছে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, জনগণ এই আন্দোলনের কাছে জিম্মি হয়ে পড়লে তরুণ শিক্ষার্থীদের ওপর তারা আস্থাহীন হয়ে পড়বে। একটি চিহ্নিত রাজনৈতিক মহল শিক্ষার্থী ও জনগণের মধ্যে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করে ফায়দা লোটার অপচেষ্টা করছে।
যেকোনো আন্দোলন হলেই বিএনপি-জামায়াত ও তাদের দোসররা সেটাকে হাতিয়ার করে ক্ষমতায় যাওয়ার দুঃস্বপ্নে বিভোর হয়ে পড়ে বলে অভিযোগ করেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, এখন তারা (বিএনপি) কোটা আন্দোলনের ওপর ভর করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। কারণ, তাদের ওপর জনগণের কোনো আস্থা নেই।
দেশের মানুষের যৌক্তিক দাবির প্রতি আওয়ামী লীগ সর্বদা আন্তরিক বলে উল্লেখ করে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, কোনো যৌক্তিক দাবি কখনোই আওয়ামী লীগের কাছে উপেক্ষিত হয়নি। আওয়ামী লীগ সব সময় জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করে একটি জনকল্যাণকর উন্নত-সমৃদ্ধ রাষ্ট্র বিনির্মাণে কাজ করে যাচ্ছে।
তরুণ শিক্ষার্থীদের কারও রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে অপব্যবহারের শিকার না হওয়ার আহ্বান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘চূড়ান্ত শুনানিতে আন্দোলনকারীদের পক্ষের আইনজীবীর আরও যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের সুযোগ রয়েছে। আদালত আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের অসন্তোষের বিষয়সমূহ চূড়ান্ত শুনানিকালে আমলে নিয়ে বাস্তবসম্মত চূড়ান্ত রায় প্রদান করবেন এবং বিষয়টির নিষ্পত্তি হবে বলে আশা করি।’
আন্দোলনকারীদের ধৈর্য ধারণ করার আহ্বান জানান ওবায়দুল কাদের। একই সঙ্গে তিনি মানুষের দুর্ভোগ সৃষ্টি করে, এমন কর্মসূচি পরিহার করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিরে যেতে অনুরোধ করেন।