নরসিংদীতে কারাগার থেকে ৮২৬ বন্দির পলায়ন

নরসিংদী প্রতিনিধি

নরসিংদী জেলা কারাগারে হামলা চালিয়ে অস্ত্র লুটের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় কারাগারে থাকা ৮২৬ জন বন্দি পালিয়ে গেছেন।

গত শুক্রবার (১৯ জুলাই) বিকেল সোয়া পাঁচটার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে একাধিক কারারক্ষী ও স্থানীয় কয়েকজন বলেন, বিকেল সোয়া চারটার দিকে আন্দোলনকারীরা মুহুর্মুহু ইটপাটকেল ছুড়তে ছুড়তে নরসিংদী জেলা কারাগারের দুই দিকের ফটক ভেঙে ভেতরে ঢোকেন। এ সময় পেট্রলবোমা মারা হয়। এতে কারাগারের ভেতরে নানা জায়গায় আগুন ধরে যায়। আন্দোলনকারীরা ছিনিয়ে নেওয়া চাবি দিয়ে বন্দিদের বেশ কয়েকটি কক্ষের তালা খুলে দেন। কিছু কক্ষের তালা ভেঙে ফেলা হয়। চারপাশ ধোঁয়ায় ছেয়ে যায়।

এ সময় আন্দোলনকারীরা আসামি ছিনিয়ে নিয়ে যান। এছাড়া অস্ত্রাগার ও কারারক্ষীদের থেকে ৮৫টি অস্ত্র ও ৮ হাজার ১৫০টি গুলি লুট করা হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, হামলাকারীদের হাতে লাঠি, দেশি অস্ত্র ও আগ্নেয়াস্ত্র ছিল। তাদের হামলা প্রতিহত করার চেষ্টা করেন কারারক্ষীরা। তবে সেই চেষ্টা ব্যর্থ হয়। কারারক্ষীরা নিরাপদ অবস্থানে চলে যান।

এদিকে মঙ্গলবার (২৩ জুলাই) বিকেলে নরসিংদীর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান জানান, কারাগার থেকে পালিয়ে যাওয়া ৮২৬ বন্দির মধ্যে ১৩১ জন আত্মসমর্পণ করেছেন। এরমধ্যে ৫ জন থানায় ও ১২৬ জন আদালতে গিয়ে আত্মসমর্পণ করেন। এছাড়া পুলিশের অভিযানে গ্রেফতার হয়েছেন চারজন।

পুলিশ সুপার বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় পুলিশের অভিযানে কারাগার থেকে লুট হওয়া ১৮টি অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। গ্রেফতার হয়েছেন ৩১ জন। এনিয়ে এখন পর্যন্ত ৩৩টি অস্ত্র উদ্ধার ও ৯৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি অস্ত্র উদ্ধার ও জড়িত আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।

অপরদিকে কারাগারে হামলা ও কারাবন্দিদের পালানোর ঘটনায় নরসিংদী কারাগারের জেলসুপার আবুল কালাম আজাদ ও জেলার কামরুল ইসলামকে মঙ্গলবার সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। নরসিংদীর জেলা প্রশাসক বদিউল আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

জেলা প্রশাসক বদিউল আলম বলেন, পালিয়ে যাওয়া বন্দিদের আত্মসমর্পণের জন্য এলাকায় মাইকিং করা হচ্ছে। তারা দু’একজন করে আসছেন। আমাদের ধারণা, বেশিরভাগ বন্দিই স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ করবেন।

এছাড়া কারাগারে হামলার ঘটনায় গত রোববার দুপুরে জেলার কামরুল ইসলাম বাদী হয়ে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করে নরসিংদী মডেল থানায় মামলা করেন। মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, হামলায় অংশ নিয়েছেন ১০ হাজার থেকে ১২ হাজার ব্যক্তি। তবে ভেতরে ঢুকে তাণ্ডব চালিয়েছেন অন্তত এক হাজার লোক।

শেয়ার করুন