বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ঘটনাবলি সে দেশের (বাংলাদেশ) অভ্যন্তরীণ বিষয় বলে মন্তব্য করেছে ভারত। দেশটির আশা, বাংলাদেশে খুব শিগগিরই শান্তি ফিরে আসবে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে। খবর এনডিটিভির। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে আজ বৃহস্পতিবার মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সোয়াল এ সব কথা বলেন।
গত সপ্তাহের ব্রিফিংয়েও বাংলাদেশের কোটা আন্দোলন নিয়ে একাধিক প্রশ্ন করা হয়েছিল। সেবারও বলা হয়েছিল, বাংলাদেশে যা ঘটছে, তা সে দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। আজ ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সোয়ালকে বাংলাদেশের ছাত্র আন্দোলন নিয়ে অনেক প্রশ্ন করা হয়।
ব্রিফিংয়ে প্রশ্ন করা হয়, এ সময়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী অথবা অন্য কেউ বাংলাদেশের নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছেন কি না। কিংবা সেই আন্দোলনে বাইরের হাত থাকার কোনো রিপোর্ট ভারতের কাছে আছে কি না। আন্দোলনকারীদের মুখে ভারতবিরোধী স্লোগান শোনা গেছে জানিয়ে জিজ্ঞেস করা হয়, সে দেশের জনগণের একাংশের বিরোধিতায় ভারত উদ্বিগ্ন কি না। রণধীর জয়সোয়াল এসব প্রশ্নের জবাব সন্তর্পণে এড়িয়ে গেছেন। আন্দোলন বা আন্দোলনের চরিত্র নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি। বারবার তিনি বলেন, বাংলাদেশে যা ঘটছে, তা সে দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক খুবই দৃঢ়, উষ্ণ ও বন্ধুত্বপূর্ণ।
আন্দোলন চলাকালীন সে দেশে বসবাসকারী ভারতীয় শিক্ষার্থী ও অন্যদের নিরাপদে ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকারের প্রভূত সাহায্য ও সহযোগিতার উল্লেখ করে মুখপাত্র জানান, এখন পর্যন্ত ৬ হাজার ৭০০–এর বেশি ভারতীয় নিরাপদে দেশে ফিরেছেন। তিনি জানান, নিরাপদ প্রত্যাবর্তনের জন্য ভারতীয় হাইকমিশন ও সহকারী হাইকমিশন ২৪ ঘণ্টা হেল্পলাইন চালু রেখেছে। তিনি বলেন, সে দেশের ঘটনাবলির দিকে ভারত তীক্ষ্ণ দৃষ্টি রেখেছে। তবে সেখানে যা চলছে, তা সম্পূর্ণভাবে তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। ভারতের আশা, খুব শিগগির বাংলাদেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে উঠবে।
মুখপাত্র অবশ্য স্বীকার করেন, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাম্প্রতিক এক মন্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। কূটনৈতিক স্তরে সেই প্রতিবাদপত্র ভারতের কাছে পৌঁছেছে। গণমাধ্যমে এ–সংক্রান্ত যেসব প্রতিবেদন বেরিয়েছে, সেগুলোও ঠিক বলে তিনি মন্তব্য করেন।
রণধীর জয়সোয়াল এ প্রসঙ্গে বলেন, ভারতীয় সংবিধানের সপ্তম তফসিলের (শিডিউল) প্রথম তালিকার ১০ নম্বর বিষয়টিতে বলা আছে, পররাষ্ট্রসংক্রান্ত সবকিছুই কেন্দ্রীয় সরকারের অধীন। কেন্দ্রীয় তালিকাভুক্ত। এ ক্ষেত্রটি রাজ্য তালিকা কিংবা যুগ্ম তালিকায় নেই। রয়েছে কেন্দ্রীয় তালিকায়। কাজেই পররাষ্ট্রসংক্রান্ত কোনো বিষয়ে কোনো রাজ্য সরকারেরই বিন্দুমাত্র এখতিয়ার নেই। তিনি বলেন, যা রাজ্যের বিষয় নয়, তা নিয়ে রাজ্য সরকারের মাথা ঘামানোর কিছু নেই।