চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলায় এক কিশোর ভ্যানচালককে হত্যার দায়ে মামলার একমাত্র আসামি সোহাগ আহম্মেদকে (২৪) যাবজ্জীবন (আমৃত্যু) সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া তাকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ-২ আদালতের বিচারক মো. মাসুদ আলী আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে আসামির উপস্থিতিতে এ মামলার রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার পর সোহাগকে পুলিশ পাহারায় জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।
নিহত কিশোরের নাম রুবেল শেখ (১৪)। সে সদর উপজেলার ছয়ঘরিয়া গ্রামের মাঝেরপাড়ার ইয়ামিন শেখের ছেলে। রুবেল সরোজগঞ্জ এলাকার একটি মাদ্রাসার সপ্তম শ্রেণির ছাত্র ছিল। পড়াশোনার পাশাপাশি ব্যাটারিযুক্ত ভ্যান চালিয়ে পরিবারকে সহযোগিতা করত। দণ্ডিত সোহাগ আহম্মেদ নিহতের প্রতিবেশী।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ থেকে জানা যায়, পূর্ব পরিচয়ের সূত্র ধরে সোহাগ আহম্মেদ গত বছরের ২৭ জুন রুবেল শেখের ভ্যানে চড়ে সদর উপজেলার সরোজগঞ্জ বাজারে যান। এরপর তিনি ভ্যানটি ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করেন। সে অনুযায়ী সোহাগ ভ্যানটি নিয়ে উপজেলার মর্তুজাপুর গ্রামের খেজুরবাগানে যান। সেখানে সোহাগ লাঠি দিয়ে পিটিয়ে রুবেলকে হত্যা করেন। পরে লাশটি খেজুরবাগানের ভেতর গামছা ও ঘাস দিয়ে ঢেকে রাখেন।
এরপর সোহাগ ভ্যানটি নিয়ে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ডাকবাংলা বাজারে বিক্রি করতে যান। সেখানে স্থানীয় লোকজনের সন্দেহ হয়। তারা জাতীয় পরিচয়পত্র চাইলে সোহাগ কৌশলে পালিয়ে যান। বিষয়টি জানাজানি হলে সদর থানা-পুলিশ ওই দিন রাতেই সোহাগকে আটক করে থানায় নেয় এবং তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মর্তুজাপুরের খেজুরবাগান থেকে রুবেল শেখের লাশ উদ্ধার করে।
এ ঘটনায় রুবেলের বাবা বাদী হয়ে সোহাগ আহম্মেদকে আসামি করে ২৮ জুন সদর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। আসামি সোহাগ আহম্মেদ ওই দিনই ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। পুলিশ ওই বছরের ৩১ আগস্ট সোহাগের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। আদালত এ মামলার ২১ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৪ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন।
আদালতের দায়িত্বপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপক্ষের সহকারী কৌঁসুলি (এপিপি) এস এম শরীফুজ্জামান রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, আসামির বয়স ও প্রথম অপরাধ বিবেচনায় মৃত্যুদণ্ডের পরিবর্তে যাবজ্জীবন (আমৃত্যু) সশ্রম কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড করা হয়েছে।