আগামী কয়েকদিন পরিস্থিতি ঘোলাটে করার অনেক চেষ্টা হবে বলে মন্তব্য করেছেন সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার। তিনি বলেন, ‘ছাত্রদের নেতৃত্বে যে গণবিস্ফোরণ ও যে আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়েছে তা নস্যাৎ করার চেষ্টা শুরু হয়েছে। আগামী কয়েকদিন পরিস্থিতি ঘোলাটে করার অনেক চেষ্টা হবে। সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে।’
বদিউল আলম বলেন, স্বাধীনতার চেতনা থেকে বাংলাদেশ যোজন-যোজন দূরে। এরশাদ সরকারের পতনের পর ১৯৯১ সালে যে চেষ্টা করা হয়েছিল, সেটাও ব্যর্থ হয়েছে। এবার যেন ব্যর্থতা না আসে সেজন্য ছাত্রসমাজ ও নাগরিক সমাজকে দায়িত্ব নিতে হবে।
সোমবার (১২ আগস্ট) দুপুরে ‘গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশ: এখন কী করতে হবে’ শীর্ষক বিশেষ ওয়েবিনারে অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। ফোরাম ফর বাংলাদেশ স্টাডিজ এ ওয়েববিনারের আয়োজন করে।
এ সময় সুজন সম্পাদক বলেন, দেশে একটি অসহনীয় অবস্থা তৈরি হয়েছিল। তার ফল এ গণঅভ্যুত্থান। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এসেছে ক্রান্তিকালীন সরকার হিসেবে। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ দেওয়ার জন্য। একই সঙ্গে ছাত্র রাজনীতি বন্ধ করা যাবে না, লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতিটা বন্ধ করতে হবে।
তিনি বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে এ আন্দোলন থেকে দুটি বার্তা পেয়েছি। প্রথমত- যারা অন্যায় করেছে, মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছে, তদন্তের মাধ্যমে তাদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে। দ্বিতীয়ত- আগের সেই অবস্থার যাতে পুনরাবৃত্তি না হয়, সেই জন্য সুদূরপ্রসারী সংস্কার করতে হবে। সাংবিধানিক ও প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার করতে হবে। এগুলো সময়সাপেক্ষ ও জরুরি।’
বদিউল আলম মজুমদার আরও বলেন, ‘এ সংস্কারের জন্য রাজনৈতিক স্থায়ী বন্দোবস্ত প্রয়োজন। কিছু সংস্কার অবশ্য পরবর্তী সময়ে করতে হবে। যারা নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসবেন, তারা সেটা করবেন। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে একটি চুক্তিতে পৌঁছাতে হবে, যাতে একটি জাতীয় সনদ তৈরি করা যায়।’
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান, যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক আলী রীয়াজ, ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের রিসার্চ ফেলো মির্জা এম হাসান, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ম তামিম। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সাংবাদিক মনির হায়দার।