পাক প্রধানমন্ত্রী শাহবাজের বক্তব্যের প্রতিবাদ আওয়ামী লীগের

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মুক্তিযুদ্ধের বিষয়ে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের ধৃষ্টতাপূর্ণ বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।

শুক্রবার (২৩ আগস্ট) প্রতিবাদ জানিয়ে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম এ কথা বলেন।

নাছিম বলেন, শাহবাজ শরিফের বক্তব্যের মাধ্যমে প্রমাণ হয়েছে তারা মুক্তিযুদ্ধের সময়ে এ দেশে গণহত্যার জন্য লজ্জিত নয়। তারা বারবার এ দেশের স্বাধীনতাকে হেয় করার চেষ্টায় লিপ্ত। সম্প্রতি এ দেশে স্বাধীনতার যাবতীয় স্মৃতিচিহ্ন ধ্বংস করতে যে তাণ্ডব চালানো হয়েছে তার পেছনে শাহবাজ শরিফদের হাত রয়েছে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, সেই পরাজয়ের দগদগে ক্ষত পাকিস্তানি শাসক ও এ দেশে তাদের দোসররা এখনো বয়ে বেড়াচ্ছে। তার প্রমাণ এ দেশের সাম্প্রতিক ঘটনাবলী এবং গত ২১ আগস্ট (বুধবার) পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের ধৃষ্টতাপূর্ণ বক্তব্য।

বন্যা মোকাবিলায় বাংলাদেশের পাশে থাকবে পাকিস্তান
তিনি বলেন, শাহবাজ শরিফের বক্তব্য আমাদের মুক্তিযুদ্ধকে সরাসরি কটাক্ষ, ৩০ লাখ শহীদের আত্মদানের প্রতি অবমাননা। জাতির গৌরবময় লড়াইকে যে ভাষায় শাহবাজ শরিফ কটাক্ষ করেছেন এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা শুধু আওয়ামী লীগ বা এ দেশের মানুষের নয়, বাংলাদেশ রাষ্ট্রের কর্তব্য।

নাছিম বলেন, ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, পাকিস্তানি কুচক্রী ও তাদের এ দেশীয় দোসরদের বাংলার জনগণ বারবার পরাজিত করেছে। ভবিষ্যতেও এই ষড়যন্ত্রকারীরা জয়ী হতে পারবে না। মুক্তিযুদ্ধের মধ্যে দিয়ে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ শক্তিই জয়ী হবে।

বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, এ দেশের মুক্তিযুদ্ধ দীর্ঘ সংগ্রামের ধারাবাহিকতা এবং রক্তক্ষয়ী জনযুদ্ধের এক অনন্য উদাহরণ। ব্রিটিশ শাসন অবসানের পর পাকিস্তানিদের দুঃশাসন, শোষণে অতিষ্ঠ ছিল এদেশের আপামর জনতা। এ সময়ে তাদের মুক্তির দূত হিসেবে আবির্ভূত হন হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি দীর্ঘ পরাধীনতার শৃঙ্খল মুক্তির স্বপ্নে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করেন। হয়ে ওঠেন বঙ্গবন্ধু।

তিনি বলেন, ১৯৭০ সালে পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। কিন্তু পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী নিয়মতান্ত্রিক পথে ক্ষমতা হস্তান্তর না করে তাদের স্বভাবসুলভ বলপ্রয়োগের মাধ্যমে এ দেশের মানুষকে দমনের পথ নেয়। জনগণের গণতান্ত্রিক রায়কে পাশ কাটিয়ে পাকিস্তানিরা আমাদের উপরে একটি অন্যায় যুদ্ধ চাপিয়ে দেয়। বঙ্গবন্ধুর ডাকে এ দেশের আপামর জনতা শুরু করে প্রতিরোধ যুদ্ধ। টানা নয় মাস প্রশিক্ষিত একটি সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের অসম একটি যুদ্ধ চলে। মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বপূর্ণ আত্মদানের মধ্যে দিয়ে বাঙালি হাজার বছরের পরাধীনতার শিকল মুক্ত হয়।

শেয়ার করুন