সরকারি চাকরিতেে সংরক্ষিত কোটা ব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং পরবর্তীতে সরকার বিরোধী আন্দোলনের সময়ে হত্যাকাণ্ডসহ সামগ্রিকভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা তদন্তে প্রাথমিক তথ্যানুসন্ধানের বিষয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে জাতিসংঘ। ২২ আগস্ট জাতিসংঘ মানবাধিকার হাইকশিনারের দপ্তরের এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের প্রধান রোরি মুঙ্গোভেনের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে বৈঠক দিয়ে তাদের আলোচনা সূত্রপাত হয়েছে। তথ্যানুসন্ধান কারিগরি দলটি বাংলাদেশে প্রায় এক সপ্তাহের সফর করার কথা রয়েছে। এ সময় ঢাকায় এসে অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করে কাজের ধারা, প্রক্রিয়া, শর্তসহ সব বিষয় চূড়ান্ত করবে। জাতিসংঘের এই উদ্যোগকে আমরা স্বাগত জানাই।
আমরা মনে করি, আন্দোলনকে পুঁজি করে সংঘটিত অনাঙ্ক্ষিত ও অনভিপ্রেত কর্মকাণ্ডের সঙ্গে কারা কারা জড়িত সেটির প্রকৃত রহস্য উদঘাটন করা দরকার। কাদের ইন্দনে একটি অহিংস আন্দোলন সহিংস আন্দোলনে রূপান্তরিত হলো, কাদের ইন্দনে পুলিশসহ রাষ্ট্রের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকায় নিয়োজিত বাহিনীগুলো ছাত্রদের বিক্ষোভ দমনে অতিরিক্ত বল প্রয়োগ করলো সেটি এদেশের জনগণের সামনে পরিষ্কার হওয়া প্রয়োজন। এসব বিষয়ের যথার্থ প্রতিবেদন (যেটি বিশ্ববাসীর নিকটও বিশ্বাসযোগ্য বলে বিবেচিত) নিরপেক্ষ তদন্ত ছাড়া প্রস্তুত করা সম্ভব নয়।
আমরা আশা করব, জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনের প্রতিনিধি দল তাদের নিরপেক্ষতা বজায় রেখে গত ১৬ জুলাই থেকে ৮ আগস্ট পর্যন্ত সংঘটিত প্রতিটি ঘটনায় ছাত্র-পুলিশ-রাজনৈতিক কর্মী-পেশাজীবী-সংখ্যালঘু নাগরিকসহ যাদের মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে তাদের বিষয়ে একটি বিশ্বাসযোগ্য তদন্ত প্রতিবেদন তৈরি করবেন। নির্দোষ ব্যক্তিদের নাম যাতে কোনোভাবে জড়িয়ে না পড়ে সেদিকেও অনুসন্ধানী দলকে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার আহ্বান জানাই।
কেননা আমরা চাই, ঐ সময়টিতে মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে জড়িত প্রত্যেক ব্যক্তি সর্বোচ্চ শাস্তির আওতায় আসুক। আমরা বিশ্বাস করি, মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীরা শুধু দেশের শত্রু নয়- তারা বিশ্বমানবতারও শত্রু।