পশ্চিম আফ্রিকার দেশ নাইজেরিয়ায় ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে সৃষ্ট বন্যায় অন্তত ৪৫ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। দেশটির উত্তরপূর্বাঞ্চলের এই বন্যায় গৃহহীন হয়ে পড়েছেন আরও হাজার হাজার মানুষ। সোমবার নাইজেরিয়ার জাতীয় জরুরি ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ (এনইএমএ) বন্যায় প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতির এই তথ্য জানিয়েছে।
সংস্থাটির মুখপাত্র মানজো ইজেকিয়েল বলেছেন, বন্যায় উত্তর-পূর্বের তিন রাজ্য—জিগাওয়া, আদামাওয়া ও তারাবায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বন্যায় এই তিন রাজ্যে এখন পর্যন্ত ৪১ হাজার ৩৪৪ জন বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
এর আগে, নাইজেরিয়া এক দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যার মুখোমুখি হয় ২০২২ সালে। ওই সময় দেশটিতে বন্যায় ৬ শতাধিক মানুষের প্রাণহানি ঘটে এবং বাস্তুচ্যুত হন প্রায় ১৪ লাখ মানুষ। এছাড়া বন্যায় ৪ লাখ ৪০ হাজার হেক্টর কৃষিজমির ফসল নষ্ট হয়।
মানজো ইজেকিয়েল বলেন, ‘‘আমরা সবেমাত্র মৌসুমের শীর্ষে পৌঁছেছি। এর মাঝেই দেশের উত্তরাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি অত্যন্ত ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে।’’
অর্থনৈতিক সংকটের জেরে আফ্রিকার এই দেশটিতে মুদ্রাস্ফীতি ইতোমধ্যে দুই সংখ্যার ঘরে পৌঁছেছে এবং দ্রব্যমূল্য ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশটির উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় মরু অঞ্চলগুলোতে জঙ্গিদের বার বার হামলার কারণে অনেকে কৃষি খাত ছেড়ে দিচ্ছেন।
এমন পরিস্থিতিতে সেখানে বন্যা দেখা দেওয়ায় তা কৃষিক্ষেত্রে ভয়াবহ সমস্যা তৈরি করেছে। চলমান বন্যায় দেশটিতে প্রায় ৬৯৩ হেক্টর কৃষি জমির ফসলের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। নাইজেরিয়ার সরকার চলতি বছরের বন্যার পূর্বাভাসে বলেছে, দেশটির ৩৬টি রাজ্যের মধ্যে অন্তত ৩১টি বন্যার উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে।
এনইএমএর মুখপাত্র মানজো ইজেকিয়েল বলেছেন, নাইজেরিয়ার উজানে নাইজার নদীর তীরবর্তী অন্যান্য দেশগুলোতে উচ্চ জোয়ার দেখা দিয়েছে বলে আমাদের কাছে তথ্য আছে। ফলে নদীর পানি নাইজেরিয়ার দিকে প্রবাহিত হচ্ছে। আমরা আমাদের ভবিষ্যদ্বাণীর বাস্তবতা দেখতে শুরু করেছি।
সূত্র: রয়টার্স