আরজি কর কাণ্ডের আবহ না কাটতেই ভারতের শোবিজ অঙ্গনে যৌন হেনস্তা প্রসঙ্গ যেন এখন আলোচনার তুঙ্গে। সম্প্রতি হেমা কমিটির রিপোর্টে প্রকাশ পেয়েছে ভারতের সিনেমা জগতে ঘটে যাওয়া বহু যৌন হেনস্তার অভিযোগ। টালিউড, বলিউড থেকে দক্ষিণী, প্রায় সব ইন্ডাস্ট্রিজেই এখন চলছে হেনস্তা নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা। সঙ্গে একে একে মুখ খুলছেন বহু তারকাও।
সম্প্রতি টালিউড অভিনেত্রী ঋতাভরী চক্রবর্তীও যৌন হেনস্তার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ ওঠে। কয়েকদিন আগে অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্রও মালয়ালাম পরিচালক রঞ্জিতের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্তার অভিযোগ আনেন। দক্ষিণী অভিনেত্রী মিনু মুনীরও চার সহ-অভিনেতার বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ তোলেন। এভাবে বিভিন্ন অভিযোগে ভারতীয় সিনেমার জগতে যেন বহু কালো অধ্যায় ফুটে এসেছে। যেখানে সবচেয়ে বেশি বৈষম্য ও যৌন শোষণের অভিযোগ রয়েছে মালয়ালম সিনেমা ইন্ডাস্ট্রিতে।
এরই প্রেক্ষিতে হেমা কমিটির রিপোর্টের সাম্প্রতিক প্রতিবেদন নিয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন বলিউড অভিনেত্রী ও সাংসদ কঙ্গনা রানাওয়াত। ভারতীয় গণমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে কঙ্গনা জানান, তিনি অনেক আগে থেকেই এই বিষয়গুলি নিয়ে কথা বলছেন, কিন্তু কেউ সেদিকে নজর দেয়নি।
তবে এ সমস্ত ঘটনার আঁতুড়ঘর হিসেবে বলিউডের দিকেই আঙুল তুললেন কঙ্গনা, দিলেন বিস্ফোরক তথ্য। যখন কঙ্গনাকে মালায়ালম ইন্ডাস্ট্রিতে যৌন হেনস্তার অভিযোগ নিয়ে প্রশ্ন করা হয়, এবং জানতে চাওয়া হয় যে এমন দৃশ্য সব ইন্ডাস্ট্রিতেই এক কী না, উত্তরে এই বলিউডের এই অভিনেত্রী বলেন, ‘ইন্ডাস্ট্রি সম্পর্কে আমার কিছু বলার নেই, এটি একটি আশাহীন জায়গা। দশ বছর আগে আমির খানের সত্যমেব জয়তে-তের এপিসোড দেখতে পারেন। আমি সিনেমার স্ক্রিপ্টে নারীর সম্মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলাম। আইটেম নম্বরের বিরোধিতা করে কথা বলেছিলাম।’
কঙ্গনা আরও বলেন, ‘এভাবে আমি সবার শত্রু হয়ে পড়ি। একই ধরনের যৌন বিষয়ক সিনেমা, নারী নির্যাতনের প্রচার, এখনও একইভাবে হয়ে চলেছে। কেরালা নিয়ে এই প্রতিবেদন নিয়ে আমি অনেকদিন ধরেই কথা বলছি, এতে আসলে কিছুই হবে না। আমার খুব খারাপ ও হতাশ লাগে যখন, মহিলারা আইটেম নম্বরগুলির প্রচার করেন। যেখানে মেয়েদের ভোগ্যপণ্য হিসেবে দেখায়। এমনকী এই নারীরা অন্য নারীর সাহায্যে এগিয়ে আসেন না।’
উল্লেখ্য, ভারতের পার্লামেন্ট সামলানোর পাশাপাশি সিনেমাও সামলাচ্ছেন কঙ্গনা রানাউত। আগামীতে ‘ইমার্জেন্সি’ ছবিতে দেখা যাবে এই অভিনেত্রীকে। যেখানে তিনি প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর চরিত্রে অভিনয় করবেন। সিনেমাটি তার লেখা, পাশাপাশি ছবি পরিচালনাও করেছেন। এতে আরও অভিনয় করেছেন অনুপম খের, মহিমা চৌধুরী, মিলিন্দ সোমান, শ্রেয়াস তলপাড়ে এবং প্রয়াত সতীশ কৌশিক। আগামী ৬ সেপ্টেম্বর প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাবে ছবিটি।