অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর আগ্রাসন থামছেই না। ইসরায়েলের সাম্প্রতিক হামলায় গাজায় কমপক্ষে আরও ১২ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। গাজার বেসামরিক প্রতিরক্ষার বেশ কিছু প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, জাবালিয়া এবং খান ইউনিস-সহ গাজার বিভিন্ন স্থানে হামলা অব্যাহত রয়েছে। খবর আল জাজিরার।
ইসরায়েলি বাহিনী জেনিন শহর অবরোধ করে রেখেছে। ফলে ফিলিস্তিনিরা খাবার, পানি, বিদ্যুৎ এবং ইন্টারনেট সেবা পাচ্ছে না। কয়েক দশকের মধ্যে অধিকৃত পশ্চিম তীরে সবচেয়ে তীব্র সামরিক অভিযান অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েল।
জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ জানিয়েছে, বুধবার থেকে ইসরায়েল বাহিনীর হামলা শুরুর পর পশ্চিমতীরে ২০ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করা হয়েছে। নিহতদের মধ্যে একজন প্রতিবন্ধী এবং বেশ কয়েকজন শিশু রয়েছে।
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের সীমান্তে প্রবেশ করে আকস্মিক হামলা চালায় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। এরপরেই গাজায় পাল্টা আক্রমণ চালায় ইসরায়েল। সে সময় থেকে এখন পর্যন্ত গাজায় কমপক্ষে ৪০ হাজার ৬০২ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। এছাড়া আহত হয়েছে আরও ৯৩ হাজার ৮৫৫ ফিলিস্তিনি।
এদিকে গাজায় শিশুদের পোলিও টিকা দেওয়ার জন্য লড়াইয়ে ‘মানবিক বিরতি’ দিতে রাজি হয়েছে ইসরায়েল। শুক্রবার (৩০ আগস্ট) এ কথা জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। সংস্থাটির জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা রিক পিপারকর্ন বলেছেন, গাজা উপত্যকার প্রায় ৬ লাখ ৪০ হাজার শিশুকে পোলিও টিকা দেওয়ার লক্ষ্যে আগামী রোববার থেকে এই কর্মসূচি শুরু হবে।
গাজার মধ্য, দক্ষিণ ও উত্তর অংশে তিন ধাপে এই টিকাদান কর্মসূচি চলবে। প্রতি ধাপে টানা তিনদিন রোজ স্থানীয় সময় সকাল ৬টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত লড়াই বন্ধ থাকবে।
গাজায় প্রায় ২৫ বছর পর কিছুদিন আগে ১০ মাস বয়সী এক শিশুর শরীরে পোলিও ভাইরাস শনাক্ত হয়। এতে শিশুটির শরীরের একাংশ অবশ (প্যারালাইজড) হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন জাতিসংঘের কর্মকর্তারা।
অবরুদ্ধ উপত্যকাটিতে এরই মধ্যে ১২ লাখ ৬০ হাজার পোলিও টিকা পৌঁছে গেছে। আরও চার লাখ টিকা শিগগির সেখানে পৌঁছাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
জাতিসংঘ কর্মীদের পাশাপাশি স্থানীয় স্বাস্থ্যকর্মীদের সহায়তায় গাজায় এই টিকাদান কর্মসূচি পরিচালিত হবে। এর জন্য দুই হাজারের বেশি মানুষকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার লক্ষ্য, গাজার অন্তত ৯০ শতাংশ শিশুকে পোলিও টিকা দেওয়া। ভাইরাসটি প্রতিরোধে এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জন খুবই জরুরি।