ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি বর্বর হামলায় আরও ৩৫ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এতে করে উপত্যকাটিতে নিহতের মোট সংখ্যা ৪০ হাজার ৮০০ ছাড়িয়ে গেছে।
এছাড়া গত বছরের অক্টোবর থেকে চলা এই হামলায় আহত হয়েছেন আরও ৯৪ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি। মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) পৃথক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু ও সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের চলমান হামলায় কমপক্ষে আরও ৩৫ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এতে করে গত বছরের অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪০ হাজার ৮১৯ জনে পৌঁছেছে বলে মঙ্গলবার অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।
মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, নিরলস এই হামলায় আরও অন্তত ৯৪ হাজার ২৯১ জন ব্যক্তিও আহত হয়েছেন।
আল জাজিরা বলছে, ইসরায়েলি বাহিনী গাজাজুড়ে কমপক্ষে ৩৫ জনকে হত্যা করেছে বলে ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। অন্যদিকে মধ্য গাজায় লড়াইয়ে সংক্ষিপ্ত এবং আংশিক বিরতির মাধ্যমে আরও একদিন শিশুদের পোলিও টিকা দেওয়ার অনুমতি দিয়েছে।
ফিলিস্তিনি সিভিল ইমার্জেন্সি সার্ভিস মঙ্গলবার জানিয়েছে, সর্বশেষ ২৪-ঘণ্টা সময়কালে যারা নিহত হয়েছেন তাদের মধ্যে দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর রাফাতে চার নারীও রয়েছেন। এছাড়া গাজার শহরের উত্তরে একটি হাসপাতালের কাছে হামলায় আরও আটজন নিহত হয়েছেন।
এছাড়া গাজা শহরের মাঝখানে ওমর আল-মোখতার স্ট্রিটের কাছে একটি বাড়িতে ইসরায়েলি বিমান হামলায় ৯ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। শহরের উত্তর শহরতলী শেখ রাদওয়ানের একটি কলেজের কাছে আরেকটি হামলা হয়।
অন্যরা পুরো অঞ্চল জুড়ে বিমান হামলায় নিহত হয়েছেন বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বলেছে, তারা গাজা শহরের আল-আহলি আরব হাসপাতালের কাছে একটি কমান্ড সেন্টারে গত বছরের ৭ অক্টোবরের হামলায় অংশ নেওয়া একজন সিনিয়র হামাস কমান্ডারসহ আট ফিলিস্তিনি বন্দুকধারীকে হত্যা করেছে।
একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আহমেদ ফজি নাজের মুহাম্মদ ওয়াদিয়া গাজা সীমান্তের কাছে ইসরায়েলের নেটিভ হাআসারা সম্প্রদায়ের ওপর ‘বেসামরিক গণহত্যায়’ কমান্ড করেছিলেন। অবশ্য এ বিষয়ে হামাসের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
হামাস এবং ফিলিস্তিনি ইসলামিক জিহাদের সশস্ত্র শাখা বলেছে, তারা গাজা শহরের জেইতুন পাড়ায় এবং দক্ষিণে রাফা ও খান ইউনিসে ইসরায়েলি বাহিনীর সাথে লড়াই করছে।
এদিকে গাজায় হামলা সত্ত্বেও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) বলেছে, তারা গাজায় পোলিও টিকা দিচ্ছে এবং এ কাজে তারা তাদের লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও এগিয়ে রয়েছে। মঙ্গলবার টিকা কর্মসূচির তৃতীয় দিনে গাজার ১০ বছরের কম বয়সী এক-চতুর্থাংশ শিশুকে টিকা দিয়েছে সংস্থাটি।
গত ২৫ বছরের মধ্যে এই অঞ্চলে প্রথম পোলিও আক্রান্তের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পরে গত রোববার গাজায় ব্যাপকভিত্তিক টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়েছে। গাজার নির্দিষ্ট এলাকায় ইসরায়েল এবং হামাস যোদ্ধাদের মধ্যে লড়াইয়ে দৈনিক আট ঘণ্টা বিরতির ওপর টিকা দেওয়ার এই বিষয়টি নির্ভর করে।