গত ৫ আগস্ট রাজশাহীর গোদাগাড়ী থানায় হামলার মামলায় পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিমুল হককে আসামি করেছে পুলিশ। তবে সে সময় তিনি চিকিৎসার জন্য ভারতে ছিলেন। ভারতে থাকা অবস্থায় আসামি করার কারণে শুনানির দিনে আদালত মামলার বাদীকে তলব করেছেন বলে জানিয়েছেন আসামির আইনজীবী।
তথ্য ঘেঁটে জানা যায়, ৩ আগস্ট নাসিমুল হক চিকিৎসার জন্য ভারতে যান। ৬ আগস্ট ভারতের মনিপাল হাসপাতালে চিকিৎসা নেন এবং ১৩ আগস্ট দেশে ফেরেন। ৫ আগস্টের ঘটনার মামলায় ২ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাতে নিজ বাসা থেকে পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে ও রিমান্ডের আবেদন জানিয়েছে।
৮ সেপ্টেম্বর (রোববার) রিমান্ডের শুনানি হবে।
মামলার সূত্রে জানা গেছে, ৫ আগস্ট সকাল ১০টার দিকে এজাহারনামীয় ৪০ জন এবং অজ্ঞাত ৬০০ থেকে ৭০০ জন দেশি অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে গোদাগাড়ী থানার প্রধান ফটক ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করেন এবং পুলিশের তিনটি গাড়িসহ পাঁচ থেকে ছয়টি গাড়ি ভাঙচুর করেন। এরপর আসামিরা থানার মূল ভবনে প্রবেশ করে অস্ত্রাগার ভেঙে ফেলেন এবং অস্ত্র ও গুলি লুট করেন। প্রাণের ভয়ে থানা-পুলিশের কর্মকর্তারা ভবনের ছাদে আশ্রয় নেন। আসামিরা কিছু সময় তাণ্ডব চালিয়ে থানা ভবন ত্যাগ করেন। হামলায় নেতৃত্ব দেন রাজশাহী-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরী। নাসিমুল হককে ৬ নম্বর আসামি করা হয়েছে। ৩ সেপ্টেম্বর মামলাটি দায়ের করেন গোদাগাড়ী থানার উপপরিদর্শক রেজাউল করিম। মামলাটি তদন্ত করছেন থানার আরেক উপপরিদর্শক মো. আনোয়ার।
নাসিমুল হকের পাসপোর্ট ও হাসপাতালের ব্যবস্থাপত্রের তথ্য অনুযায়ী, ৩ আগস্ট তিনি সোনামসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে যান। ৬ আগস্ট মনিপাল হাসপাতালে চিকিৎসা নেন এবং এই স্থলবন্দর দিয়ে ১৩ আগস্ট তিনি দেশে ফেরেন।
নাসিমের আইনজীবী সালাহ উদ্দিন বিশ্বাস বলেন, ‘২ সেপ্টেম্বর রাতে গোদাগাড়ী পৌর এলাকার হাটপাড়া ভগবন্তপুরের বাসা থেকে নাসিমকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর রাতেই মামলা করা হয়। গত বুধবার গোদাগাড়ী থানার আমলি আদালতে জামিন আবেদন করি। আদালতকে বলি, আসামি ঘটনার দিন দেশেই ছিলেন না। ভিসা ও চিকিৎসার কাগজপত্র আদালতকে দেখাই।’
সালাহ উদ্দিন বলেন, জামিনের জন্য আবেদন করলে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আদালতকে জানান, পুলিশের পক্ষ থেকে আসামির রিমান্ডের আবেদন এসেছে। তখন আদালত রিমান্ড ও জামিন শুনানির জন্য রোববার দিন ধার্য করেন। ভারতে থাকা ব্যক্তি কীভাবে আসামি হলেন, তা জানতে এদিন মামলার বাদী এসআই রেজাউল করিমকেও তলব করেছেন বিচারক।
ভারতে অবস্থান করা ব্যক্তি কীভাবে থানা ভাঙচুরে অংশ নিয়েছেন, জানতে চাইলে মামলার বাদী গোদাগাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আতাউর রহমান বলেন, ‘তিনি তো বলেন নাই যে হামলার সময় তিনি ভারতে ছিলেন। না বললে কীভাবে জানা যাবে? বিভিন্ন সূত্র থেকে তথ্য নিয়ে আসামি করা হয়েছে। এখন তদন্তে যদি পাওয়া যায় যে তিনি ভারতে ছিলেন, তাহলে বাদ যাবে।’