চার দিনের সফরে যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছেন ভারতের বিরোধীদলীয় নেতা ও ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের সাবেক সভাপতি রাহুল গান্ধী। এই সফরে ভারতীয় প্রবাসীদের পাশাপাশি, মার্কিন আইনপ্রণেতা, ব্যবসায়ী ও একাডেমিক নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন তিনি।
তবে এই সফরে তিনি বাংলাদেশ নিয়েও সরব হয়েছেন। বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে সেখানে বৈঠকে অংশ নেওয়ার পাশাপাশি সংবাদ সম্মেলনেও কথা বলেছেন রাহুল। বাংলাদেশে প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, নির্দিষ্ট কোনও দল কিংবা ব্যক্তির সঙ্গে বিশেষ সম্পর্ক নয়, বাংলাদেশের বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কিংবা ভবিষ্যতে যেকোনও সরকারের সাথে কাজ করতে আগ্রহী তারা।
এছাড়া বাংলাদেশে ‘উগ্রবাদ’ উত্থানের হুমকি ভারতের জন্য উদ্বেগের বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। রাহুল বলেছেন, পররাষ্ট্রনীতির প্রধান প্রধান ইস্যুতে তার দল কংগ্রেস ক্ষমতাসীন মোদি সরকারের পাশে আছে।
ভারতীয় বার্তাসংস্থা পিটিআইয়ের বরাত দিয়ে বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে দেশটির সংবাদমাধ্যম বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওয়াশিংটনে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের মর্যাদাপূর্ণ জাতীয় প্রেসক্লাবে মঙ্গলবার আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ-পাকিস্তানসহ বেশ কয়েকটি ইস্যুতে মোদির নীতিকে সমর্থনের কথা জানান রাহুল গান্ধী। দেশটিতে তার চার দিনের অনানুষ্ঠানিক সফর মঙ্গলবার শেষ হয়েছে।
রাহুল এদিন ইঙ্গিত দিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক, সন্ত্রাসবাদের প্রবাহ বন্ধ না করা পর্যন্ত পাকিস্তানের সাথে কোনও আলোচনা না করা, ইসরায়েল ইস্যু ও বাংলাদেশে চরমপন্থি উপাদানসহ ভারতের পররাষ্ট্রনীতির প্রধান প্রধান ইস্যুতে তার দল কংগ্রেস প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন ক্ষমতাসীন বিজেপির পাশে আছে।
তবে ভারতের ৫৪ বছর বয়সী এই নেতা চীনকে নিয়ে মোদির নীতির সাথে একমত পোষণ করেননি। এছাড়া তিনি অভিযোগ করেছেন, চীনা সৈন্যরা আকারে দিল্লির আয়তনের সমান লাদাখে ভারতীয় অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে।
বাংলাদেশের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে রাহুল গান্ধী বলেন, বাংলাদেশে চরমপন্থি উপাদান নিয়ে ভারতে উদ্বেগ রয়েছে এবং (বিজেপি সরকারের মতো) আমাদেরও সেই উদ্বেগ রয়েছে। তিনি বলেন, তবে, আমি আত্মবিশ্বাসী যে— বাংলাদেশে পরিস্থিতি স্থিতিশীল হবে এবং আমরা বর্তমান সরকার বা তার পরে অন্য কোনও সরকারের সাথে সম্পর্ক রাখতে সক্ষম হবো।
এর আগে একইদিন রাহুল গান্ধী যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্ট ক্যাপিটলে একদল আইনপ্রণেতার সাথে বৈঠক করেন। সেখানে বাংলাদেশের ইস্যু নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
রাহুল গান্ধী বলেন, বৈঠকে আমরা এটা (বাংলাদেশ ইস্যু) উত্থাপন করেছি এবং তারা এ বিষয়ে আমাদের সাথে কথাও বলেছে।
ভারতের এই বিরোধীদলীয় নেতা বলেন, ‘দেখুন, আমরা যেকোনও ধরনের সহিংসতার বিরুদ্ধে। এবং আমরা এটার অবসান চাই। আর যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এটার অবসান ঘটানো বাংলাদেশ সরকারের দায়িত্ব। আমাদের দিক থেকে, আমাদের সরকারের দায়িত্ব (বাংলাদেশকে) চাপ দেওয়া যাতে সহিংসতা বন্ধ হয়।’
পাকিস্তান ইস্যুতে রাহুল বলেন, আমাদের দেশে পাকিস্তানের পক্ষ থেকে সন্ত্রাসবাদের প্ররোচনা দুই দেশকে পিছিয়ে রেখেছে। পাকিস্তান আমাদের দেশে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে তা আমরা মেনে নেব না। আমরা এটা মেনে নেব না এবং যতক্ষণ তারা এটি করতেই থাকবে, আমাদের মধ্যে সমস্যা থাকবে।
কাশ্মির ইস্যুটি দক্ষিণ এশিয়ার দুই দেশকে সংলাপ থেকে দূরে রাখছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, না।