সমন্বয়কের তালিকায় নাম না থাকলেও জুলাই মাসে চলা ছাত্র আন্দোলনে সামনের কাতারেই ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাদিক কায়েম। তালিকায় নাম থাকা সমন্বয়কদের সঙ্গে বিভিন্ন ছবিতেও তাঁকে দেখা গেছে। আলোচনা আছে, উপদেষ্টা পরিষদের শপথ অনুষ্ঠানে বঙ্গভবনেও উপস্থিত ছিলেন এই সাদিক।
এবার নিজের রাজনৈতিক পরিচয় প্রকাশ্যে এনেছেন আলোচিত সাদিক। শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) নিজের ফেসবুক আইডিতে স্ট্যাটাস দিয়ে জানিয়েছেন, তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ইসলামী ছাত্রশিবিরের সভাপতি।
সাদিক কায়েমের পরিচয় প্রকাশের পর এ নিয়ে ফেসবুকজুড়ে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনার ঝড়। রোববার একটি স্ট্যাটাসে প্রবাসী সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের খান লিখেছেন, ‘ছেলেটাকে আমি চিনতাম সালমান নামে, পরিচয় জুলাইয়ের ২৫ তারিখ থেকে, তারপর নিয়মিতই কথা হতো।’ হঠাৎ সালমানের শিবির পরিচয়ে অবাকও হয়েছেন জুলকারনাইন। তিনি লেখেন, ‘সালমানের প্রকৃত নাম শাদিক কাঁইয়ূম এবং তাঁর রাজনৈতিক পরিচয়, সে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিবিরের সভাপতি। অবশ্যই অবাক হয়েছি, বেশ অবাক হয়েছি।’
বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম শনিবার এক পোস্ট দিয়ে বলেন, সাদিক কায়েম শিবিরের ঢাবি শাখার সভাপতি। দুয়েকদিনের মধ্যে সেক্রেটারিসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শাখা ছাত্রশিবিরের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র-রাজনীতি নিষিদ্ধের যে আলোচনা চলছে তা নিয়ে শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. নিয়াজ আহমেদ খানের সঙ্গে বৈঠকেও উপস্থিত ছিলেন সাদিক কায়েম। সেখানে তিনি ছাত্রশিবির বিশ্ববিদ্যালয় শাখা সভাপতি পরিচয়েই উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে, সাদিক কায়েমের পরিচয় জানান পর এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে নানা আলোচনা–সমালোচনা। কেউ কেউ বলছেন, নিজের পরিচয় লুকিয়ে নির্দলীয় সেজে আন্দোলন করে সাদিক প্রতারণা করেছেন।
বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রায় দেড় যুগেরও বেশি সময় পর প্রকাশ্যে এসেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির। জামায়াত ইসলামের আলোচিত এই ছাত্র সংগঠনের প্রকাশ্যে আসার ঘোষণার পরে ক্যাম্পাস জুড়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে এ নিয়ে চলছে আলোচনা। সদ্য ঘটে যাওয়া অভ্যুত্থানে সংগঠনটির নেতা-কর্মীদের ভূমিকা নিয়েও সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে কৌতূহল।
জানা গেছে, সাদিক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী। তাঁর বাড়ি খাগড়াছড়িতে।
শনিবার ফেসবুক পোস্টে সাদিক কায়েম লিখেছেন, ‘গণতান্ত্রিক দেশে ভিন্নমতের প্রতি থাকবে সম্মান, কিন্তু কেউ যেন স্বৈরাচারী না হয়ে উঠতে পারে সে ব্যাপারে রাখতে হবে সজাগ ও পূর্ণ দৃষ্টি। এই রাজনৈতিক সংস্কারে অবশ্যই চব্বিশের শহীদদের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন থাকতে হবে, তা না হলে ভেস্তে যাবে আমাদের এই স্বাধীনতা। আমরা চাই ছাত্ররাজনীতির সংস্কার গবেষণা, পলিসি ডায়ালগের মধ্য দিয়ে তা বাস্তবায়িত হোক। এ লক্ষ্যে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছি।’
লেখার শেষ অংশে তিনি নিজের নামের সঙ্গে পরিচয় যুক্ত করে দেন। যেখানে জানান, তিনি বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি।