দেশে ক্রমেই বাড়ছে ডেঙ্গুর প্রকোপ। গত একদিনে সারাদেশে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এসময়ে ৯২৬ জন নতুন ডেঙ্গুরোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। যা ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্তের সংখ্যার দিক দিয়ে চলতি বছরে সর্বোচ্চ। এ নিয়ে চলতি বছর মশাবাহিত এ রোগে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩১ জনে। এছাড়া এ বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ২৪ হাজার ৩৪ জন।
রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমারজেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো ডেঙ্গুবিষয়ক নিয়মিত প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সারাদেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ৯২৬ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আক্রান্তদের মধ্যে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকাতেই ৩১৬ জন রয়েছেন। এছাড়া ঢাকা বিভাগে ১৯৬ জন, বরিশালে ৬৫ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ১৫১ জন, খুলনায় ১০১ জন, ময়মনসিংহে ১৮ জন ও রাজশাহী বিভাগে ৪৬ জন ডেঙ্গুরোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
এর আগে গত ১৯ সেপ্টেম্বর একদিনে সারাদেশে ডেঙ্গু নিয়ে ৮৮৭ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। রোববারের আগ পর্যন্ত সেটিই ছিল একদিনে সবচেয়ে বেশি আক্রান্তের রেকর্ড।
চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ২২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সারাদেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন মোট ২৪ হাজার ৩৪ জন। তাদের মধ্যে ৬২ দশমিক ৬ শতাংশ পুরুষ এবং ৩৭ দশমিক ৪ শতাংশ নারী।
১ জানুয়ারি থেকে ২২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মারা যাওয়া ১৩১ জনের মধ্যে ৫৪ দশমিক ২ শতাংশ নারী এবং ৪৫ দশমিক ৮ শতাংশ পুরুষ।
প্রতি বছর বর্ষাকালে ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা দেয়। ২০২৩ সালের জুন মাস থেকে ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করে। গত বছর দেশে তিন লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন ডেঙ্গুরোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নেন। এর মধ্যে ঢাকায় এক লাখ ১০ হাজার ৮ জন এবং ঢাকার বাইরে চিকিৎসা নেন দুই লাখ ১১ হাজার ১৭১ জন।
ওই বছর আক্রান্তদের মধ্যে হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরেন তিন লাখ ১৮ হাজার ৭৪৯ জন। গত বছর এক হাজার ৭০৫ জন মশাবাহিত এ রোগে মারা যান, যা দেশের ইতিহাসে এক বছরে ডেঙ্গুতে সর্বোচ্চ মৃত্যু।
এর আগে ২০১৯ সালে দেশব্যাপী ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন এক লাখ এক হাজার ৩৫৪ জন। ওই সময় চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীসহ প্রায় ৩০০ জনের মৃত্যু হয়েছিল।
২০২০ সালে করোনা মহামারিকালে ডেঙ্গুর সংক্রমণ তেমন একটা দেখা না গেলেও ২০২১ সালে সারাদেশে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হন ২৮ হাজার ৪২৯ জন। ওই বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ১০৫ জনের মৃত্যু হয়েছিল।
এছাড়া ২০২২ সালে ডেঙ্গু নিয়ে মোট ৬২ হাজার ৩৮২ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। ওই বছর মশাবাহিত এ রোগে ২৮১ জন মারা যান।