জাতিসংঘের ৭৯তম সাধারণ অধিবেশনে অংশ নিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড.মুহাম্মদ ইউনূসের যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক সফর কেন্দ্র করে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি দিয়েছে বিএনপি ও আওয়ামী লীগ। এতে উভয় দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
মঙ্গলবার দুপুরে নিউ ইয়র্কের জন এফ কেনেডি বিমানবন্দরে পৌঁছার কথা রয়েছে মুহাম্মদ ইউনূসের। এ উপলক্ষ্যে বিএনপি স্বাগত-সমাবেশ এবং আওয়ামী লীগ বিক্ষোভ সমাবেশের প্রস্তুতি নিয়েছে।
নিউ ইয়র্ক অঙ্গরাজ্য বিএনপির সভাপতি অলিউল্লাহ মোহাম্মদ আতিকুর রহমান জানান, ২৪ সেপ্টেম্বর ইউনূসের যুক্তরাষ্ট্রে আসা উপলক্ষ্যে সংবর্ধনা সভা এবং ২৭ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘে ভাষণ উপলক্ষ্যে ‘শান্তি-সমাবেশ’ করবেন তারা।
যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাকির এইচ চৌধুরী জানান, শেখ হাসিনার আমলে খুন-গুম-নির্যাতনের বিচার দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার ভাষণের দিনে জাতিসংঘের সামনে বিএনপি অবস্থান নিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে খুন-গুম-নির্যাতন আর লুটপাটের বিচার চাইবে বিএনপি।
জাতিসংঘে বাংলাদেশের সদস্যপ্রাপ্তির ৫০ বছর উপলক্ষে আগামী মঙ্গলবার নিউ ইয়র্কে একটি সংবর্ধনার আয়োজন করছে নিউ ইয়র্কে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশন। এতে প্রধান উপদেষ্টা যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে। এর পাশাপাশি নিউ ইয়র্কে অবস্থানের সময় প্রধান উপদেষ্টার সামাজিক ব্যবসা, জলবায়ু পরিবর্তন এবং বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র ব্যবসায়ী পরিষদের সভায় অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে।
এতদিন রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে জাতিসংঘে শেখ হাসিনার আগমন উপলক্ষে স্বাগত মিছিল-মিটিংসহ বিভিন্ন আয়োজনে ব্যস্ত থাকত আওয়ামী লীগ। আর কালো পতাকা প্রদর্শনসহ বিক্ষোভ মিছিলের মাধ্যমে শেখ হাসিনার আগমনের প্রতিবাদ জানাত বিএনপি। ভাষণের দিনে জাতিসংঘের সামনে পক্ষে-বিপক্ষে স্লোগানে নিজেদের শক্তির জানান দিত উভয় দল। তবে এবার সেই আবহ পাল্টে গেছে। ড. ইউনূসের আগমনের বিরুদ্ধে বিমানবন্দরসহ জাতিসংঘের সদর দপ্তরের সামনে বিক্ষোভসহ বিভিন্ন কর্মসূচির কথা বলছে আওয়ামী লীগ যুক্তরাষ্ট্র শাখা।
গত ১৩ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় নিউ ইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসে নবান্ন পার্টি হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, অসাংবিধানিকভাবে জোরপূর্বক অন্তর্বর্তীকালীন দখলদার সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে ড. ইউনূস দেশে নৈরাজ্য ও পৈশাচিক হত্যাকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন। দেশের জনগণ শান্তিতে বসবাস করতে পারছে না। অনির্বাচিত অবৈধ দখলদার সরকারের দমননীতি ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির কারণে দেশে আইন বিচার বলে কিছুই নেই। দেশ পরিচালনায় কোনো ধরনের দক্ষতা তার নেই। নিজেই বলেছেন ছাত্ররা তাকে নিয়োগ দিয়েছেন। তাই স্বাভাবিকভাবে জনগণের কাছে তার কোনো দায়বদ্ধতা নেই। প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে অংশগ্রহণ করার যেকোনো মানদণ্ডে আইনগত বৈধতা নেই।