কুমিল্লা থেকে বন্ধুর সঙ্গে চট্টগ্রাম এসেছিল ১৫ বছরের কিশোরী। পথ হারিয়ে বাড়ি ফিরে যাওয়ার দিশা খুঁজছিলেন তারা। তাতে কাল হলো। যাদের কাছে পথের সন্ধান করেছিল তারাই তাদের একটি বাড়িতে নিয়ে গিয়ে আটকে রাখেন। একপর্যায়ে ছেলে বন্ধুকে আটকে রেখে দুই দফা সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করা হয় ওই কিশোরীকে।
সোমবার রাতে নগরের খুলশী থানার দক্ষিণ খুলশী একটি পরিত্যক্ত বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। পরে শিক্ষার্থীদের একটি দল দুজনকে উদ্ধার করে। একই সঙ্গে আবুল কালাম নামে এক যুবককে ধরে পুলিশের হাতে সোপর্দ করা হয়েছে। ধর্ষণের জড়িতদের মধ্যে দুজনই ব্যাটারিচালিত রিকশাচালক।
সরকারি সিটি কলেজ চট্টগ্রামের স্নাতকোত্তর শ্রেণির শিক্ষার্থী পাপ্পু বলেন, ‘সোমবার রাত আড়াইটার দিকে কয়েকজনের কাছ থেকে বিষয়টি জানতে পেরে ঘটনাস্থলে যাই। তখন মেয়েটি অসুস্থ ছিল। আমরা তাকে উদ্ধার করি। ঘটনাস্থল থেকে একজনকে আটক করি। এই সময় বাকিরা পালিয়ে যান। ভোর পাঁচটার দিকে তাদের পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছি।’
খুলশী থানার ওসি মজিবুর রহমান বলেন, ‘কিশোরীর জবানবন্দি নিয়ে তার শারীরিক পরীক্ষার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে পাঠানো হয়েছে। বাকি আসামিদের ধরতে অভিযান চলছে।’
তরুণ ও কিশোরীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ধর্ষণের শিকার কিশোরীর মা মানসিকভাবে অসুস্থ। বাবা ছোট বেলায় মারা গেছেন। মোবাইলের মাধ্যমে তার সঙ্গে ওই তরুণের পরিচয় হয়। কুমিল্লার লালমাইয়ে তাদের বাড়ি। তার বন্ধু স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় পড়াশোনা করে। সোমবার বিকেল তিনটার দিকে কুমিল্লা থেকে তারা রওনা হয়। সন্ধ্যায় তারা পাহাড়তলী রেলস্টেশনে নামে। অপরিচিত জায়গা হওয়ায় রেললাইন ধরে হাঁটছিল তারা। রাত সাড়ে সাতটার দিকে ঝাউতলা রেলওয়ে স্টেশনে পৌঁছায়। সেখানে এক যুবকের সহায়তা চাইলে তিনি তাদের নির্জন স্থানে নিয়ে যান। সেখানে কয়েকজন মিলে ওই তরুণের মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে তাদের তাড়িয়ে দেন। তাতে ভয় পেয়ে যায় তারা। রেলস্টেশন থেকে বের হয়ে বাড়ি যাওয়ার পথ খুঁজছিল তারা। সহায়তা চায় এক ব্যাটারি রিকশা চালকের। তিনি তাদের নগরের বটতলী রেলওয়ে স্টেশনে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে তার গাড়িতে তুলে নেন। এরপর রাস্তায় ঘুরাতে থাকেন। একপর্যায়ে দক্ষিণ খুলশীর পরিত্যক্ত বাড়িটিতে তাদের নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে আরও তিনজন ছিল। রাতে আর ট্রেন নেই বলে রাতে তাদের সেখানে থাকতে বলা হয়। একপর্যায়ে তরুণকে এক রুমে আটকে রেখে চারজন মিলে ওই কিশোরীকে ধর্ষণ করে। ঘণ্টাখানেক পরে তাদের সেখান থেকে বের করে দেন। রাস্তায় এসে তারা আরেকটি ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকের মুখোমুখি হন। তাদের বিধ্বস্ত দশা দেখে ঘটনা জানতে চান তিনি। তাকে ঘটনা বলে তারা। তিনি বিচার করার নামে তাদের আবার সেখানে নিয়ে যান। আরেকজনকে সঙ্গে নিয়ে সেও তরুণকে আটকে রেখে কিশোরীকে ধর্ষণ করেন।