শ্রীলঙ্কার নতুন প্রেসিডেন্টকে অভিনন্দন

সম্পাদকীয়

শ্রীলঙ্কার দশম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিয়েছেন দেশটির মার্কসবাদী নেতা অনূঢ়া কুমারা দিশানায়েকে। ২৩ সেপ্টেম্বর (সোমবার) রাজধানী কলম্বোর প্রেসিডেন্ট সচিবালয়ে নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেন তিনি। প্রেসিডেন্টের শপথ গ্রহণের পর সামনের দিনগুলোতে শ্রীলঙ্কার জনগণকে স্থিতিশীল ও পরিবর্তিত অর্থনৈতিক কাঠামোতে নিয়ে আসার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন তিনি। আর পুনরুদ্ধারের পথে পরিচ্ছন্ন রাজনীতির মঞ্চায়নের ঘোষণা দেন সদ্য নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট। ২০২২ সালে জনরোষের মুখে ক্ষমতাচ্যুত হন সাবেক প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে। পালিয়ে যান দেশ থেকে। এরপর দেশটির পার্লামেন্টের ভোটে রনিল বিক্রমাসিংহে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেনে। এর দুই বছর পর জনগণের ভোটে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট পেল শ্রীলঙ্কা।

শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বো থেকে ১৭৭ কিলোমিটার দূরের অনুরাধাপুরা জেলার থামবুত্তেগামা গ্রামে জন্ম দিশানায়েকের। গ্রামীণ মধ্যবিত্ত এক পরিবারের সন্তান তিনি। কেলানিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞানে স্নাতক করেন দিশানায়েকে। ছাত্রজীবন থেকে জনতা বিমুক্তি পেরামুনার (জেভিপি) রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন নবনির্বাচিত এই প্রেসিডেন্ট। ২০০০ সালে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য হন। ২০০৪ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত দেশটির কৃষি, প্রাণিসম্পদ, ভূমি ও সেচ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেন।

২০১৪ সালে জেভিপির নেতৃত্ব গ্রহণ করেন দিশানায়েকে। তারপর থেকে তিনি দলের ভাবমূর্তিকে সহিংসতা থেকে আলাদা করায় ব্রতী হন। সে বছর মে মাসে বিবিসির সঙ্গে সাক্ষাৎকারে তিনি দলের অতীত সহিংস পথকে ভুল বলে উল্লেখ করেন। এতে তার ও তার দলের জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকে। চব্বিশের ২১ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ৫৬ লাখ ৩৪ হাজার ৯১৫ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হলেন অনূঢ়া, যা মোট ভোটের শতকরা ৪২ দশমিক ৩১ ভাগ।

শ্রীলঙ্কার রাজনীতির মাঠে তাঁর এই উত্থান সত্যিই বিস্ময়কর।আমরা নব-নির্বাচিত প্রেসিডেন্টের সফলতা, সু-স্বাস্থ ও দীর্ঘায়ু কামনা করি। তাঁর বলিষ্ঠ নেতৃতে শ্রীলঙ্কা দ্রুতই সবধরনের জটিলতা কাটিয়ে উঠবে এবং অর্থনৈতিক ও সামাজিক পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিতে সক্ষম হবে এটিই আমাদের প্রত্যাশা। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে দুর্নীতি ও কুসংস্কারের প্রত্যাখ্যান করে ভোটাধিকার প্রয়োগ করে দেশের সর্বোচ্চ আসনের জন্য নেতৃত্ব নির্বাচিত করায় শ্রীলঙ্কার জনগনকেও অভিনন্দন। বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার জনগন ও রাষ্ট্রের মাঝে নতুন নেতৃত্ব বন্ধুত্ব আরো সুদৃঢ় করবেন এটিই আমাদের বিশ্বাস।

শেয়ার করুন