মন্তব্য নয়, শুধুই বলে যাওয়া

আলমগীর এ. রউফ চৌধুরী

বর্তমান সরকার মানবাধিকার রক্ষা,.গণতান্ত্রিক পরিবেশ সৃষ্টির, তথা আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি নিয়ে, ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা এসেছে। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সুখ্যাত নোবেলজয়ী অধ্যাপক ইউনূস, এই সরকারের প্রধান, অধ্যাপক আসিফ নজরুল সাহেবের ন্যায় খ্যাতিমান আইনজ্ঞ ও হাসান আরিফ সাহেবের ন্যায় জুরিস্ট সরকারের উপদেষ্টা (মন্ত্রী), আদিলুর রহমান খানের ন্যায় মানবাধিকার কর্মী এই সরকারের (মন্ত্রী) উপদেষ্টা, এহেন পরিস্থিতিতে বর্তমানে সারাদেশে যে মামলা সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে, তা কতটা সরকারের আন্তর্জাতিক ও জাতীয় ইমেজের সাথে সামজস্যপূর্ণ তা বিবেচনা করে দেখতে অনুরোধ করব। আমরা মনে করি, এই মামলা সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসা উচিৎ। আদালত ও থানাগুলো নির্বিচারে এই সব মামলা গ্রহণ না করে, বিদ্বেষ দ্বারা (বিগত সরকারের প্রতি) পরিচালিত না হয়ে আইন দ্বারা যাতে পরিচালিত হয় সে মর্মে সরকারের নির্দেশনা থাকা প্রয়োজন। প্রয়োজন। একই সাথে দেশের সর্বোচচ আদালত সুপ্রীম কোর্টের তরফে এমন কোনো নির্দেশনা প্রদান সম্ভব কি না মহামান্য প্রধান বিচারপতি বিষয়টি ভেবে দেখতে পারেন।

না হয় সমগ্র বিষয়টাই তো বিগত কর্তৃত্ববাদী সরকারের কর্মকাণ্ডের মতোই হল।

২. দেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি-এর কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড যতটা জনমনে স্বস্তি যোগায়, ততটাই অস্বস্তির কারণ হয়ে উঠেছে তাদের মফস্বলের নেতাকর্মীদের দখলবাজি, মামলাবাজি, নিজেদের মধ্যকার দ্বন্দ সংঘাত। সারা দেশে যে অস্বস্তিকর পরিবেশ বর্তমানে বিরাজ করছে তার শতকরা ৭০/৮০ ভাগই তাদের কারণে। বিএনপি নেতৃবৃন্দকে প্রকৃতার্থেই যাতে বিষয়গুলো দেখেন সে মর্মে অনুরোধ জানাব।

আর যারা মনে করেন যে, এইভাবে দখলবাজি, মামলাবাজি আর মানুষ হত্যা করে (নিজেদের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব সংঘাতের কারণে বিএনপি এর অর্ধ-শতাধিক নেতা কর্মী নিহত হয়েছে বলে মিডিয়াসূত্রে জানা যায়) তারা পার পেয়ে যাবেন, তাদেরকে পদত্যাগী অভিয়ামী সরকারের কথা স্মরণ করিয়ে দিতে চাই।

৩. ঢাল নেই, তলোয়ার নেই নিধিরাম সদরদার গোলাম মোহাম্মদ (জিএম কাদের) সাহেবের স্মরণ শক্তি যে এতটা নীচু মানের তা জানা ছিল না। বিমান মন্ত্রী, বাণিজ্য মন্ত্রী ছিলেন শেখ হাসিনা সরকারের। দুর্নীতির জন্য, সিন্ডিকেট ব্যবসার জন্ম তদানের জন্য কুখ্যাত হয়েছেন। আওয়ামী লীগের সাথে সিট ভাগাভাগির নির্বাচনের নামে প্রহসন করে ধোকার দিয়েছেন মানুষকে। তাঁর সহকর্মী আনিস মাহমুদ, চুন্নু, ভাগিনা জামাই বাবলু এবং এক সময়কার মহাসচিব রাঙাও মন্ত্রী ছিলেন হাসিনা সরকারের। তার প্রয়াত ভাই এরশাদের সময় যেমন গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ন্ত্রিত বিবাচনা করেছেন; শেখ হাসিনার সময়ও আওয়ামী লীগারদের সিট কেড়ে নিয়ে নির্বাচন করছেন। আওয়ামী লীগের ১৬ বছরের ক্ষমতার ভাগীদার তার তথাকথিত দুলটিও। এক্ষনেও মামলাবাজির সংস্কৃতি থেকে বাঁচতে কান্নকাটি করে বেড়াচ্ছেন। জনগণের সাথে মিনিমাম সম্পর্কহীন এই তথাকথিত রাজনৈতিক দল ও তার নেতাগণ যতবেশি কথা কম বলবেন দ্রুতই মঙ্গল। এই সব দুর্বৃত্ত তথাকথিত রাজনীতিবিদকে আইনের আওতায় আনার জন্য সরকারের নিকট অনুরোধ জানাচ্ছি।

লেখক: রাষ্ট্র চিন্তক।
২৫/৯/2028

শেয়ার করুন