লেবাননে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের জন্য সতর্কবার্তা দিলো দূতাবাস

প্রবাস ডেস্ক

লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর সঙ্গে উত্তেজনার মধ্যে সোমবার দেশটি বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এই হামলায় ইতোমধ্যে নারী-শিশুসহ পাঁচ শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছে। আহত হয়েছেন কমপক্ষে এক হাজার ৮০০ জন।

এ পরিস্থিতিতে লেবাননে অবস্থানরত বাংলাদেশিদেরকে নিরাপদ স্থানে সরে গিয়ে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বনের আহ্বান জানিয়েছে সেখানকার বাংলাদেশ দূতাবাস।

লেবাননের স্থানীয় সময় সোমবার এক জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের উদ্দেশে এ বার্তা দিয়েছে দূতাবাস।

দূতাবাসের জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বছরখানেক ধরে চলমান হিজবুল্লাহ ও ইসরায়েলের মধ্যকার সংঘর্ষ ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। সম্প্রতি রাজধানী বৈরুতও ভয়াবহ আক্রমণের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম এবং বিশেষজ্ঞরা সমগ্র লেবানন, বিশেষত দক্ষিণ ও পূর্ব লেবানন এবং বৈরুত আরও ভয়াবহ আক্রমণের শিকার হতে পারে বলে প্রতিনিয়ত আশঙ্কা প্রকাশ করে যাচ্ছেন, যা আজ বিশেষভাবে পরিলক্ষিত হয়েছে।

এমতাবস্থায় সকল প্রবাসী বাংলাদেশিদের নিরাপদ অবস্থানে থেকে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করার জন্য বিশেষভাবে পরামর্শ প্রদান করা যাচ্ছে। যেসব এলাকায় ভয়াবহ আক্রমণের কারণে অবস্থান করা সম্ভব হচ্ছে না, সেসব স্থান থেকে বাংলাদেশি প্রবাসীদের ইতোমধ্যে দূতাবাস কর্তৃক প্রকাশিত বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে গমন করার জন্য অনুরোধ করা যাচ্ছে।

লেবাননে অবনতি হওয়া নিরাপত্তা পরিস্থিতি বিবেচনায় নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় দেশে ফেরত যেতে আগ্রহী প্রবাসীদের প্রয়োজনীয় পরামর্শের জন্য দূতাবাসের ফ্রন্ট ডেস্ক- ৭১২১৭১৩৯, হটলাইন নম্বর- ৭০৬৩৫২৭৮, হেল্পলাইন নম্বর- ৮১৭৪৪২০৭ এবং beirut.mission@mofa.gov.bd -এ যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ করেছে দূতাবাস।

প্রসঙ্গত, সোমবার লেবাননের বিভিন্ন অংশে ইসরায়েলের ভয়াবহ বিমান হামলায় ৫৫৮ জন নিহত হয়েছে। হামলায় আরও ১ হাজার ৮৩৫ জন আহত হয়েছে বলে জানিয়েছে লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

লেবাননের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ফিরাস আবিয়াদ বলেন, মোট নিহতের মধ্যে শিশু ৫০ জন এবং নারী ৯৪ জন। এও হামলায় আহতদের ৫৪টি হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

রাষ্ট্র পরিচালিত ন্যাশনাল নিউজ এজেন্সি (এনএনএ) জানিয়েছে, দক্ষিণ লেবাননের নাবাতিয়েহ, আনসার এবং জারিয়েহ শহরের মধ্যবর্তী অঞ্চল ও উপত্যকায় ব্যাপক বোমা বর্ষণ করেছে ইসরায়েলি যুদ্ধবিমানগুলো।

প্রসঙ্গত, গত ৭ অক্টোবর গাজায় যুদ্ধ শুরুর পরদিন থেকে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের প্রতি সংহতি জানিয়ে লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলীয় সীমান্ত থেকে ইসরায়েলি ভূখণ্ডে প্রায় প্রতিদিন রকেট-ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ছে ইরান সমর্থিত গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ। সীমান্ত থেকে পাল্টা হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীও (আইডিএফ)।

অন্যদিকে গত মাসে বৈরুতে হিজবুল্লাহর শীর্ষ কমান্ডার ফুয়াদ শুকরকে হত্যা করে ইসরায়েল। এরপর থেকেই ইসরায়েলে ওপর প্রতিশোধের ঘোষণা দিয়েছে ইরান-সমর্থিত শক্তিশালী সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ। ফলে সাম্প্রতিক সময়ে ইসরায়েল এবং হিজবুল্লাহর মধ্যে উত্তেজনা একটি বড় ধরনের সংঘাতে রুপ নিতে পারে বলে আশঙ্কা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো।

শেয়ার করুন