রাত পোহালেই শুরু হবে বাংলাদেশের মেয়েদের বিশ্ব জয়ের মিশন। আগামীকাল বৃহস্পতিবার নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচেই মাঠে নামবে বাংলাদেশ। প্রথম ম্যাচে নিগার সুলতানা জ্যোতির দলের প্রতিপক্ষ স্কটল্যান্ড।
জয় দিয়েই এবারের বিশ্বকাপ মিশন শুরু করতে চায় বাংলাদেশ। আজ বুধবার বিশ্বকাপে নিজেদের আশা-আকাঙ্ক্ষার কথা জানান অধিনায়ক জ্যোতি।
নারী বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলের জয়ের উদযাপন একটি বিরল দৃশ্য। এখন পর্যন্ত সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটের ৫টি বিশ্বকাপ খেলেছে বাংলাদেশের মেয়েরা। এসব আসরে মোট ২১ ম্যাচ খেলে মাত্র ২টি জয় পেয়েছে তারা। সেটিও আবার নিজেদের প্রথম আসর ২০১৪ সালে। ওই আসরের আয়োজক ছিল বাংলাদেশ।
২০১৪ সালের পর আর জয়ের দেখা পায়নি বাংলাদেশ। তবে এবার ভালো কিছু করে দেখাতে চায় জ্যোতিরা। আরব আমিরাতে হতে যাওয়া এই বিশ্বকাপকে স্মরণীয় করে রাখতে চায় বাংলাদেশের মেয়েরা।
জ্যোতি বলেন, ‘আমি বলবো যে পুরো দলের জন্য অনেক অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ এই জন্য যে, আমরা যতগুলো বিশ্বকাপ খেলেছি; ২০১৪ ছাড়া বলার মতো তেমন বলার কিছু করতে পারিনি। আমাদের জন্য এটা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ এজন্য যে, আমরা চাই যেন এই বিশ্বকাপটা কাউন্টেবল ও মেমোরেবল হয়।
২১ ম্যাচে মাত্র ২ জয়ের বিষয়ে বাংলাদেশ অধিনায়ক বলেন, ‘আমি বলবো যে খুবই হতাশাজনক। কিন্তু আমি বিশ্বাস করি এটা এই দুঃখ এবার ঘোচাতেই চাই। যেন আমাদের এই দুঃখ আর না থাকে। শুরুটা করতে চাই আগামীকালকের ম্যাচ দিয়ে।’
জ্যোতি আরও বলেন, ‘আমি বলবো যে আমাদের দল যেভাবে খেলে এসেছে, শেষ ওয়ার্ম আপ ম্যাচটা যেভাবে খেলেছে পাকিস্তানের বিপক্ষে। সবাইকে একটা ভালো শেপে দেখেছি। সবার ভেতর যে এনার্জি বা ম্যাচ জেতার যে ক্ষুদা বা বলবো যে প্রত্যেকটা খেলোয়াড় যে একজন আরেকজনকে যেভাবে ব্যাক করেছে মাঠে। ব্যাটিং ইউনিট অনেক ভালো করেছে, ভালো একটা স্কোর দাঁড় করিয়েছে। বোলাররা অনেক ভালো বেশি ব্যাক আপ দিয়েছে। সো ফার সবকিছু মিলিয়ে যদি চিন্তা করি দল একটা ভালো অবস্থায় আছে। আমরা জয়ের জন্যই খেলবো।’
বৃহস্পতিবার বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচের সঙ্গে অন্যরকম এক মাইলফলক স্পর্শ করবেন জ্যোতি। এদিন টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের ১০০তম ম্যাচ খেলবেন তিনি।
এ বিষয়ে জ্যোতি বলেন, ‘অন্যরকম অনুভূতি একশতম ম্যাচ খেলার। অনেক বেশি খুশি। অনেক সময় আসলে অবাকও লাগে। মনে হচ্ছিল এই হয়তো ক্যারিয়ার শুরু করেছি। দেখতে দেখতে প্রায় একশটা ম্যাচ হয়ে যাচ্ছে। ওদিক থেকে আমি অনেক আনন্দিত। সব থেকে খুশি হবো যদি ম্যাচে বাংলাদেশের জয়ে কোনো অবদান রাখতে পারি সেটা হবে সবচেয়ে বেশি মেমোরেবল।’
বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচ নিয়ে হেড কোচ হিশান তিলাকারত্মে বলেন, ‘হ্যাঁ। আমরা এখানে ২০ কোটি মানুষকে প্রতিনিধিত্ব করছি। সবাই এই টুর্নামেন্টের দিকে তাকিয়ে আছে। যদি আপনি দুটি প্রস্তুতি ম্যাচের দিকে দেখেন। প্রথমটা প্রত্যাশা মতো হয়নি। দ্বিতীয়টিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে মেয়েরা খুব ভালো খেলেছে। টুর্নামেন্টটা বাংলাদেশের জন্য ইতিবাচক।’
তিনি আরও বলেন, ‘মেয়েদের সঙ্গে কিছু আলাপ হয়েছে। তারা খুব ভালো আত্মবিশ্বাসী। তারা আগামীকালের ম্যাচটার দিকে তাকিয়ে আছে।’
বাংলাদেশ এবারের আসরে ভালো খেলবে আশা করে হিশান বলেন, ‘মোমেন্টামের শুরুটা প্রথম ম্যাচ থেকেই শুরু হয়। এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ আমরা সেরা খেলাটা খেলবো ও ইতিবাচক ফল আনবো। আমি নিশ্চিত মেয়েরা আত্মবিশ্বাসী ও ফোকাস টুর্নামেন্টে খেলার জন্য।’
‘এটা বড় উপলক্ষ্য জ্যোতি ও দলের জন্য। সবাই জ্যোতির একশতম ম্যাচের দিকে তাকিয়ে আছে। এটা আমাদের সবার জন্য বড় উপলক্ষ্য। যদি ইতিবাচক ফল পাই, এটা ২০ কোটি মানুষের জন্যও সেটিই হবে’- যোগ করেন হিশান।