আগামী শরিবার থেকে বর্তমান ক্ষমতাসীন উপদেষ্টা সরকার প্রধান ও তাঁর সহকর্মীগণ সংস্কারের উদ্দেশে প্রধান প্রধান রাজনৈতিক দলের সাথে তৃতীয় পর্যায়ের আলোচনা শুরু করতে যাচ্ছেন। উদ্যোগটি দরকারী ও সময়োপযোগী। রাষ্ট্র নিয়ে ভাবনা চিন্তা করা একজন মানুষ হিসেবে আমি এ উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। রাজনীতিতে, বিশেষতঃ সঙ্কটকালীন সময়ে রাজনৈতিক দলগুলির সম্মিলিত আলোচনার বিকল্প নেই। বিদায়ী সরকারের মূল ত্রুটিই ছিল এই যে, তাঁরা কারও সাথে কথা বলতে চাইতেন না।
আমরা মনে করি একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ও কার্যকর আলোচনা করতে চাইলে নির্বাচন কমিশন নিবন্ধিত ও আদালত কর্তৃক স্বীকৃত সকল রাজনৈতিক দলকেই পর্যায়ক্রমিক এই আলোচনায় অংশ গ্রহণের সুযোগ দেওয়া উচিৎ। জনগণের ভেতরে সমর্থন রয়েছ এমন কাউকে বাদ দিয়ে ফলপ্রসু ও কার্যকর আলোচনা সম্ভব নয়। হলেও অন্তর্ভুক্তিমূলক হবেনা।
অতইব, ১৪ দলকে বাদ দিয়ে যারা সংলাপের কথা ভাবছেন, তাদেরকে পুনর্ভাবনার অনুরোধ করব। বিপরীতে তাতে ফ্যাসিবাদী চিন্তারই বহিঃপ্রকাশ হবে।
২. সংবাদ মাধ্যম থেকে জানা যাচ্ছে যে, গুম সম্পর্কিত গঠিত কমিটি জানিয়েছে যে, অধিকাংশ গুমের ঘটনার জন্য ব্যার, ডিজিএফআই, ডিবি ও সিটিটিসি দায়ী। আমরা মনে করি, কমিটির বক্তব্যে সত্যতা আছে। অতএব, এই সমস্ত সংস্থার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাগণসহ দায়ী ব্যক্তিবর্গকে জনসম্মুখে তুলে ধরে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া উচিৎ।
৩. আমরা আশ্চর্যজনকভাবে দেখলাম যে, হাইকোর্ট বিভাগের একটি বেঞ্চ তার ঘোষিত একটি রায় প্রত্যাহার করে নিয়েছে। এটা বিচার ব্যবস্থার উপর একটি বড় ধরনের আঘাত বলে মনে হয়। রায়টি মনোমত করে নিতে হলে আপীল করে নেয়াই অধিকতর আইন সম্মত হতো। বিশেষ করে যেহেতু মামলাটির সাথে ড. ইউনূস সাহেব জড়িত।
এ ছাড়াও আজকাল দেখা যাচ্ছে যেঃ শাস্তি মওকুফ না করে স্থগিত রাখার একটা হিড়িক চলছে। এ সবই কি দেশের বিচার ব্যবস্থার সংস্কারের উদ্যোগের সাথে জড়িত?
৪. যে হারে হয়রানিমূলক ও ভিত্তিহীন এবং মামলা বাণিজ্যের মামলা হচ্ছে, আগামী কয়েক যুগে এসবের সমাধান হবে কি না যথেষ্ট সন্দেহ আছে। এই সব বস্তাপঁচা মামলায় গুলি করা পুলিশ, র্যাব অফিসারদেরকে লক্ষনীয় ভাবেই আসামিও করা হচ্ছে না। এমনকি স্বাক্ষীও করা হচ্ছে। ফৌজদারী আইনে এমনটা ঠিক হচ্ছে কি না?
সর্বশেষ, র্যাব জানাচ্ছে যে, ছাত্র আন্দোলনের সময়, হেলিকপ্টার থেকে কোনো গুলিবর্ষণ হয়নি। তা হলে বিষয়টা কি দাঁড়াল?
লেখক: রাষ্ট্র চিন্তক