ঘরের মাঠ থেকেই টেস্ট ক্রিকেটকে বিদায় জানানোর ইচ্ছে ছিল সাকিব আল হাসানের। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে হোম অফ ক্রিকেট খ্যাত শেরে বাংলায় ক্যারিয়ারের শেষ টেস্ট খেলতে চেয়েছিলেন টাইগার অলরাউন্ডার। কিন্তু বাংলাদেশে ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) ও অর্ন্তর্বতী সরকারের পক্ষ থেকে ‘রাজনীতিবিদ’ সাকিবের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা মেলেনি প্রথমে।
বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ ও অর্ন্তর্বতী সরকারের ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ‘ক্রিকেটার’ সাকিবের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেন। তবে ‘রাজনীতিবিদ’ সাকিব ও ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য হিসেবে নিরাপত্তা প্রদানের নিশ্চয়তা দিতে অপরাগতা প্রকাশ করেন।
ফারুক আহমেদ জানান, বিসিবির পক্ষে জাতীয় দলের একজন ক্রিকেটারকে নিরাপত্তা দেওয়া সম্ভব হলেও ব্যক্তি ও রাজনীতিবিদ সাকিবের সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা দেওয়া সম্ভব নয়। একই মত পোষণ করেন ক্রীড়া উপদেষ্টাও। এসব কথা শুনে নিশ্চুপ বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের সর্বকালের সেরা অলরাউন্ডার।
এদিকে প্রিয় ক্রিকেটারের শেষ ইচ্ছে পূরণ নিয়ে সংশয়ে কোটি ভক্ত। অনেকেই ধরে নিয়েছেন, সাকিব ভারতের বিপক্ষে কানপুরে ক্যারিয়ারের শেষ টেস্ট খেলে ফেলেছেন। ঘরের মাঠ শেরে বাংলায় আর কাঙ্ক্ষিত বিদায়ী টেস্ট খেলা হবে না টাইগার অলরাউন্ডারের।
কয়েকদিন এমন অনিশ্চয়তার পর পরিস্থিতি অন্য দিকে মোড় নিচ্ছে। নতুন করে সাকিবকে দেশের মাটিতে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা প্রদানের কথা বলেছেন ক্রীড়া উপদেষ্টা। বৃহস্পতিবার সংযুক্ত আরব আমিরাতে এসব কথা বলেন তিনি।
দুবাইয়ের শারজায় নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ দেখতে গিয়ে সাংবাদিকদের সাথে আলাপে ক্রীড়া উপদেষ্টা পরিষ্কার জানিয়ে দেন, তিনিও চান সাকিব দেশের মাটিতেই সর্বশেষ টেস্ট ম্যাচটি খেলুক।
আসিফ মাহমুদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘তিনি (সাকিব) এমন একজন খেলোয়াড়, দেশের জন্য যার অনেক অবদান রয়েছে। তিনি যেহেতু বাংলাদেশে নিজের শেষ টেস্ট খেলতে চান, আমিও ব্যক্তিগতভাবে চাই সেই সুযোগ তিনি পান।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের একজন খেলোয়াড়কে অবশ্যই আমরা সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দেবো। কারও বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ থাকলে, সেটা ভিন্ন বিষয়। সেই বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারি না। কারণ সেটা আইন মন্ত্রণালয়ের বিষয়। আমরা সাকিব আল হাসানের নিরাপত্তার কথা এরইমধ্যে বলেছি। সেটা আমরা নিশ্চিত করবো।’
বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তও কায়মনে চান সাকিব দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে হোম সিরিজ খেলুক। তিনি মনে করেন, সাকিব যদি ঘরের মাঠে টেস্ট খেলতে পারেন, সেটা হবে প্রতিটা ক্রিকেটারের জন্য বিরাট স্বস্তির।
শুক্রবার গোয়ালিয়রে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপে শান্ত বলেন, ‘সাকিব ভাই দীর্ঘদিন ধরে জাতীয় দলে খেলছেন। তিনি যদি না থাকেন, তার অনুপস্থিতিতে অনেক কিছু অ্যাডজাস্ট করতে হবে।
শান্ত বলেন, সাকিব ভাই না খেললে একাদশ সাজাতে বেশ সমস্যা হয়। কারণ, সাকিব ভাই খেললে ব্যাটিং ও বোলিং অপশনটা অটুট থাকে। দল সাজানো মোটেই কঠিন হয় না। কিন্তু তিনি না থাকলে ব্যাটিং ও বোলিং দুই ডিপার্টমেন্টেই খালি জায়গা পূরণ করা খুব জটিল।
এক্ষেত্রে মেহেদী হাসান মিরাজকে আস্থাভাজন মনে করেন শান্ত। টাইগার অধিনায়কের আশাবাদী কথা, আমরা মিরাজকে দলে রেখেছি। আশা করছি, মিরাজ তার নতুন ভূমিকার সঙ্গে তাল মিলিয়ে উঠতে পারবে।