সাদা পোশাকে ব্যর্থতার পর রঙিন পোশাকেও শুরুটা রাঙাতে পারলো না টাইগাররা। ভারতের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে বাজেভাবে হারের পর এবার টি-টোয়েন্টি সিরিজের শুরুটাও হলো হার দিয়ে। তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশকে ৫০ বল হাতে রেখে ৭ উইকেটের বড় হারের লজ্জা দিলো স্বাগতিকরা। এ জয়ে সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেছে সুরিয়াকুমার যাদবের দল।
এর আগে গোয়ালিয়রের সিন্ধিয়া ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে অতিথিদের ব্যাট করার আমন্ত্রণ জানায় ভারত। একের পর এক উইকেট হারিয়ে টালমাটাল নাজমুল শান্তর দল থাকে মাত্র ১২৭ রানে। সহজ লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরু থেকেই তাসকিন-মুস্তাফিজদের ওপর চড়াও হয় ভারতীয় ব্যাটাররা। জয়ের বন্দরে তারা পৌঁছে যায় ১১.৪ ওভারেই।
এদিন, ভারতীয় বোলারদের সামনে প্রথম থেকেই বিপদে পড়ে বাংলাদেশ। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে। অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত করেন ২৭ রান এবং মেহেদী হাসান মিরাজ অপরাজিত থাকেন ৩২ বলে ৩৫ রান করে। শেষ পর্যন্ত পুরো ২০ ওভারও শেষ করতে পারেনি টাইগাররা। ১৯.৫ ওভারে ১২৭ রানে অলআউট হয়ে যায়।
ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই উইকেট হারাতে থাকে বাংলাদেশ দল। মাত্র ১৪ রানে দুই ওপেনারকে হারিয়ে ফেলে টাইগাররা। ভারতীয় পেসার আর্শদিপ সিংকে সামলাতে শুরু থেকেই হিমশিম খেতে হচ্ছিলো। প্রথম বল মোকাবিলা করে বাউন্ডারি মারার পরের বলেও বড় শট খেলতে চেয়েছিলেন তিনি।
কিন্তু বল উঠে যায় সোজা উপরে রিঙ্কু সিং উইকেটের পাশে দাঁড়িয়েই সেই বলটি তালুবন্দী করে নেন। ৪ রান করে আউট হয়ে যান লিটন দাস।
পারভেজ হোসেন ইমন আশদিপের ভেতরে ঢুকতে যাওয়া বলটি বুঝতেই পারেননি। ক্রস ব্যাটে খেলেন। বল শেষ মুহূর্তে ব্যাটের নিচের কানায় লেগে চলে যায় স্ট্যাম্পে। বোল্ড হয়ে যান তিনি ৮ রানে।
এরপর নাজমুল হোসেন শান্ত এবং তাওহিদ হৃদয় মিলে চেষ্টা করেন শুরুর বিপর্যয় সামাল দেয়ার। পাওয়ার প্লের ৬ ওভার তারা কাটিয়ে দেন। বাংলাদেশ দলও ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছিলো। ২৬ রানের জুটি গড়ার পর ভেঙে গেলো এই জুটিও। ১৮ বলে ১২ রান করে আউট হন তাওহিদ হৃদয়।
মাহমুদউল্লাহ ছক্কা মারতে গিয়ে আউট হয়ে গেলেন বাউন্ডারি লাইনে ক্যাচ দিয়ে। মায়াঙ্ক যাদবের বলে তার ক্যাচটি ধরেন ওয়াশিংটন সুন্দর। মাত্র ১ রান করেন রিয়াদ।
জাকের আলি অনিক ৬ বলে করেন ৮ রান। একটি ছক্কা মেরে আউট হয়ে যান বরুন চক্রবর্তির বলে বোল্ড হয়ে। ২৫ বলে ২৭ রান করে ওয়াশিংটন সুন্দরের হাতে রিটার্ন ক্যাচ দিয় ফিরে যান নাজমুল হোসেন শান্ত।
রিশাদ হোসেন এবং মেহেদী হাসান মিরাজ ভালো একটা জুটি গড়ার চেষ্টা করে ব্যার্থ হন। এক ছক্কা ও এক বাউন্ডারিতে ১১ রান করে আউট হয়ে যান রিশাদ হোসেন। ১২ রান করেন তাসকিন আহমেদ। ১৩ বল খেলেন তিনি। ভুল বোঝাবুঝিতে রানআউট হন তাসকিন। শরিফুল বোল্ড হলেন শূন্য রানে। মোস্তাফিজ বোল্ড হওয়ার পরই শেষ হয় বাংলাদেশের ইনিংস।
ভারতীয় বোলার আর্শদিপ সিং ও বরুন চক্রবর্তী নেন ৩টি করে উইকেট। ১টি করে উইকেট নেন হার্দিক পান্ডিয়া, মায়াঙ্ক যাদব ও ওয়াশিংটন সুন্দর।
১২৮ রানের লক্ষ্য তাড়ায় দলীয় ২৫ রানে প্রথম হোঁচট খায় ভারত। তৌহিদ হৃদয়ের দুর্দান্ত এক থ্রোতে রান আউটে কাটা পড়েন ৭ বলে ১৬ রান করা ওপেনার অভিষেক শর্মা। এরপর অধিনায়ক সুরিয়াকুমার ও সঞ্জু স্যামসন মিলে গড়েন ৪০ রানের জুটি। দলীয় ৬৫ রানে মুস্তাফিজের বলে জাকের আলির হাতে তালুবন্দি হন ১৪ বলে ২৯ রান করা সুরিয়া। দলীয় ৮০ রানে মিরাজের বলে আউট হন ১৯ বলে ২৯ রান রান সঞ্জু। এরপর নীতিশ কুমার (১৫ বলে ১৬) ও হার্ডিক পান্ডিয়ার (১৬ বলে ৩৯ রান) ব্যাটে লক্ষ্যে পৌঁছে যান স্বাগতিকরা।