সাবেক মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী এবং এম.এ মান্নানের জামিন হয়েছে নিম্ন আদালত থেকে। তাঁরা এখন মুক্ত। মনে হয় বিচারকবৃন্দ স্বাধীনভাবে ও আইনানুগভাবে কাজ করেছেন। তাঁদের উভয়কেই অন্যায়ভাবে আসামি হিসেবে দেখানো হয়েছিল হত্যা মামলায়। কোনো রকমের যাচাই-বাছাই ছাড়াই পুলিশ তাঁদেরকে গ্রেপ্তার করেছিল। আমরা এই দুইজন সাবেক আইন প্রণেতা ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের কারামুক্তিতে স্বস্থিরতা বোধ করছি ও মুক্তিকে স্বাগত: জানবচ্ছি।
২. গত ৭ অক্টোবর ২০২৪ দৈনিক দ্য ডেইলি স্টার পত্রিকায সারাদেশে মামলা দায়ের উৎসবের কাহিনী তুলে ধরা হয়েছে। ঢাকার তিনটি মামলার বিবরণ দিয়ে জানানো হয়েছে যে, বাদী অনেক (কাউকেই) বিবাদীকেই চিনেন না। বিএনপি এর স্থানীয় নেতাদের দ্বারা উদ্বুদ্ধ হয়ে তাদের সাপ্লাইকৃত তালিকা ধরে আসামি করা হয়েছে। স্থানীয় বিএনপি নেতাগণ এ তালিকা পেয়েছেন উর্দ্ধতন বিএনপি নেতাদের কাছ থেকে। এটাই বিপদজনক। ঘটনার ধারে কাছে নেই এমন ব্যক্তিবর্গকে আসামি করা হচ্ছে আসন্ন নির্বাচনকে মাথায় রেখে। এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। আমরা পুনরায় বিষয়টির দিকে নজর দিতে অনুরোধ করব যথোপযুক্ত কর্তৃপক্ষকে (উর্দ্ধতন পুলিশ কর্তৃপক্ষসহ)। কেননা থানাগুলো স্থানীয় রাজনৈতিক দুরভিসন্ধিমূলক ব্যক্তিবর্গের চাপে কাজ করছেন বলে মনে করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। এমনটা না হলে অনেক/বহু রাজনৈতিক নেতাকর্মী স্বাভাবিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে পারবেন (পারিবারিক ও অর্থনৈতিক সামাজিক কর্মকাণ্ড পরিচালনাও করতে পারছেন না)।
৩. মমতাজ বেগম, তারানা হালিম প্রমুখের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলা তদন্ত করে দেখার জন্য পুলিশের সংশ্লিষ্ট বিভাগকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে সম্পূর্ণ কাল্পনিক ও মিথ্যা মামলায় শিউলি আজাদকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং জামিন না দিয়ে ৮ দিনের রিমান্ড দেওয়া হয়েছে। এটি খুবই দুঃখজনক ও নিন্দনীয়। আমরা মনে করি নারীদেরকে হত্যা মামলায় জড়িত করে মামলা করা হলে তা যাচাই বাছাই করার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। শিউলি আজাদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলাটি ২৮/৩/২০২১ সনে সংঘটিত ঘটনার, যার সাথে রাজনৈতিক নয়, প্রশাসনিক, বিশেষ করে পুলিশি কার্যক্রম জড়িত।
৪. ম্যাজিস্ট্রেট তাপসী তাবাসসুম ঊর্মির বিরুদ্ধে এক শ্রেণির অসহিষ্ণু মানুষকে সুযোগ এনে দিয়েছে। পরমত সহিষ্ণতার কথা বলে ক্ষমতার আসা সরকার এ ব্যাপারে যথাযথ সহিষ্ণুতার যাতে পরিচয় দেন, সে মতে আমরা বিনীত আবেদন রাখব। আশা করি সরকারের শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষেরা ধৈর্য ও সহিষ্ণুতার পরিচয় দেবেন। পরমত/ভিন্নমত মানবাধিকার ও গণতন্ত্রের অবিচ্ছেদ্য অংশ। যারা পরমত/ভিন্নমত সহ্য করতে পারেন না, তারা ফ্যাসীবাদী দর্শনে বিশ্বাসী। বিষয়টি মনে রাখলে ভাল হয়।
লেখক: রাষ্ট্র চিন্তক ও ইসলামি চিন্তাবিদ