দ্রব্যমূল্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে কার্যকর উদ্যোগ নিন

সম্পাদকীয়

রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব নেয়ার পর দুই মাস অতিক্রম হলেও নিত্যপণ্যের বাজার কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার। নানান ছলছুতোয় হুহু করে বাড়ছে শাকসবজিসহ নিত্যপণ্যের দাম। অভিযোগ উঠেছে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পরে একটি অসৎ অতি মুনাফালোভী নব্য ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট বাজার থেকে প্রতিদিন শত শত কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। অথচ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল ব্যক্তিবর্গের পক্ষ থেকে এদের বিরুদ্ধে দৃশ্যমান কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ এখন পর্যন্ত আমরা দেখতে পাইনি। যেটা অত্যন্ত হতাশাজনক। মত ও পথসহ প্রতিটি গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে উঠে আসছে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে জনদুর্ভোগের চিত্র। ‘মাছ, মাংস লাগবে না, সবজি খাওয়ার স্বাধীনতা চাই’-বলেও ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিচ্ছেন নেটিজেনরা। এসব থেকে বুঝা যাচ্ছে পরিস্থিতি কতটা দুর্বিষহ হচ্ছে।

নিয়ন্ত্রণহীন বাজারে ইতোমধ্যে শাকসবজিসহ প্রতিটি পণ্যই নিম্নবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষের কাছে বিলাসী পণ্যে পরিণত হয়েছে! কোনো সবজিই ১০০ টাকা কেজির নিচে পাওয়া যাচ্ছে না। একই অবস্থা চাল, ডাল, মাছ, মাংস ও ডিমের বাজারে। অথচ কী কারণে হঠাৎ এই উচ্চমূল্য মন্ত্রণালয়ের কাছে তার কোনো সঠিক ব্যাখ্যা নেই। এ অবস্থা কতদিন চলবে, তা ভেবে মানুষের উদ্বেগের শেষ নেই। এমতাবস্থায় সরকারকে অবিলম্বে এসব দিকে জোরালো দৃষ্টি দেওয়া উচিত। কেননা খাদ্য তালিকা থেকে পুষ্টিকর খাবার বাদ দিলে মানুষ পুষ্টিহীনতার শিকার হবে। এর প্রভাব পড়বে জনশক্তির ওপর। অপুষ্টির কারণে যে মানের জনশক্তি তৈরি হবে, তা দিয়ে নতুন শিল্পবিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা কতটা সম্ভব হবে? সে বিষয়টি গভীরভাবে ভেবে দেখা প্রয়োজন।

আমরা লক্ষ করছি, বাজারে পর্যাপ্ত পণ্যের সরবরাহ থাকা সত্ত্বেও পণ্যের দাম বাড়ছে। মূলতঃ ত্রুটিপূর্ণ বাজার ব্যবস্থাপনার কারণেই এটা হচ্ছে । এমতাবস্থায় আমরা মনে করি, নিত্যপণ্যের বাজারে চলমান অরাজকতা দূর করতে হলে প্রথমেই ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট ভাঙার উদ্যোগ নিতে হবে। বাজার সন্ত্রাসীদের কাছে জিম্মি হলে চলবে না। এজন্য ভ্রাম্যমাণ আদালতের সংখ্যা বাড়াতে হবে। এই দায়িত্বটি বাণিজ্য উপদেষ্টাকেই নিতে হবে।

শেয়ার করুন