বাংলাদেশে ৪ কোটি ১৭ লাখ মানুষ চরম দারিদ্রসীমায় বাস করছে বলে জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৬ দশমিক ৫ শতাংশের অবস্থা গুরুতর বলেও জানিয়েছে ইউএনডিপি।
বৃহস্পতিবার ‘বৈশ্বিক বহুমাত্রিক দারিদ্র্য সূচক-২০২৪: সংঘাতের মধ্যে দারিদ্র্য’ শিরোনামের এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।
বিশ্বের ১১২টি দেশের ৬৩০ কোটি মানুষের ওপর গবেষণা করে এ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। এতে ২০২২-২৩ বছর পর্যন্ত এক দশকের বেশি সময়ের তথ্য বিশ্লেষণ করা হয়। পর্যাপ্ত আবাসন, পয়োনিষ্কাশন, বিদ্যুৎ, ভোজ্যতেল ও পুষ্টির মতো অতি প্রয়োজনীয় সেবার ঘাটতি কেমন রয়েছে, তা বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে গবেষণায়। এছাড়া শিশুরা কী হারে স্কুলে উপস্থিত হচ্ছে, তা-ও এখানে বিবেচনায় আনা হয়েছে।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা কেন্দ্র অক্সফোর্ড পোভার্টি অ্যান্ড হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট ইনিশিয়েটিভের সঙ্গে যৌথভাবে প্রকাশিত সূচক অনুযায়ী, বিশ্বের ১১০ কোটি মানুষ চরম দারিদ্র্যসীমার মধ্যে বসবাস করে। এসব মানুষের প্রায় অর্ধেকই সংঘাতকবলিত দেশের বাসিন্দা। চরম দারিদ্র্যসীমায় থাকা জনগোষ্ঠীর ৮৩ শতাংশের বেশি বসবাস করেন আফ্রিকা ও দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে। দক্ষিণ এশিয়ায় ২৭ কোটি ২০ লাখ দরিদ্র মানুষ এমন পরিবারে আছেন, যে পরিবারের অন্তত একজন অপুষ্টিতে ভুগছেন।
সূচকের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে দারিদ্র্যের ক্ষেত্রে জীবনযাত্রার মান (৪৫ দশমিক ১ শতাংশ) সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখছে। এরপর রয়েছে শিক্ষা (৩৭ দশমিক ৬ শতাংশ) ও স্বাস্থ্য (১৭ দশমিক ৩ শতাংশ)।
প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, বিশ্বে সবচেয়ে বেশিসংখ্যক দরিদ্র মানুষের বসবাস ভারতে। ১৪০ কোটি জনসংখ্যার দেশটিতে চরম দারিদ্র্যের মধ্যে বাস করেন ২৩ কোটি ৪০ লাখ। ভারতের পরবর্তী অবস্থানে রয়েছে পাকিস্তান (৯ কোটি ৩০ লাখ), ইথিওপিয়া (৮ কোটি ৬০ লাখ), নাইজেরিয়া (৭ কোটি ৪০ লাখ) ও কঙ্গো প্রজাতন্ত্র (৬ কোটি ৬০ লাখ)। বিশ্বে চরম দারিদ্র্যসীমার মধ্যে থাকা জনগোষ্ঠীর প্রায় অর্ধেকই এই পাঁচ দেশের বাসিন্দা।
ইউএনডিপি সূচক বলছে, দারিদ্র্যের সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী শিশুরা। চরম দারিদ্র্যে থাকা মানুষের মধ্যে প্রায় ৫৮ কোটি ৪০ লাখের বয়স ১৮ বছরের কম। চরম দারিদ্র্যের মধ্যে থাকা ৪৫ কোটি ৫০ লাখ মানুষ সংঘাত-সহিংসতার মধ্যে বসবাস করছেন।