পাকিস্তানে সংবিধানের ২৬তম সংশোধনী বিল পাস হয়েছে। এই বিলে বিচার বিভাগের ক্ষমতা সীমিত করে প্রধানমন্ত্রী এবং পার্লামেন্টের ক্ষমতা বাড়ানো হয়েছে। এখন থেকে প্রধানমন্ত্রী সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি নিয়োগ দিতে পারবেন।
গতকাল সোমবার বিলটিতে প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারি অনুমোদন দিয়েছেন। এর আগে বিলটিতে স্বাক্ষর করেন প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। এ বিলটি পাস হওয়া নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই দেশটিতে বিতর্ক চলছিল।
রোববার পাকিস্তানের পার্লামেন্টে সাংবিধানিক সংশোধনীর একটি প্যাকেজ পাস হয়। এর মাধ্যমে দেশটির আদালতগুলোর সংসদীয় বিষয়ে রায় দেওয়ার ক্ষমতা সীমিত হলো।
সংশোধনীতে বলা হয়েছে, এখন থেকে পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতিকে সংসদীয় কমিটির মাধ্যমে নিয়োগ দেওয়া হবে এবং তার মেয়াদ তিন বছর নির্ধারিত থাকবে। এছাড়া নতুন একটি সাংবিধানিক বেঞ্চ গঠিত হবে। রোববার মধ্যরাতে শুরু হওয়া অধিবেশনে উত্থাপন করা হয় বহুল আলোচিত বিলটি।
স্থানীয় সময় রাত ১১টা ৩৬ মিনিটে শুরু হওয়া অধিবেশনে তুমুল তর্ক-বিতর্কের পর অবশেষে গতকাল সোমবার ভোর ৫টায় পাস হয় ২৬তম সংবিধান সংশোধনী বিল।
পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ বলেন, এই সংশোধনীর লক্ষ্য হলো এমন বিচারিক রায়কে বাধা দেওয়া, যা সংসদীয় কর্মকাণ্ডে হস্তক্ষেপ করে। সবাই একমত যে, পার্লামেন্টের প্রাধান্য নিয়ে কোনো আপস করা হবে না। বিলটি পাস হতে পার্লামেন্টে ২২৪ ভোট প্রয়োজন ছিল। শেষ পর্যন্ত ২২৫ ভোটে সেটি পাস হয়। সংবিধান সংশোধনের পক্ষে ভোট দেয় শাহবাজ শরিফের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) এবং তাদের মিত্র পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি)।
বিরোধী নেতা ইমরান খানের মিত্র হিসেবে পরিচিত একটি ধর্মীয় দলের সমর্থনও পায় সরকার। তবে ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) সংশোধনীর বিরোধিতা করে।
পিটিআই নেতা ও পার্লামেন্টে বিরোধী দলের প্রধান ওমর আইয়ুব খান এই সংশোধনীকে ‘স্বাধীন বিচার ব্যবস্থার শ্বাসরোধ’ হিসেবে বর্ণনা করে বলেন, এটি পাকিস্তানের জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন নয়। এই সংশোধনীটি এমন একসময়ে এসেছে যখন পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতি কাজী ফায়েজ ইসার অবসর নিতে যাচ্ছেন। পুরোনো নিয়ম অনুযায়ী, তার জায়গায় বসতেন সবচেয়ে জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মনসুর আলি শাহ, যিনি ইমরান খানের পক্ষে বেশ কয়েকটি রায় দিয়েছেন বলে মনে করা হয়।
সূত্র—ডন ও জিও নিউজ