রাজশাহীর সারদায় বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমি থেকে ২৫২ জন প্রশিক্ষণরত উপ-পরিদর্শককে (এসআই) অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে তাঁদেরকে অব্যাহতি দেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো.জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। মত ও পথ-এর অনুসন্ধানে দেখা যায় অব্যাহতি পাওয়া ২৫২ ক্যাডেট এসআই’র মধ্যে ৯৭ জনই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সদস্য।
তারা হলেন- ১.সুশান্ত রায় (খ্রিস্টান, পি.এ-৪০১২৪), ২.রিপন মন্ডল (পি.এ-৪০১২৭),৩.দিপংকর চ্যাটার্জী (পি.এ-৪০১২৮), ৪. প্রশান্ত কুসার দে (পি.এ-৪০১৩৮), ৫.দীপ্ত প্রসাদ মিত্র (পি.এ-৪০১৫১), ৬.তন্ময় মল্ডল (পি.এ-৪০১৭৭), ৭. পার্থ ভট্টাচার্য্য (পি.এ-৪০১৮৭), ৮.শান্ত দস্তিদার (পি.এ-৪০২০৫), ৯.শিমুল মণ্ডল (পি.এ-৪০২১৪) ১০. সুব্রত বাইন(পি.এ-৪০২২০), ১১.সৌরভ সরকার (পি.এ-৪০২২২), ১২.এস এম জনার্দন রায় (পি.এ-৪০২৩১), ১৩. সুমন কুমার মণ্ডল (পি.এ৪০২৪৪), ১৪.অভিজিৎ কুমার শীল (পি.এ-৪০২৪৮), ১৫.তপন রায় (পি.এ-৪০২৫৩), ১৬.সম্রাট বর (পি.এ-৪০২৭৩) ১৭. রনি রায় (পি.এ৪০২৯০), ১৮. বিপ্র ভট্টাচার্য (পি.এ-৪০২৯১), ১৯. সৌরভ কর্মকার (পি.এ-৪০৩০৫), ২০.পরেশ চন্দ্র রায় (পি.এ-৪০৩০৯) ২১.অমৃত ঘোষ (পি.এ-৪০৩১৪) ২২.দেবাশীষ (পি.এ-৪০৩১৬) ২৩.অনিমেষ (পি.এ-৪০৩২৩), ২৪. অনির্বান সরকার(পি.এ-৪০৩২৭) ২৫.তন্ময় ধর (পি.এ-৪০৩৩১), ২৬. রঞ্জন গাইন(পি.এ-৪০৩৩৬), ২৭.শুভ চক্রবর্তী(পি.এ-৪০৩৪৭) ২৮. তনয় ভট্টাচার্য (পি.এ-৪৯৩৫২) ২৯.পিপন রায় (পি.এ-৪৯৩৬২), ৩০. হরিশ্চন্দ্র রায় (পি.এ-৪০৩৬৮)
৩১.অমিত ভৌমিক (পি.এ-৪০৪০৯), ৩২.উজ্জ্বল কুমার (পি.এ-৪০৪১১), ৩৩. কৃষ্ণ কৃর্তনীয়া (পি.এ-৪০৪২৭), ৩৪.পলাশ ঘোষ (পি.এ-৪০৪২৮), ৩৫.মানিক বিশ্বাস (পি.এ-৪০৪৩৮),৩৬. কল্যান সরকার(পি.এ-৪০৪৪০), ৩৭.তাপস দত্ত (পি.এ-৪০৪৫০), ৩৮. নয়ন চন্দ্র দাস(পি.এ-৪০৪৭০),৩৯.চঞ্জল কুমার (পি.এ-৪০৪৭৯), ৪০. সনজিত কুমার মন্ডল(পি.এ-৪০৪৮০), ৪১.সাগর দেবনাথ (পি.এ-৪০৪৮১), ৪২.অভিজিৎ রায়(পি.এ-৪০৫০৬), ৪৩. উত্তম দাশ(পি.এ-৪০৫৬৬), ৪৪.প্রসেনজিৎ শিল (পি.এ-৪০৫৯৪), ৪৫. কাকন দে (পি.এ-৪০৬১১), ৪৬. কল্যাণ চক্রবর্তী (পি.এ-৪০৬২৯), ৪৭.অমিতাভ বালা (পি.এ-৪০৬৪৯), ৪৮. অনিক (পি.এ-৪০৬৭১) , ৪৯. অমিত বিশ্বাস (পি.এ-৪০৬৮৪), ৫০. জয় বিশ্বাংগী (পি.এ-৪০৬৮৮), ৫১. সুকান্ত বিশ্বাস (পি.এ-৪০৭০২), ৫২.আশিষ দেবনাথ (পি.এ-৪০৭০৮), ৫৩.সৌরভ কর (পি.এ-৪০৭০৯), ৫৪.প্রসেনজিৎ দাস (পি.এ-৪০৭১২), ৫৫. মিন্টু সূত্রধর (পি.এ-৪০৭১৩),৫৬. অমিত কুমার মন্ডল (পি.এ-৪০৭৪৩), ৫৭. দীপংকর সরদার (পি.এ-৪০৭৪৪), ৫৮. সৌরভ ঘোষ (পি.এ-৪০৭৪৭), ৫৯. অয়ন বিশ্বাস (পি.এ ৪০৭৫২), ৬০.নয়ন রায় (পি.এ ৪০৭৫৯), ৬১.সরজ ঘোষ (পি.এ ৪০৭৭৬), ৬২.সুবীর রায় (পি.এ ৪০৭৯৪), ৬৩. রুবেল চন্দ্র দাস (পি.এ-৪০৮১৬), ৬৪. রুপক কৈরী(পি.এ ৪০৮১৭), ৬৫. প্রভাকরন রায়(পি.এ৪০৮২৯), ৬৬. অসীত (পি.এ ৪০৮৩৩)
৬৭. সুদীপ্ত (পি.এ ৪০৮৩৯), ৬৮. শুভংকর (পি.এ ৪০৮৪১), ৬৯. অনুপম (পি.এ ৪০৮৪৬),৭০. জিকো (পি.এ ৪০৮৪৭),৭১. সন্তোষ (পি.এ ৪০৮৭৫),৭২. মিঠুন (পি.এ ৪০৮৮১),৭৩. নিশিকান্ত (পি.এ ৪০৮৮৪), ৭৪. প্রিয়াংকা (পি.এ ৪০৯১০), ৭৫. মিতু মন্ডল (পি.এ ৪০৯১৭), ৭৬. শুভ্রা পাল (পি.এ ৪০৯২৪), ৭৭. শম্পা রাজবংশী (পি.এ৪০৯২৯), ৭৮.সুস্মিতা দাশ (পি.এ ৪০৯৩০), ৭৯. সুমা রায় (পি.এ ৪০৯৩২), ৮০. সুপ্রিয়া সরকার সুপা (পি.এ ৪০৯৩৩), ৮১. অপরাজিতা মজুমদার (পি.এ ৪০৯৩৫), ৮২. চম্পা রানী দাস (পি.এ ৪০৯৩৭), ৮৩. দিপীকা সিনহা (পি.এ ৪০৯৩৮), ৮৪. দিপীকা চক্রবর্তী (পি.এ ৪০৯৪০), ৮৫. অনামিকা সাহা(পি.এ ৪০৯৪১), ৮৬. পপি রায় (পি.এ ৪০৯৪৪), ৮৭. মিতু (পি.এ ৪০৯৪৫), ৮৮. সিমু ঘোষ (পি.এ ৪০৯৪৬, ৮৯. সোমা সিংহ (পি.এ ৪০৯৫৪ ), ৯০. পিয়াল বড়ুয়া (বৌদ্ধ, পি.এ ৪০৪৬২), ৯১. রুপেল বড়ুয়া (বৌদ্ধ, পি.এ ৪০৪৬৮), ৯২. মিল্টন (খ্রিস্টান, পি.এ ৪০৩৭০), ৯৩. উত্তম কুমার দাশ(পি.এ ৪০৫৬৬) এবং ৯৪. শৈলেন রায় (পি.এ ৪০৩৭৪), ৯৫. শৈলেন চন্দ্র রায় (পি.এ ৪০৩৭৪) ৯৬. সৌম্য কান্তি ঘোষ (পি.এ ৪৯৩৮৯) ৯৭. পলাশ হালদার (পি.এ ৪০৩৯৪)
উল্লেখ্য, সোমবার (২১ অক্টোবর) স্থানীয় থানাগুলোতে ডেকে অব্যাহতি পাওয়া ক্যাডেট এসআইদের হাতে একটি চিঠি তুলে দেওয়া হয়। সেখানে বলা হয়, ‘বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমি প্যারেড মাঠে ১ অক্টোবর সকাল ৭টা ২৫ মিনিট থেকে ৪০তম বিসিএস (পুলিশ) প্রবেশনারস ব্যাচ–২০২৩–এর সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুশীলন প্যারেড কার্যক্রম চলমান ছিল। এ সময়ে বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমি সারদা, রাজশাহী কর্তৃক পূর্বনির্ধারিত মেনু অনুযায়ী প্যারেডে অংশগ্রহণকারী সব প্রশিক্ষণার্থীর প্যারেড বিরতিতে সকালের নাশতা পরিবেশন করা হয়। কিন্তু আপনি উক্ত সরবরাহকৃত নাশতা না খেয়ে হইচই করে মাঠের মধ্যে চরম বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি করেন। আপনি অন্যান্য প্রশিক্ষণরত ক্যাডেট এসআইদের পরস্পর সংগঠিত করে একাডেমি কর্তৃপক্ষকে হেয় প্রতিপন্ন করে চরম বিশৃঙ্খলা ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করতে থাকেন। এ ছাড়া আপনি অন্যদের সঙ্গে হইচই করতে করতে নিজের খেয়াল-খুশিমতো প্রশিক্ষণ মাঠ থেকে বের হয়ে নিজ ব্যারাকে চলে যান। একজন প্রশিক্ষণরত ক্যাডেট এসআই হিসেবে এরূপ আচরণ এবং বিনা অনুমতিতে প্যারেড মাঠ থেকে বের হয়ে নিজ ব্যারাকে চলে যাওয়া সম্পূর্ণভাবে শৃঙ্খলা-পরিপন্থী। আপনার এরূপ আচরণ মাঠের সার্বিক প্রশিক্ষণ কার্যক্রমকে চরমভাবে ব্যহত করেছে এবং অন্য প্রশিক্ষণার্থীদের শৃঙ্খলাভঙ্গে উৎসাহিত করেছে মর্মে আপনার বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাভঙ্গের কারণে পুলিশ পরিদর্শক মহসিন আলী (বিপি- ৬৯/৮৭০০১৫২০) বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমির অধ্যক্ষ (অতিরিক্ত আইজিপি) বরাবর লিখিত প্রতিবেদন দাখিল করেছেন।’
ওই চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, ‘ওই অভিযোগের কারণে একাডেমির অধ্যক্ষের পক্ষে পুলিশ সুপার (অ্যাডমিন অ্যান্ড লজিস্টিকস) তিন দিনের মধ্যে কৈফিয়তের জবাব দাখিল করার জন্য নির্দেশনা দেন। আপনি নির্ধারিত তিন দিন সময়ের মধ্যে কৈফিয়তের জবাব দাখিল করেন। আপনার দাখিলকৃত কৈফিয়তের জবাব পর্যালোচনান্তে সন্তোষজনক নয় মর্মে প্রতীয়মান হয়। আপনার উপরোক্ত শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ড বাংলাদেশ পুলিশের গুরুত্বপূর্ণ ও দায়িত্বশীল পদ হিসেবে বিবেচিত সাব–ইন্সপেক্টর পদে কাজ করার পথে বড় ধরনের অন্তরায় ও অযোগ্যতার শামিল।’
এর আগে গত দুই সপ্তাহ আগে এই ২৫২ ক্যাডেট এসআইকে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে শোকজ করা হয়েছিল। গত ৮ অক্টোবর একাডেমির অধ্যক্ষের পক্ষে পুলিশ সুপার (অ্যাডমিন অ্যান্ড লজিস্টিক) তারেক বিন রশিদ স্বাক্ষরিত ওই শোকজ চিঠি ইস্যু করা হয়।
চিঠিতে বলা হয়, ‘আপনি বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমি সারদা, রাজশাহীতে ৪০তম ক্যাডেট এসআই/২০২৩ ব্যাচে গত ০৫/১১/২০২৩ হতে এক বছর মেয়াদী মৌলিক প্রশিক্ষণরত আছেন। বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমি প্যারেড মাঠে গত ০১/১০/২০২৪ তারিখ ( মঙ্গলবার) সকাল ৭টা ২৫ মিনিটে ৪০তম বিসিএস (পুলিশ) প্রবেশনারস ব্যাচ/২০২৩ এর সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুশীলন প্যারেড কার্যক্রম চলমান ছিল। এ সময়ে বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমি সারদা, রাজশাহী কর্তৃক পূর্ব নির্ধারিত মেনু অনুযায়ী প্যারেডে অংশগ্রহণকারী সকল প্রশিক্ষণার্থীদেরকে প্যারেড বিরতিতে সকালের নাশতা পরিবেশন করা হয়। কিন্তু আপনি উক্ত সরবরাহকৃত নাশতা না খেয়ে হৈচৈ করে মাঠের মধ্যে চরম বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি করেন। আপনি অন্যান্য প্রশিক্ষণরত ক্যাডেট এসআইদের পরস্পর সংগঠিত করে একাডেমি কর্তৃপক্ষকে হেয় প্রতিপন্ন করে চরম বিশৃঙ্খলা ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করতে থাকেন। এছাড়াও আপনি অন্যদের সাথে হৈচৈ করতে করতে নিজের খেয়াল খুশিমতো প্রশিক্ষণ মাঠ থেকে বের হয়ে নিজ ব্যারাকে চলে যান।’
চিঠিতে আরও বলা হয়, ‘একজন প্রশিক্ষণরত ক্যাডেট এসআই হিসেবে এরূপ আচরণ এবং বিনা অনুমতিতে প্যারেড মাঠ থেকে বের হয়ে নিজ ব্যারাকে চলে যাওয়া সম্পূর্ণভাবে শৃঙ্খলার পরিপন্থী। আপনার এমন কার্যকলাপের প্রেক্ষিতে ১৯৪৩ সনের পিআরবি বিধি 741-iii উপবিধি b (iii) মোতাবেক আপনাকে কেন চলমান মৌলিক প্রশিক্ষণ হতে অব্যাহতি প্রদান করা হবে না তার সন্তোষজনক ব্যাখ্যা এ কৈফিয়ত তলবনামা প্রাপ্তির পরবর্তী ৩ (তিন) দিনের মধ্যে নিম্নস্বাক্ষরকারী বরাবর দাখিলের জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো।’
এর আগে ২০ অক্টোবর চারঘাটে পুলিশ একাডেমিতে ৬২ জন সহকারী পুলিশ সুপারের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ স্থগিত করা হয়েছিল। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা এ জন্য রাজশাহীতেও এসেছিলেন। তখন তিনি সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, অনিবার্য কারণে এই কুচকাওয়াজ স্থগিত করা হয়েছে।