গ্যাটকো দুর্নীতি মামলা থেকে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে অব্যাহতি দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে অপর ১২ আসামির বিরুদ্ধে চার্জগঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার ঢাকার ৩ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক আবু তাহের এ আদেশ দেন।
এই মামলায় বিচার শুরু হওয়ার আদেশ হওয়া ১২ জন হলেন চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সাবেক চেয়ারম্যান কমোডর জুলফিকার আলী, সাবেক মন্ত্রী কর্নেল আকবর হোসেনের (প্রয়াত) স্ত্রী জাহানারা আনছার, দুই ছেলে ইসমাইল হোসেন সায়মন ও এ কে এম মুসা কাজল, এহসান ইউসুফ, সাবেক নৌ সচিব জুলফিকার হায়দার চৌধুরী, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সাবেক সদস্য এ কে রশিদ উদ্দিন আহমেদ এবং গ্লোবাল এগ্রোট্রেড প্রাইভেট লিমিটেডের (গ্যাটকো) পরিচালক শাহজাহান এম হাসিব, এ এম সানওয়ার হোসেন, সৈয়দ তানভীর আহমেদ, সৈয়দ গালিব আহমেদ ও এ এম এম শাহাদাত হোসেন।
এদিন মামলাটি চার্জগঠনের শুনানির দিনে খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে তার পক্ষে আইনজীবী হাজিরা দাখিল করেন। দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর মীর আহাম্মদ আলী সালাম সকল আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জগঠনের পক্ষে শুনানি করেন। সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ারসহ আসামিপক্ষে আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার, সৈয়দ জয়নুল আবেদীন মেজবাহ, জাকির হোসেন ভূইয়া অব্যাহতির আবেদন করে শুনানি করেন।
উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত তিনজনকে অব্যাহতি দিয়ে ১২ আসামির বিরুদ্ধে চার্জগঠন করেন।
খালেদা জিয়ার আরেক আইনজীবী আব্দুল হান্নান ভূঁইয়া এতথ্য নিশ্চিত করেছেন।
২০০৭ সালের ২ সেপ্টেম্বর রাজধানীর তেজগাঁও থানায় খালেদা জিয়াসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে গ্যাটকো দুর্নীতি মামলাটি দায়ের করেন দুদকের উপ-পরিচালক গোলাম শাহরিয়ার চৌধুরী। ২০০৮ সালের ১৩ মে তদন্ত শেষে দুদকের উপ-পরিচালক জহিরুল হুদা খালেদা জিয়াসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।
মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান গ্যাটকোকে ঢাকার কমলাপুর আইসিডি ও চট্টগ্রাম বন্দরের কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ের কাজ পাইয়ে দিয়ে রাষ্ট্রের ১৪ কোটি ৫৬ লাখ ৩৭ হাজার ৬১৬ টাকার ক্ষতি করেছেন।
২০০৮ সালের ১৩ মে মামলাটি তদন্ত করে চারদলীয় জোট সরকারের প্রভাবশালী ৯ জন সাবেক মন্ত্রী ও উপমন্ত্রীসহ মোট ২৪ জনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপপরিচালক মো. জহিরুল হুদা অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
মামলার বিচার চলাকালে ৯ আসামি মারা গেছেন। এদের মধ্যে রয়েছেন- সাবেক মন্ত্রী এম সাইফুর রহমান, আব্দুল মান্নান ভুইয়া, সাবেক মন্ত্রী ও জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী, খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকো, এম কে আনোয়ার, সাবেক মন্ত্রী এম শামছুল ইসলাম, বন্দরের প্রধান অর্থ ও হিসাবরক্ষক কর্মকর্তা আহমেদ আবুল কাশেম।