আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, শেখ হাসিনা এখনো বাংলাদেশের বৈধ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বহাল রয়েছেন। বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) রাত সোয়া ৮টার দিকে নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজের লাইভে তিনি এই দাবি করেন। তিনি বলেন, রাষ্ট্রপতি বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগপত্র কোথায়, তিনি কোনো লিখিত দেননি। তার মানে শেখ হাসিনা এখনো বাংলাদেশের বৈধ প্রধানমন্ত্রী। আর ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও ড. আসিফ নজরুল এবং তার গংরা যে সরকার গঠন করেছে এটি একটি অবৈধ, অসাংবিধানিক ও দখলদার সরকার। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা ‘কিশোর গ্যাং’ থেকে এসেছে বলেও ভিডিও বার্তায় মন্তব্য করেন তিনি।
এই অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে বাঙালি জাতিকে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের মতো আরেকটি ঐক্যবদ্ধ সংগ্রামেরও আহ্বান জানান নানক। তিনি আরো বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনে জামায়াত, হিজবুত তাহরিরসহ জঙ্গি সংগঠনের সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা ছাত্র-জনতার ওপর নির্বিচারে গণহত্যা চালিয়েছে। মাস্টারমাইন্ডের এই ষড়যন্ত্রের মূল লক্ষ্য ছিল এই দেশের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রাকে মুছে ফেলা। যেটি প্রমাণিত হয়েছে গত আড়াইমাসে।
শেখ হাসিনার ওপর মিথ্যা ও বানোয়াট মামলা দেয়া হয়েছে বলে দাবি করে তিনি বলেন, এর বিচার একদিন হবেই। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ, লুটপাট ও লক্ষ লক্ষ নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাংলাদেশের পরিস্থিতি এখন পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মতো ব্যর্থ রাষ্ট্রের দিকে এগুচ্ছে। প্রতিক্ষেত্রে এখন দখলদারিত্ব চলছে।
কিশোরগ্যাংদের একটি অংশকে নিয়ে এসে তাদের সমন্বয়ক করা হয়েছে দাবি করে আওয়ামী লীগের এই জ্যেষ্ঠা নেতা বলেন, ছাত্রলীগকে সন্ত্রাসী সংগঠন আখ্যা দিয়ে নিষিদ্ধ করার কোনো অধিকার এই অন্তর্বর্তী সরকারের নেই। শিগগির এই সমস্যার অবসান ঘটবে।
প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনুসকে উদ্দেশ্যে করে নানক বলেন, বিশ্ব মঞ্চে উঠে সেই মাস্টারমাইন্ড গংদের পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন। মাস্টারমাইন্ডের অংশ বিভিন্ন সন্ত্রাসীগোষ্ঠী, জঙ্গি সংগঠন পরিকল্পিতভাবে আন্দোলনে ছাত্রদের উপর গুলি করে হত্যা করে একটা নির্বাচিত সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র চালিয়েছিল। এই ষড়যন্ত্রের কথা অনেক আগেই শেখ হাসিনা দেশবাসীকে অবহিত করেছিল। এই ষড়যন্ত্রের মূল লক্ষ্যে ছিল বাংলাদেশের অস্তিত্ব, উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে মুছে ফেলা যেটি প্রমাণিত হয়েছে গত আড়াই মাসে।
অবৈধ ইউনুস সরকার দেশের মানুষের নিত্যপণ্যের দাম বাড়িয়েছে, আইনশৃংখলা নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়েছে, ৩ হাজারের অধিক পুলিশকে হত্যা করা হয়েছে, যেটির বিচারকাজ এই অবৈধ সরকার গণহত্যাকারী আসামীদের ইনডেমনিটি বা দায়মুক্তি দিয়েছে, ইনডেমনিটি দেওয়া কি প্রমাণ নয় যে, এরাই গণহত্যা চালিয়েছিল, হত্যা যদি না করেই থাকে তাহলে ইনডেমনিটি দিতে হবে কেনো? ইনডেমনিটি প্রদানই গণহত্যার ডিরেক্ট এভিডেন্স।
তিনি আরও বলেন, আমাদের সোনার বাংলাদেশকে রাজাকাররা স্বাধীনতা বিরোধীরা আবার পাকিস্তান, আফগানিস্তান, সিরিয়া বানানোর পায়তারা চালাচ্ছে এবং সাম্প্রতিক সময়ে রাষ্ট্রপতিকে নিয়ে যে ঘটনাটি ঘটেছে এটা আসলে দূর্ভাগ্যজনক। মহামান্য রাষ্ট্রপতি হলেন সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রের অভিভাবক, সে রাষ্ট্রপতির প্রতি যে অসন্মান দেখানো হচ্ছে এটা একটা ভয়াবহ প্রবণতা।