খুলনার খালিশপুর এলাকার জাহিদ হত্যা মামলায় পাঁচ জনকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।
সোমবার (২৮ অক্টোবর) দুপুরে খুলনার জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. জুয়েল রানা এ রায় দেন। মামলার ৭ আসামিকে খালাস প্রদান করেছেন আদালত।
রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ওই আদালতের উচ্চমান বেঞ্চ সহকারী মোহাম্মদ ছায়েদুল হক শাহিন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন— মো. আব্বাস আনসারী, মো. নশু ফরাজী, মো. রিয়াজ, মো. নাদিম ও মো. জব্বার।
এছাড়া একই আসামিদের বিরুদ্ধে মামলার আরেক ভিকটিম নিহত জাহিদের বড় ভাই জাবেদকে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে হত্যাচেষ্টা ও আহত করার অভিযোগে দন্ডবিধি ৩২৪ ও ৩০৭ ধারায় ৩ বছর ও ৭ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও প্রত্যেককে আলাদাভাবে ৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়।
খালাসপ্রাপ্তরা হলেন— মো. ইব্রা আর আলাম আসিফ, মো. রানা হোসেন, সুলতান ওরফে গব্বার, পাতলা সাগর, মো. ওমর ফারুক ওরফে আরিফ, মো. মেহেদী হাসান ওরফে প্যাকেট মেহেদী ও মো. জাহিদুল ইসলাম জাহিদ।
মামলা চলাকালীন সময়ে ২৬ জনের মধ্যে ১৩ জন আদালতে সাক্ষ্য প্রদান করেন।
এজাহার সূত্রে জানা গেছে, খালিশপুর হাউজিং স্টেট এলাকার বাসিন্দা সাব্বির হোসেনের বড় ছেলে জাবেদের এলাকার কতিপয় দুষ্কৃতির সাথে পূর্ব বিরোধ ছিল। ২০১৬ সালের ১৩ ডিসেম্বর তিনি বাসা থেকে চিত্রালী বাজারের উদ্দেশ্যে বের হন। পথিমধ্যে বঙ্গবাসী মোড় জনৈক জাহাঙ্গীরের চালের দোকানের সামনে পৌঁছালে পূর্ব থেকে ওত পেতে থাকা সন্ত্রাসীরা ধারালো অস্ত্র নিয়ে তার ওপর আক্রমণ করে। এ ঘটনায় তিনি গুরুতর আহত হন। আক্রমণের ঘটনা জানতে পেরে জাবেদের দুই ভাই মো. সুমন ও জাহিদ ঘটনাস্থলে পৌঁছান। এ সময় এ মামলার আসামি আব্বাস আনছারি ও জব্বার জাবেদের ছোটভাই মো. সুমনকে জাপটে রাখে এবং সন্ত্রাসীরা তার মেজভাই জাহিদকে এলোপাতাড়িভাবে কোপাতে থাকে। পরবর্তীতে জাহিদ চিৎকার করতে থাকলে ঘটনাস্থলে এলাকাবাসী চলে আসলে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে সেখানকার চিকিৎসক জাহিদকে মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনার পরের দিন নিহতের ছোটভাই মো. সুমন ১২ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৪-৫ জনের নাম উল্লেখ করে খালিশপুর থানায় মামলা করেন।
২০১৮ সালের ২৬ আগস্ট পিবিআই পুলিশ পরিদর্শক মো. বাবলুর রহমান খান ১২ আসামির নাম উল্লেখ করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
এ ঘটনার প্রায় ৭ বছর ১০ মাস পর আজ রায় ঘোষণা করা হয়েছে।