মিছিল নিয়ে খুলনায় জাপা কার্যালয়ে হামলা-আগুন

নিজস্ব প্রতিবেদক

সংগৃহীত ছবি

একদল ছাত্র-যুবক মিছিল নিয়ে এসে খুলনায় জাতীয় পার্টির কার্যালয়ে হামলা ও ভাঙচুরের পর আসবাবপত্র বাইরে এনে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে।

শনিবার সন্ধ্যায় নগরীর ডাকবাংলা মোড়ের এই কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে বলে জানান খুলনা সদর থানার ওসি মো. মুনীর উল গিয়াস।

এর আগে আওয়ামী লীগ সরকারে থাকার সময় সংসদের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের টানাপড়েনের মধ্যে বৃহস্পতিবার ঢাকার বিজয়নগরের দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আগুন দিয়েছে একদল মানুষ।

এই ঘটনার আগে আগে ফেইসবুকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ জাতীয় পার্টিকে উদ্দেশ করে লেখেন, “এবার এই জাতীয় বেইমানদের উৎখাত নিশ্চিত।”

এ নিয়ে উত্তেজনার মধ্যেই খুলনায়ও জাতীয় পার্টির কার্যালয়ে হামলার ঘটনা ঘটল। এ ঘটনার পর ওই এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। আশপাশের দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। ডাকবাংলো এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সন্ধ্যা ৬টার দিকে ছাত্র-জনতা মিছিল নিয়ে ডাকবাংলা মোড়ে আসেন। মিছিলকারীদের বেশ উত্তেজিত দেখা গিয়েছিল।

তারা ডাকবাংলা মোড় পার হয়ে জাতীয় পার্টির খুলনা নগর ও জেলা কার্যালয়ের সাইনবোর্ড ভেঙে ফেলে। পরবর্তীতে তারা কার্যালয়ের ভেতর প্রবেশ করে চেয়ার এবং টেবিলসহ বিভিন্ন আসবাবপত্র ভাঙচুর চালায়। এরপর ভাঙাচোরা মালামাল বাইরে এনে আগুন লাগিয়ে দেয়।

পরে তারা জাতীয় পার্টি ও দলটির নেতাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।

ওসি মুনীর উল গিয়াস বলেন, ৫০-৬০ জন যুবক মিছিল নিয়ে এসে জাতীয় পার্টির কার্যালয়ে ঢুকে কিছু চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর করেছে। পুলিশ তাদের ধাওয়া দিয়ে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এখন সেখানে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।

ওসি বলেন, যারা আক্রমণ করেছে তাদের পরিচয় এখনও জানা যায়নি। তবে তাদের শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে। জাতীয় পার্টির নেতারা অভিযোগ দিলে পরবর্তীতে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি শফিকুল ইসলাম মধু বলেন, মাগরিবের নামাজের সময় পার্টি কার্যালয়ে কেউ ছিলেন না। তখন ৫০-৬০ জনের একদল ছাত্র-যুবক কার্যালয়ে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। এরপর তারা দলের কার্যালয়ে ঢুকে সাইনবোর্ড, চেয়ার-টেবিল, ফ্যান, টিভি ভাঙচুর করে। তারা কয়েকটি ফাইল ও কাগজপত্র নিয়ে যায়। তারা কয়েকটি চেয়ার, ব্যানার-প্লাকার্ড নিয়ে পার্টি কার্যালয়ের সামনের রাস্তায় আগুন ধরিয়ে দেয়।

তিনি জানান, এ ঘটনার প্রতিবাদে রোববার সন্ধ্যায় পার্টি কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিলের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। এ ঘটনায় তারা মামলা করবেন।

এ বিষয়ে খুলনার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা সাজিদুল ইসলাম বাপ্পী বলেন, উত্তেজিত জনতা জাতীয় দালাল ও ফ্যাসিস্টের প্রধান সহযোগী জাতীয় পার্টির খুলনার অফিস ভাঙচুর করে এবং সড়কে আগুন জ্বালিয়ে প্রতিবাদ জানায় বলে আমরা খবর পেয়েছি। এগুলোর সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কোনো সম্পৃক্ততা নেই।

শেয়ার করুন