শারজায় আফগানিস্তানকে ৬৮ রানে হারিয়ে সিরিজে সমতায় ফিরল বাংলাদেশ

ক্রীড়া ডেস্ক

অবশেষে জয়ে ফিরল বাংলাদেশ। পাকিস্তান সিরিজে জয়ের পর ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে ধবলধোলই হওয়ার পর আফগানিস্তানের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচেও হারের তিক্ত স্বাদ পায় বাংলাদেশ। তবে শারজায় দ্বিতীয় ম্যাচেই ঘুরে দাঁড়াল টাইগাররা। দ্বিতীয় ম্যাচে আফগানিস্তানকে ৬৮ রানে হারিয়ে সিরিজের সমতায় ফিরল নাজমুল শান্তর দল।

শনিবার (৯ নভেম্বর) টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভার শেষে ৭ উইকেট হারিয়ে ২৫২ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। জবাবে খেলতে নেমে ৪৩ ওভার ৩ বলে ১৮৪ রানে অলআউট হয়েছে আফগানিস্তান। যার ফলে বাংলাদেশ তুলে নিয়েছে ৬৮ রানের জয়। এই জয়ে তিন ম্যাচের সিরিজে সমতায় ফিরল বাংলাদেশ। দুই ম্যাচ শেষে আছে ১-১ সমতা। ১১ তারিখের ম্যাচটায় হবে সিরিজ নির্ধারণ।

দ্বিতয় ওয়ানডেতে আফগানদের হয়ে ওপেনিংয়ে নামেন রহমানউল্লাহ গুরবাজ ও সেদিকউল্লাহ আতাল। তবে শুরুতেই এই জুটিকে থামান তাসকিন আহমেদ। তাসকিনের বলে স্লিপে সৌম্য সরকারের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান রহমানউল্লাহ গুরবাজ। তার বিদায়ে ১৮ রানে প্রথম উইকেট হারায় আফগানরা।

১৮ রানে প্রথম উইকেট হারানোর পর জুটি গড়েন সেদিকউল্লাহ আতাল ও রহমাত শাহ। এই জুটিতে ভর করে ঘুরে দাঁড়াতে থাকে আফগানরা। ক্রমেই ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠছিল এই জুটি। অবশেষে এই জুটিকে থামান নাসুম আহমেদ। নাসুমের বলে মেহেদী হাসান মিরাজের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে সাজঘরে ফিরে যান সেদিকউল্লাহ আতাল। তার বিদায়ে ভাঙে ৫২ রানের জুটি।

সেদিকউল্লাহ আতালের বিদায়ের পর হাশমাতউল্লাহ শাহিদিকে নিয়ে জুটি গড়েন রহমাত শাহ। দেখেশুনে খেলতে থাকেন এই দুই ব্যাটার। দলীয় ৮৭ রানে দ্বিতীয় বারের মতো জীবন পান রহমাত শাহ। ইচ্ছে করেই বলটি স্টাম্পের অনেক বাইরে দিয়েছিলেন মাহমুদউল্লাহ। ফাঁদটা কাজেও লেগেছিল। রহমত শাহ ক্রিজ থেকে বেরিয়ে এসেছিলেন। কিন্তু বল তাঁকে ফাঁকি দিয়ে চলে যায় উইকেটকিপার জাকের আলীর হাতে। জাকের অবশ্য অনেকটাই দেরি করে ফেলেন। তিনি স্টাম্প ভাঙার আগেই নিরাপদে ক্রিজে পৌঁছে যান রহমত। এর আগে মিরাজের বলে এই রহমতের ক্যাচ ফেলেছিলেন জাকের। সেই সময় রহমত ছিলেন ১১ রানে, এবার ‘জীবন’ পান ৩০ রানে।

আর জীবন পেয়েই ওযানডে ক্যারিয়ারের ৩০তম অর্ধশতক তুলে নেন রহমাত শাহ। ক্রমেই বাংলাদেশের জন্য ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠছিল এই জুটি। অবশেষে এই জুটিকে থামিয়ে বাংলাদেশকে স্বস্তি এনে দেন পেসার মুস্তাফিজুর রহমান। মুস্তাফিজের বলে ফাইন লেগে শরিফুলের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান হাশমাতউল্লাহ শাহিদি। আউট হওয়ার আগে করেন ৪০ বলে ১৭ রান। তার বিদায়ে ভাঙে ৪৮ রানের জুটি।

মুস্তাফিজের পরের ওভারেই আফগান শিবিরে জোড়া আঘাত হানেন নাসুম আহমেদ। নাসুমের বলে বোল্ড হয়ে শূন্য রানে করেই প্যাভিলিয়নের ফিরে যান আজমাতউল্লাহ ওমারজাই। আজমাতউল্লাহ ওমারজাইয়ের বিদায়ের পর একই ওভারে নাসুমের বলে রান আউটের শিকার হয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান অর্ধশতক তুলে নেওয়া রহমাত শাহ। এই তিন ব্যাটারের দ্রুত বিদায়ে ১১৯ রানেই ৫ উইকেট হারিয়ে চাপে আফগানরা।

১১৯ রানে ৫ উইকেট হারানোর পর জুটি গড়েন মোহাম্মাদ নবি ও গুলবাদিন নাইব। জুটি গড়েই বাংলাদেশি বোলারদের ওপর চড়াও হয়ে খেলতে থাকেন তারা। এই জুটি মাথা ব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছিল বাংলাদেশের। অবশেষে এই জুটিকে থামান পেসার শরিফুল ইসলাম।

শরিফুলের বলে তাওহীদ হৃদয়ের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে সাজঘরে ফিরে যান গুলবাদিন নাইব। আউট হওয়ার আগে করেন ২৫ বলে ২৬ রান। তার বিদায়ে ভাঙে ৪৪ রানের জুটি।

গুলবাদিন নাইবের বিদায়ের পর সাজঘরে ফিরে যান মোহাম্মাদ নবিও। মিরাজের বলে বোল্ড হয়ে প্যাভিলিযনের পথ ধরেন তিনি। তার বিদায়ে ১৬৫ রানে ৭ উইকেট হারায় আফগানরা।

নবির বিদায়ের পর রশিদ খান দলের হাল ধরার চেষ্টা করলেও তাকে বেশিদূর এগাতে দেননি মুস্তাফিজ। মুস্তাফিজের বলে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান তিনি। তার বিদায়ের পর ১৮৪ রানেই থামে আফগানদের ইনিংস। যার ফলে বাংলাদেশ তুলে নিয়েছে ৬৮ রানের জয়।

এর আগে শনিবার (৯ নভেম্বর) সিরিজ বাঁচানোর ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে বড় সংগ্রহের ইঙ্গিত দিয়েও ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে বাংলাদেশ। তাওহীদ হৃদয়, নাজমুল হোসেন শান্তর পর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ; ১০ রানের মধ্যে টানা ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়েছিল বাংলাদেশ। তাতে প্রথম ওয়ানডের মতো এই ম্যাচেও শঙ্কা জাগে কম রানে অলআউট হওয়ার। তবে শেষদিকে নাসুম আহমেদ ও অভিষিক্ত জাকের আলী অনিকের ক্যামিও ইনিংসে নির্ধারিত ৫০ ওভার শেষে ৭ উইকেট হারিয়ে লাল সবুজদের সংগ্রহ ২৫২ রান।

শেয়ার করুন