‘জাতীয় ঐকমত্য ছাড়া সংস্কার চাপিয়ে দেওয়া যাবে না’

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারকে নির্বাচনমুখী প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে দ্রুত নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে। তবে জাতীয় ঐকমত্য ছাড়া কোনো সংস্কার চাপিয়ে দেওয়া যাবে না।

শনিবার (১৬ নভেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘আইবি টিভি ইউএসএ, নিউইয়র্ক সময় এবং কালার্স’-এর যৌথ উদ্যোগে ‘জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থান ও প্রবাসীদের ভূমিকা’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে তারা এসব কথা বলেন।

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পুনঃপ্রতিষ্ঠাসহ গত ৩ মাসে তেমন কিছুই করতে পারেনি। তাদের গঠিত সংস্কার কমিটিও কারো সঙ্গে কোনো আলাপ-আলোচনা করেনি। জাতীয় ঐকমত্য ছাড়া কোনো সংস্কার সরকার চাপিয়ে দিতে পারবে না। তাই সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য পুলিশ, প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশন সংস্কার করে দ্রুত ভোট দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।

মান্না বলেন, আমরা একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন চাই। যে নির্বাচনের ফলাফলের ওপর দাঁড়িয়ে বলতে পারব যে, আমরা একটি গণতান্ত্রিক, মানবিক, কল্যাণকর ও সহযোগিতামূলক সরকার গঠন করতে পারি।

তিনি বলেন, ভোট করতে মিনিমাম একটা স্ট্যান্ডার্ড পুলিশ বাহিনী লাগবে, সিভিল অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সহযোগিতা লাগবে। একটা ইলেকশন কমিশন লাগবে, যারা স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করবে।

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি বলেন, ইলেকশন কমিশন বলতে শুধু পাঁচজন কমিশনার নয়, একদম তৃণমূল থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত ভোটে যারা সহযোগিতা করবে, নির্বাচনের ব্যাপারে তাদের পুনঃব্যবস্থা করতে হবে। একটা জনবান্ধব পুলিশ প্রশাসন গঠন করতে হবে। বর্তমান পুলিশ কী পরিমাণ ঘুষ খায় আর নির্যাতন করে, সেই পুলিশকে মানুষ বানাতে প্রয়োজনীয় সময় দিতে আমরা রাজি আছি।

তিনি বলেন, আন্দোলনে যারা মারা গেছেন, তাদের যথাযথভাবে ক্ষতিপূরণ দিতে পারেনি এই সরকার। আহতদের চিকিৎসা করাতে পারেনি। তারা রাস্তায় নামতে বাধ্য হয়েছে। এখন পর্যন্ত সরকার যা করেছে সবকিছু এলোমেলো।

অন্তর্বর্তী সরকারকে অভিবাসন ব্যয় কমানোর তাগিদ দিয়ে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, এবারের অভ্যুত্থানে চোখ খুলেছে তরুণদের। সেই স্থান থেকে তাদের বিচ্যুত হওয়ার সম্ভাবনা কম। তিনি জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের কারণে দুবাইয়ের কারাগারে যারা এখনো বন্দি আছেন, সেসব প্রবাসীদের দ্রুত মুক্ত করতে সরকারের প্রতি অনুরোধ জানান।

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, পশ্চিমাদের সামনে বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্র হিসেবে উপস্থাপনের ষড়যন্ত্র করছে শেখ হাসিনা ও ভারত। রাষ্ট্র মেরামতের এই লড়াইয়ে আমাদের জিততেই হবে। এটি দেশের জন্য, আমাদের সকল জনগণের জন্য অস্তিত্বের প্রশ্ন।

জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক সোহরাব হাসান প্রবাসীদের ভোটাধিকারের ব্যবস্থা করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, প্রবাসীদের প্রতি মানবিক দৃষ্টি দিলে দেশ আরেকধাপ এগিয়ে যাবে। দুবাই ফেরতদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করার কথাও বলেন এই জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক।

গোলটেবিল বৈঠকে আরও বক্তব্য রাখেন-সাংবাদিক মাসুদ কামাল, সাংবাদিক গোলাম মোর্তোজা, রাজনৈতিক বিশ্লেষক ডা. সায়ন্ত সাখাওয়াত, এনডিপির মহাসচিব মঞ্জুর হোসেন ঈসা, জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক পার্টির মীর আমির হোসেন আমু, আমেরিকা প্রবাসী জাকারিয়া মাসুদ জিকো প্রমুখ।

শেয়ার করুন