জাবিতে ছাত্রী নিহত : ডেপুটি রেজিস্ট্রারসহ বরখাস্ত ৪, চলছে ব্লকেড কর্মসূচি

মত ও পথ ডেস্ক

সংগৃহীত ছবি

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) অভ্যন্তরে শহীদ মিনার সংলগ্ন নতুন কলাভবনের সম্মুখ সড়কে মঙ্গলবার সন্ধ্যার দিকে রিকশার ধাক্কায় মার্কেটিং বিভাগের ৫৩ ব্যাচের নবীন শিক্ষার্থী আফসানা রাচি নিহত হওয়ার ঘটনায় ডেপুটি রেজিস্ট্রার ও নিরাপত্তা কর্মকর্তাসহ ৪ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ড. এ বি এম আজিজুর রহমান।

সাময়িক বরখাস্তদের মধ্যে আছেন- এস্টেট শাখার ডেপুটি রেজিস্ট্রার আবদুর রহমান বাবুল, নিরাপত্তা কর্মকর্তা রাসেল মিয়া, সহকারী সুপারভাইজার আব্দুস সালাম ও ডিউটি গার্ড মনসুর রহমান প্রামাণিক। দায়িত্বে অবহেলার কারণে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানান ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার।

এর আগে, এ ঘটনায় জড়িতদের বিচারের দাবিতে মঙ্গলবার রাতে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলে উপাচার্য অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন। এরপর শিক্ষার্থীরা তাদের অবস্থান কর্মসূচি প্রত্যাহার করেন।

এদিকে, মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী আফসানা করিম রাচির মৃত্যুতে বুধবার (২০ নভেম্বর) শোক দিবস ঘোষণা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এদিন সব ক্লাস-পরীক্ষা স্থগিত থাকবে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের পতাকা অর্ধনমিত রাখা হবে। সেই সঙ্গে এদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের সব রুটে বাস চলাচল বন্ধ থাকবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ড. এ বি এম আজিজুর রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।

এদিকে, রাচির মৃত্যুর ঘটনায় আজ ব্লকেড কর্মসূচি পালন করছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীরা। বুধবার সকাল পৌনে সাতটা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব দরজায় তালা ঝুলিয়ে দিয়ে প্রধান ফটকে অবস্থান নিয়েছেন তাঁরা।

তাদের দাবিগুলো হলো— ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কাঠামোগত হত্যাকাণ্ডের যথাযথ বিচার করতে হবে; পর্যাপ্ত সড়কবাতি, ফুটপাত ও গতিরোধক স্থাপন করতে হবে এবং যানবাহনে গতি পরিমাপক রাখতে হবে; নিহত শিক্ষার্থীর পরিবারকে যথাযথ আর্থিক ক্ষতিপূরণ দিতে হবে; মেডিকেল সেন্টারের জরুরি সেবার মানোন্নয়ন করতে হবে; নিবন্ধনহীন সব যানবাহন ক্যাম্পাসে নিষিদ্ধ করতে হবে এবং নিবন্ধন প্রদানে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে; সব রিকশাচালকের প্রশিক্ষণপূর্বক নিবন্ধন নিশ্চিত করতে হবে; অদক্ষ নিরাপত্তাকর্মীদের প্রত্যাহার করতে হবে এবং ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সিসিটিভি ক্যামেরাগুলো সচল করতে হবে।

ব্লকেড কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী দুর্বার আদি বলেন, প্রশাসনের দায়িত্ব ছিল ক্যাম্পাসের মেডিকেলে উপযুক্ত চিকিৎসা নিশ্চিত করা। একজন শিক্ষার্থী যদি ক্যাম্পাসে আহত হন, তাকে ক্যাম্পাসের মেডিকেলে নেওয়ার পর তার যথাযথ চিকিৎসা নিশ্চিত করা। আফসানার ক্ষেত্রে সেটি হয়নি। এটাকে প্রশাসনের ব্যর্থতা হিসেবে দেখতে হবে। ক্যাম্পাসে শুধু রিকশা নয়, মোটরসাইকেলেরও গতি নিয়ন্ত্রণের কোনো পদক্ষেপ নেই। নিরাপদ ক্যাম্পাসের দাবিতে তারা জাহাঙ্গীরনগর ব্লকেড কর্মসূচি পালন করছেন।

 

শেয়ার করুন