কপ২৯ : অর্থায়ন নিয়ে অনিশ্চয়তা থেকেই গেল

মত ও পথ ডেস্ক

নমুনা ছবি

এবারের জলবায়ু পরিবর্তন সম্মেলনকে ‘কপ অব দ্য ফিন্যান্স’ বা অর্থায়নের কপ বলা হলেও সেটি কেবল কাগজে-কলমেই ঠেকেছে। ক্ষতিপূরণ হিসেবে উন্নয়নশীল দেশগুলো বার্ষিক ১ দশমিক ৩ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের জলবায়ু ক্ষতিপূরণের যে দাবি জানিয়েছিল, সম্মেলনের ১১তম দিনেও সেই সম্ভাবনা তৈরি হয়নি। এমনকি বিগত বছরগুলোর ক্ষতিপূরণের বিষয়ে মেলেনি কোনো আশ্বাস।

জলবায়ুর বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় উন্নত দেশগুলোর কাছে বছরে ক্ষতিপূরণ আদায়ে এনসিকিউজি (নিউ কালেক্টিভ কোয়ান্টিফাইড গোল) নির্ধারণ করার যে দাবি উঠেছে, তা এখনো হয়নি।

এই সম্মেলন ঘিরে যে ‘নিউ কালেক্টিভ কোয়ান্টিফাইড গোল’ নির্ধারণ করা হয়েছে, সে বিষয়ে সম্মেলেনের দ্বিতীয় সপ্তাহেও ফলপ্রসূ কিছু হয়নি বলে জানিয়েছেন বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্রের (ক্যাপস) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার। তিনি বলেন, প্যারিস চুক্তিতে বছরে ১০০ বিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণ নির্ধারণ করা হয়েছিল। এনসিকিউজিতে সেটা ১০ গুণ চাহিদা বাড়িয়ে ১ দশমিক ৩ ট্রিলিয়ন ডলার করা লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এবারের কপে প্যারিস চুক্তিরও এক-তৃতীয়াংশ, মাত্র ৩০০ মিলিয়নের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। সেখানে মাত্র ৬১ মিলিয়ন ডলার কমিটমেন্ট এসেছে।

এই পরিস্থিতিতে জলবায়ু পরিবর্তন সম্মেলন ক্ষতিপূরণ আদায়ের এই পথকে বেশ জটিল ও কঠিন মনে করছেন ক্যাপসের চেয়ারম্যান। এই জলবায়ু বিশেষজ্ঞের মতে, অর্থছাড় বা ক্ষতিপূরণের বিষয়ে বিগত বছরগুলোয় উন্নত বিশ্ব প্রতিশ্রুতি দিয়ে তা রক্ষা করেনি। ফলে কপ২৯-এর শেষ সময়ে অর্থছাড়ের বিষয়ে শঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।

যে ১ দশমিক ৩ ট্রিলিয়ন ডলারের প্রতিশ্রুতি আশা করা হচ্ছে, প্রাথমিকভাবে ধনী দেশগুলো তা সরবরাহ করবে বলে আশা করা হয়েছিল। তবে উদীয়মান অর্থনীতির দেশগুলোর জন্যও আর্থিক ভূমিকা রাখার চাপ বাড়ছে। এই তহবিল প্রাথমিকভাবে উন্নয়নশীল দেশগুলোকে সহায়তার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। বিশেষ করে স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) এবং জলবায়ু-ঝুঁকিপূর্ণ রাষ্ট্রগুলোর ওপর জোর দেওয়া হয়েছে বেশি।

কপ২৯ সম্মেলনের পর্দা নামবে আজ। শেষ মুহূর্তে এসেও প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে, বিশ্বনেতারা বিদ্যমান বিভক্তি কাটিয়ে উঠতে পারবেন কি না এবং জলবায়ু অর্থায়নে একটি অর্থবহ চুক্তিতে পৌঁছাতে পারবেন কি না।

লস অ্যান্ড ডেমেজ বিশেষজ্ঞ, বাংলাদেশ ডেলিগেশন টিমের সদস্য মো. হাফিজ খান বলেন, ‘অ্যাডাপটেশন, মিটিগেশন, লস অ্যান্ড ড্যামেজ খাতে বাংলাদেশসহ ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে উন্নত রাষ্ট্রের দেওয়া উচিত। বার্ষিক ১ দশমিক ৩ ট্রিলিয়ন ক্ষতিপূরণের একটি গোল সেট করা এবারের কপের মূল লক্ষ্য।’

শেয়ার করুন