ব্যাটারিচালিত রিকশা-ভ্যান-ইজিবাইক চালকদের বিআরটিএ থেকে লাইসেন্স, সড়কে চলাচলের অনুমতিসহ ১১ দফা দাবি জানিয়েছে রিকশা-ভ্যান-ইজিবাইক শ্রমিক ইউনিয়ন। একইসঙ্গে মানবিক দিক বিবেচনায় প্যাডেল চালিত রিকশা-ভ্যান বন্ধ করার দাবি জানানো হয়েছে।
আজ শনিবার পুরানা পল্টনের মুক্তি ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করা হয়। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কুদ্দুস তার লিখিত বক্তব্যে গত বৃহস্পতিবারের আন্দোলনে গ্রেপ্তারকৃতদের অবিলম্বে মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানান।
ইউনিয়নের অন্যান্য দাবিগুলো হচ্ছে— দেশের সড়ক উপযোগী নকশায় আধুনিকায়নসহ ব্যাটারিচালিত যানবাহনের বিআরটিএ লাইসেন্স ও যৌক্তিক রুট পারমিট, চালকদের ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদান, ব্যাটারিচালিত যানবাহন চলাচলে নীতিমালা প্রণয়ন, শ্রমিক প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে সড়ক ব্যবস্থাপনা ও পরিকল্পনা কমিটি গঠন, সড়কের লেন পদ্ধতি সচল ও সার্ভিস লেন নির্মাণ, আন্দোলনে আটক ও গ্রেপ্তারকৃতদের অবিলম্বে মুক্তি, ব্যাটারিচালিত যানবাহনকে গণপরিবহন ও শিল্প হিসেবে স্বীকৃতি, জব্দ করা সকল ব্যাটারিচালিত যানবাহন ও ব্যাটারি মালিকের কাছে হস্তান্তর ও নিলামকৃত ব্যাটারির মালিকদের ক্ষতিপূরণ, চার্জিং স্টেশন নির্মাণ, মানবিক বিবেচনায় ব্যাটারিচালিত যানবাহনের পুঁজিকে নিরাপদ করে পর্যায়ক্রমে প্যাডেল চালিত বাহনের শ্রম থেকে মানুষকে মুক্ত এবং শ্রমিকদের ওপর সব জুলুম-নির্যাতন-চাঁদাবাজি-হয়রানি বন্ধ করতে হবে।
আব্দুল কুদ্দুস সংবাদ সম্মেলন বলেন, অপরিকল্পিত নগরায়ণের কারণে সৃষ্ট যানজটের দায় নগর পরিকল্পনাকারীদের না দিয়ে সব সময় দায় এড়াতে এ দেশের গরিব-মেহনতি মানুষের ঘাড়ে চাপানো হয়। একটি আদর্শ নগরে ২৫ শতাংশ সড়ক থাকতে হয়, কিন্তু ঢাকা মহানগরীতে আছে মাত্র ৮ শতাংশ। যার ৭৫ শতাংশই দখল করে আছে ব্যক্তি মালিকানাধীন গাড়ি। ফলে নগরীর যানজটের প্রধান কারণ হচ্ছে অপরিকল্পিত নগরায়ণ ও ব্যক্তিগত গাড়ি। সরকার যানজট নিরসনে পরিকল্পিত নগরায়ণ ও ব্যক্তিগত গাড়ি অনুৎসাহিত না করে উপরন্তু গরিবের বাহন বন্ধের মধ্য দিয়ে জনগণের আইওয়াশ করছে, যা সমস্যার সমাধান না করে আরও নতুন নতুন সমস্যার জন্ম দিয়ে চলেছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ দীর্ঘ লড়াই-সংগ্রাম করে গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ফ্যাসিবাদের পতন ঘটিয়েছে। তারা একটি বৈষম্যহীন সমাজ ও রাষ্ট্র গঠন করতে চায়। দেশের সব থেকে নিপীড়িত ও বৈষম্যের শিকার শ্রমজীবী মানুষের সামাজিক ও অর্থনৈতিক বৈষম্যের অবসান না ঘটিয়ে দেশকে বৈষম্যমুক্ত করা সম্ভব নয়। আমরা প্রত্যাশা করি, হাজারো শহীদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে ছাত্র-শ্রমিক-জনতার গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে কয়েক লক্ষ রিকশা শ্রমিকের রুটি-রুজির ওপর সকল ধরনের বাধা প্রত্যাহার করে বৈষম্যহীন সমাজ নির্মাণ ও সকলের জন্য বাসযোগ্য নগরী গড়ে তোলার কাজকে অগ্রসর করা হবে।