ডা. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের (ডিএমআরসি) শিক্ষার্থীদের উপর হামলার প্রতিবাদে ঢাকা ও তার আশেপাশের এলাকার ৩০ এর অধিক কলেজ সমন্বিতভাবে কবি নজরুল ও সোহরাওয়ার্দী কলেজে হামলা করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
রোববার (২৪ নভেম্বর) দুপুর ১২টা থেকে ডিএমআরসি কলেজের নেতৃত্বে ঢাকা ও তার আশেপাশের এলাকার ৩০ এর অধিক কলেজের প্রায় ৫ হাজার শিক্ষার্থী একত্রে কবি নজরুল ও সোহরাওয়ার্দী কলেজে আক্রমণ করেছে।
জানা যায়, গত বুধবার থেকে ডিএমআরসি’র শিক্ষার্থীরা ভুল চিকিৎসায় শিক্ষার্থীর মৃত্যুর অভিযোগে ঢাকা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে বিক্ষোভ কর্মসূচি চালায়। এক পর্যায়ে বৃহস্পতিবার কবি নজরুল ও সোহরাওয়ার্দী কলেজের ছাত্রদলের নেতৃত্বে শিক্ষার্থীরা আন্দোলনরত ডিএমআরসি’র শিক্ষার্থীদের উপর আক্রমণ চালায়।
আক্রমণের প্রতিবাদে আজ ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার ডিএমআরসি, নটর ডেম কলেজ, সিটি কলেজ, ঢাকা কলেজ, নূর মোহাম্মদ পাবলিক কলেজ, নারায়ণগঞ্জ সরকারি কলেজ, খিলগাঁও সরকারি কলেজসহ ৩০ এর অধিক কলেজের ৫ হাজারেরও অধিক শিক্ষার্থী দুপুর ১২টা থেকে সোহরাওয়ার্দী ও কবি নজরুল কলেজে আক্রমণ চালায়। পরবর্তীতে দুই পক্ষের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। এতে এখন পর্যন্ত একজন সাংবাদিকসহ প্রায় ৪০ জনের অধিক আহত হয়েছেন।
এ সময় গণমাধ্যম কর্মীদের মাইক্রোফোন ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে ভেঙে ফেলে তারা। ঘটনাস্থলে পুলিশ ও সেনাবাহিনী উপস্থিত থাকলেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়নি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রোববার দুপুর আড়াইটার দিকে সোহরাওয়ার্দী ও কবি নজরুল কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ ঘেরাও করতে আসা শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ হয়। এর একপর্যায়ে সোহরাওয়ার্দী কলেজে হামলা-ভাঙচুর চালানো হয়।
এর আগে দুপুর ২টায় দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ও ধাওয়া পাল্টাধাওয়া শুরু হওয়া। পরে কবি নজরুল ও সোহরাওয়ার্দী কলেজের শিক্ষার্থীরা পিছু হটলে অপরপক্ষের শিক্ষার্থীরা সোহরাওয়ার্দী কলেজে ঢুকে পড়ে। এ সময় কলেজে অনার্স প্রথম বর্ষের ইতিহাস বিভাগে পরীক্ষা চলছিল। কবি নজরুল কলেজের শিক্ষার্থীরা এই কলেজে পরীক্ষা দিচ্ছিলেন। দুপুর সাড়ে ১২টায় শুরু হওয়া পরীক্ষা দুই ঘণ্টা পর নিরাপত্তার স্বার্থে স্থগিত করা হয়।
এদিকে কলেজে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ঢুকে পড়ায় পরীক্ষার্থী ও শিক্ষার্থীরা অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন। এ সময় কলেজের উপাধ্যক্ষের কক্ষসহ অধিকাংশ কক্ষে ভাঙচুর চালানো হয়। কলেজ প্রাঙ্গণে থাকা একটি প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাস ও অ্যাম্বুলেন্স, ২টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়। পরে শিক্ষক ও স্টাফদের অনুরোধে শিক্ষার্থীরা কলেজ প্রাঙ্গণ ছাড়েন।
বিক্ষোভকারী এক শিক্ষার্থী জানায়, আজ সকালে ডিএমআরসি ও আশেপাশের কলেজগুলো ন্যাশনাল মেডিক্যাল এর সামনে বিক্ষোভ করতে আসলে কবি নজরুল এর শিক্ষার্থীরা পুনরায় আমাদের উপর হামলা চালায়। পরবর্তীতে আমরা সমন্বিতভাবে কবি নজরুল ও সোহরাওয়ার্দী কলেজের হামলার জবাবে তাদের প্রতিহত করি। এতে এখন পর্যন্ত আমাদের প্রায় ২৫-৩০ জন আহত হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, কবি নজরুল ও সোহরাওয়ার্দী কলেজকে উপর্যুক্ত জবাব না দেওয়া পর্যন্ত আমরা এখান থেকে যাবো না।
অপরদিকে, হামলার বিষয়ে সোহরাওয়ার্দী কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. কাকলী মুখোপাধ্যায় প্রশাসনের অসহযোগিতার অভিযোগ করে বলেন, এখন পর্যন্ত কেউ এগিয়ে আসেনি। একটি জাতীয় প্রতিষ্ঠানের বড় ক্ষতি হয়ে গেল। একটি পাবলিক পরীক্ষা চলমান ছিল। তারপরও কেন হামলার ঘটনা ঘটেছে সে ব্যাপারে আমরা কিছুই জানি না।