কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলায় দুই সন্তানসহ দম্পতির মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে ভৈরব শহরের রানী বাজার শাহী মসজিদ সংলগ্ন এলাকার শাহজাহান মিয়া বিল্ডিংয়ের সপ্তম তলার একটি রুম থেকে তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
নিহতরা হলেন— নরসিংদী জেলার রায়পুরা থানার আনারবাগ এলাকার গৌরাঙ্গ চন্দ্র বিশ্বাসে ছেলে জনি চন্দ্র বিশ্বাস (৩৫), তার স্ত্রী নিপা মল্লিক (৩০), তাদের ছেলে ধ্রুব চন্দ্র বিশ্বাস (৭) এবং মেয়ে কথা চন্দ্র বিশ্বাস (৫)।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ভৈরব শহরের বাগানবাড়ির মিজান মিয়ার ওয়ার্কসপে কাজ করতেন জনি চন্দ্র বিশ্বাস। তিনি স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে ভাড়া বাসায় থাকতেন। সোমবার তার পৈতৃক বাড়ি নরসিংদীর রায়পুরার আনারবাগ এলাকায় দুই সন্তানসহ স্ত্রীকে নিয়ে বেড়াতে যান। সেখান থেকে রাতে ফিরে তাদের রুমে প্রবেশ করার পর আর দরজা খুলেননি। পরবর্তীতে তার ওয়ার্কসপের এক কর্মচারী তার খোঁজ নিতে এসে জানতে পারেন তাদের রুমের দরজা সকাল থেকে খুলছে না। পরে রুমের দরজা ভেঙে ভেতরে দেখতে পায় দুই সন্তান ও স্ত্রীর রক্তাক্ত মরদেহ বিছানায় পড়েছিল। জনি চন্দ্র বিশ্বাস বাসার সেলিং ফ্যানের সাথে ঝুলছিলেন। এই খবর পেয়ে ভৈরব থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে দুই সন্তানসহ স্বামী ও স্ত্রীর মরদেহ উদ্ধার করে।
নিহত জনি চন্দ্র বিশ্বাসের মা শিখা রানী বিশ্বাস বলেন, ‘গতকাল আমাদের বাড়িতে পরিবারের সবাইকে নিয়ে বেড়াতে গিয়েছিলো। সেখান থেকে হাসি খুশিভাবে ফিরে এসেছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরের দিকে ফোনে খবর পেলাম আমার ছেলে মারা গেছে। এখন এসে দেখি আমার ছেলেসহ পুরো পরিবারই শেষ হয়ে গেছে।’
ভবনের মালিক শাহজাহান মিয়ার স্ত্রী রিনা বেগম বলেন, ‘তিন মাস হলো আমার বিল্ডিংয়ের সপ্তম তলার একটি ফ্ল্যাটে দুই সন্তানসহ স্বামী-স্ত্রী ভাড়ায় থাকতেন। আজ বিকালে ভবনের এক ভাড়াটিয়া ফোনে জানান তাদের রুমের দরজা খুলছে না। পরে লোকজন মিলে রুমের দরজা ভেঙে ভেতরে তাদের মরদেহ দেখতে পাই।’
ভবনের পাশ্ববর্তী ভাড়াটিয়া সৃষ্টি বর্মন বলেন, ‘তারা আমাদের পাশের ফ্ল্যাটে ভাড়া থাকেন। গতকাল সকালে সবাই মিলে তাদের বাবার বাড়িতে বেড়াতে যান। সেখান থেকে রাতে ফিরেন তারপর থেকে তাদের রুমের দরজা বন্ধ ছিল। পরবর্তীতে বিকাল ৩টার দিকে ওয়ার্কসপের লোকজন এসে জনি ভাইকে খোঁজেন তারাতে রুমের দরজা ভেঙে রুমে চারজনের মরদেহ দেখতে পায়।’
এ বিষয়ে ভৈরব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ভারপ্রাপ্ত মো. শাহিন মিয়া জানান, শহরের রানী বাজার এলাকার ৭ম তলা ভবনের একটি বাসার রুমের ভেতর থেকে স্বামী-স্ত্রীসহ দুই সন্তানের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে স্বামী জনি বিশ্বাস তার দুই সন্তান ও স্ত্রীকে হত্যা করে নিজে ফ্যানের সাথে ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যা করেছেন।
এই ঘটনাটি তদন্ত করে প্রকৃত কারণ উদঘাটন করা হবে বলে তিনি জানান।