সপ্তাহখানেকের ব্যবধানে আমরা রাজধানীতে অবস্থিত কয়েকটি প্রতিবেশী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ দেখেছি। গত ২০ নভেম্বর ঢাকা কলেজ ও ঢাকা সিটি কলেজের মধ্যকার সংঘর্ষের পর উভয় কলেজ নির্দিষ্ট সময়ের জন্য বন্ধ ছিল। এর পর রোববার ও সোমবার পুরান ঢাকা ও যাত্রাবাড়ীর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
সেখানে সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ এবং ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের নাম উচ্চারিত হলেও অন্তত ৩৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সংঘর্ষে জড়ায়। কলেজগুলোতে ব্যাপক ভাঙচুর হয়। এ ঘটনায় কবি নজরুল সরকারি কলেজ ও সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ নির্দিষ্ট সময়ের বন্ধ ঘোষণা করা হলেও তাদের প্রতিবেশী সেন্ট গ্রেগরি হাই স্কুল ও কলেজ বন্ধ ঘোষণা করা হয় অনির্দিষ্টকালের জন্য।
এদিকে ২৭ নভেম্বর থেকে অনির্দিষ্টকালের বন্ধ ঘোষণা করা হয় বরিশাল সরকারি ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি (আইএইচটি)। সেখানে একদিকে শিক্ষার্থীদের ছয় দফার আন্দোলন, অন্যদিকে শিক্ষার্থীদের মধ্যকার সংঘর্ষে সংঘাতের আশঙ্কা থেকেই আইএইচটি বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এদিকে সরকারি তিতুমীর কলেজেও আন্দোলন চলছে।
এসব আন্দোলন ও সংঘর্ষের ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী ও প্রতিষ্ঠান-প্রধানদের গাফিলতির বিষয় মোটেও অস্বীকার করা যাবে না। পুরান ঢাকার কলেজগুলোয় কীভাবে ‘সুপার সানডে’ বা ‘মেগা মানডে’র মতো সংঘাতমূলক কর্মসূচির ঘোষণা দিয়ে শিক্ষার্থীরা এত বড় সংঘর্ষে জড়ালো? পূর্বঘোষণার পরও কেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি? শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দায়িত্বশীল কিংবা শিক্ষরাই-বা কেন তাদের শিক্ষার্থীদের নিয়ন্ত্রণ করতে বা পরিস্থিতি সামাল দিতে ব্যর্থ হচ্ছেন?
সবশেষে বলছি, এভাবে আন্দোলন ও সংঘাতে শিক্ষা কার্যক্রমের অপূরণীয় ক্ষতি হচ্ছে। এই সময়ে যেভাবে তুচ্ছ কারণে শিক্ষার্থীরা সংঘাতে জড়িয়ে পড়ছে, সেটি দুঃখজনক। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যখনই সংঘাতের পরিবেশ তৈরি হয়, তখনই শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হয়। তাছাড়া, অস্থিরতা এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হওয়া জাতির জন্য ভালো লক্ষণ নয়।